করোনাভাইরাস : বিশ্বের জন্য সতর্কতামূলক পরীক্ষা

0
1381
করোনাভাইরাস : বিশ্বের জন্য সতর্কতামূলক পরীক্ষা

করোনা ভাইরাস সমগ্র মানব জাতির জন্য একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জে রুপ নিয়েছে। ভাইরাসটি মাত্র ৩ মাস আগে আবিষ্কার হয়েছে। অথচ এতো অল্প সময়ের মধ্যেই ভাইরাসটি এতো দ্রুত সব মহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে যে, তা শুধু বৈশ্বিক অর্থনীতি, স্বাস্থ্যখাত এবং সামাজিক জীবনকেই গ্রাস করেনি বরং অন্য সকল বিষয়কে এমনভাবে আক্রান্ত করেছে যা আধুনিক বিশ্ব আগে দেখেনি। যেই প্রাণী—আল্লাহ মাফ করুন—সবচেয়ে বুদ্ধিমান ও ক্ষমতাশীল হিসেবে নিজেকে চিনতো, সে এখন এমন এক সৃষ্টির মাধ্যমে বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে যাকে এমনকি খালি চোখেই দেখা যায় না।

এই পৃথিবীতে মানবসভ্যতার এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু, বিগত কয়েক শতাব্দি কিছু ব্যতিক্রমী বৈশিষ্টের অধিকারী। কারণ এসময়ের মধ্যে মানুষ তার জীবনের সর্বস্তরে নিত্য নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের প্রভাবে অভূতপূর্ব অগ্রগতি করেছে। এসব আবিষ্কার ও অগ্রগতি মানবজাতির উপরে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার বিশেষ রহমত, এ কারণে আল্লাহ তা’য়ালার শুকরিয়া আদায়ের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া দরকার ছিল। যাইহোক, মানুষ সৃষ্টিগতভাবেই দুর্বল হওয়ার কারণে তার নফস সব সময় আল্লাহর বিধানের বিরোধিতার দিকে যেতে চায়, তার উপর এসব অগ্রগতির ফলে ধর্মের বিরুদ্ধে তাদের এই যুদ্ধ চরম মাত্রায় পৌঁছায় এবং ধর্মনিরপেক্ষতা ও নাস্তিক্যবাদের ব্যাপক প্রসার লাভ করে।

এমনকি আগাগোড়া রক্ষণশীল দেশ আফগানিস্তানেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের সহযোগিতায় নাস্তিক্যবাদের ব্যাপক প্রচার প্রসার হয়। এখানকার নতুন প্রজন্মকে তাদের ধর্মীয় রীতিনীতির পরিবর্তে ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদে দীক্ষিত করার জন্য মিডিয়া, সামাজিক ও এরকম বহু উদ্যোগের মাধ্যমে ক্রমাগত প্রচারণা চালানো হয়। আর ফলাফলস্বরূপ, নবপ্রজন্মের প্রায় সবার উপর ধর্মনিরপেক্ষতার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যাদের অন্তর আগে থেকেই রোগাক্রান্ত ছিল, তারা এই মতবাদকেই সত্য ও সঠিক পথ হিসেবে মেনে নেয়। ফলে দিনের পর দিন আল্লাহর বিরোধিতাও গাণিতিক হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে।

কিন্তু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাঁর এক ক্ষুদ্র বস্তুর মাধ্যমে তাঁর ক্ষমতার এক ঝলক প্রকাশ করলেন, যার কারণে একদম চরমপন্থী নাস্তিকরাও শেষ সম্বল হিসেবে ধর্মের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে।

যদিও বাহ্যিক দৃষ্টিতে করোনা ভাইরাসকে একটি রোগ হিসেবেই দেখা যাচ্ছে, কিন্তু আমাদের এটা মনে রাখতে হবে যে এটা মানব জাতির উদ্দেশ্যে একটি জরুরী বার্তা প্রদান করছে। আর সেই বার্তাটি হচ্ছে— মানবজাতি অমর নয় বরং তার ধ্বংস অবশ্যম্ভাবী, মানুষ শক্তিশালী নয় বরং দুর্বল; আর, সমস্ত ক্ষমতার প্রকৃত মালিক একমাত্র আমাদের রব আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার, যিনি এই মহাজগত সৃষ্টি করেছেন এবং এর সমস্ত কিছুই তাঁর নিয়ন্ত্রণে।

বর্তমানের এই পরীক্ষা আমাদের জানিয়ে দিচ্ছে যে, মানুষ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এবং তাঁর মনোনীত দ্বীন থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। আর, অবশ্যই অতি দ্রুত তাদেরকে এ নাফরমানি থেকে ফিরে আসতে হবে এবং আল্লাহর অনুগত বান্দা হিসেবে তাঁর মনোনিত দ্বীনের অনুসরণ করতে হবে।

যারা দ্বীন থেকে দূরে সরে আছে তারা এই ভাইরাসকে পরীক্ষা হিসেবে গ্রহণ করে নিজের অবস্থা সম্পর্কে চিন্তা করবে এবং নিজের অবস্থার পরিবর্তন করবে। একইসাথে, সাধারণ মুসলিমদেরকেও নিজেদের গুনাহের জন্য তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে হবে এবং আল্লাহর সাথে করা চুক্তি নবায়ন করে দ্বীনের রজ্জু শক্ত করে আঁকড়ে ধরতে হবে। করোনা ভাইরাস যদিও একটা মহামারী ও বিপর্যয়, একই সাথে তা আমাদের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শিক্ষা ও সতর্ককারী পরীক্ষা।

ইসলামী ইমারত আফগানিস্তানের অফিসিয়াল সাইট থেকে অনূদিত ।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনায় সস্ত্রীক আক্রান্ত ইসরাইলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধত্রাণ লুটপাটের সংবাদ প্রচার করায় সাংবাদিককে ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে আহত করল চেয়ারম্যান!