মুসলিম হওয়ার কারণে সল্টলেক এলাকায় ১০ জন শিক্ষককে হোটেলের ঘর দেওয়া হয়নি। হিন্দুত্ববাদী জনতার আপত্তির কারণে ওই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
গত সোমবার দুপুরের দিকে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার সল্টলেকের ডিএল ব্লকে। ওই এলাকায় অবস্থিত ট্রিনিটি গেস্ট হাউসে ১০ জন মুসলিম শিক্ষককে ঘর দেয়নি হোটেল কর্তৃপক্ষ। যদিও যাবতীয় নিয়ম মেনেই ওই শিক্ষকদের জন্য ঘর বুক করা হয়েছিলো। তবুও তাদের থাকতে দেওয়া হয়নি। স্থানীয়দের আপত্তির কারণে ওই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে সাফাই দিয়েছে ট্রিনিটি গেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষ।
খুব স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। জানা গিয়েছে, ওই দশ শিক্ষক মালদহ জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। পেশাগত কারণেই এদিন তাঁরা বিকাশ ভবনে গিয়েছিলেন মাদ্রাসা দফতরে। লকডাউনের কারণে একই দিনের মধ্যে মালদহে ফিরে যাওয়া সম্ভব ছিলো না। সেই কারণেই বিকাশ ভবনের অদুরে ডিএল ব্লকে ট্রিনিটি গেস্ট হাউসে ঘর বুক করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু হোটেল কর্তৃপক্ষ তাঁদের থাকতে দেয়নি।
অভিযোগ উঠেছে যে ওই সকল মাদ্রাসা শিক্ষক নিজের পরিচয়পত্র দেখিয়ে নাম রেজিস্টার করে ঘর নিয়েছিলেন। এর ঘণ্টা দুই পরে তাদের পাশের সিএল ব্লকের একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করানোর পরে হোটেলের ম্যানেজার জানিয়ে দেয় যে তাঁদেরকে ঘর দেওয়া হবে না। সেই সঙ্গে এটিও জানিয়ে দেওয়া হয় যে মুসলিম হওয়ার কারণেই তাঁদেরকে ওই হোটেলে কোনও ঘর মিলবে না। কারণ স্থানীয় মানুষেরা আপত্তি জানিয়েছেন।
ধর্মীয় কারণে নির্যাতনের শিকার হওয়া ওই ১০ জন মাদ্রাসা শিক্ষক ‘পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ’ নামক একটি সংগঠনের সদস্য। ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মইদুল ইসলাম এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুলের বাংলার মাটিতে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা দেখে খুব অবাক হয়েছি। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে বিধাননগর পূর্ব থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।”
এই ঘটনার প্রতিবাদে চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার সল্টলেকে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা করেছে একাধিক সংগঠন। ওই দিন বিকেল চারটের সময়ে সল্টলেক করুণাময়ীর কাছে সিকে মার্কেটের সামনে অনুষ্ঠিত হবে সেই বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভে আহ্বান জানিয়ে বিক্ষোভকারীরা বলেছেন, “এখনও প্রতিবাদ না করলে ১৯৩৩ এর জার্মানি হবে এই দেশ ও রাজ্য। কোনও অবস্থাতেই আমরা তা হতে দেবো না।”
দাওয়া ইলাল্লাহ ভিজিট করতে পারছি না।
কারণ জানাবেন।