
জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় মালাউন সেনারা ভুয়া এনকাউন্টারে তিন শ্রমিকের হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে।
বিবিসি হিন্দি ওয়েবসাইট সূত্রে প্রকাশ, ২০২০ সালের ১৮ জুলাই জম্মুর রাজৌরি জেলার তিন যুবককে একটি অভিযান চালিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। সেনাবাহিনী তখন তাদের অজ্ঞাত সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। ওই অভিযানে নিহতদের নাম ইমতিয়াজ আহমেদ (২১), আবরার আহমেদ (২৫) এবং মুহাম্মাদ ইবরার (১৭)। তারা সকলেই রাজৌরি জেলা থেকে সোপিয়ানে শ্রমিকের কাজের জন্য গিয়েছিলেন। তিনজনই পরস্পরের আত্মীয় এবং রাজৌরির একই গ্রামের বাসিন্দা ছিল।
ইবরারের বাবা ‘বিবিসি’কে আগে বলেছিলেন যে ইবারার ছয় মাস আগে কুয়েত থেকে ফিরে এসেছিল এবং এখন তার বাবার সাহায্য করতে এখানেই অবস্থান করছিল। তিনজনই সোপিয়ানে একটি ভাড়া ঘরে থাকতেন। এনকাউন্টার হওয়ার ২২ দিন পরে ওই তিনজনের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। ফটোগ্রাফসহ লেখা ছিল যে সেনাবাহিনীর একটি এনকাউন্টারে নিহত ওই তিন যুবক, যাদেরকে সামরিক বাহিনী অজ্ঞাত ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে তারা আসলে জম্মু জেলার রাজৌরির শ্রমিক।
পরে সমালোচনার মুখে, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের নেতৃত্বে একটি দল রাজৌরিতে গিয়েছিল এবং সেখান থেকে তিনজনের পরিবারের ‘ডিএনএ’ নমুনা নিয়েছিল। ১৮ আগস্টের বিবৃতিতে সেনাবাহিনী আরও বলেছিল, ‘মূল সাক্ষীদের বক্তব্য রেকর্ড করা হচ্ছে এবং তদন্ত করা হচ্ছে এর পুরো অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এছাড়া অন্য সাক্ষীদেরও আদালতে সাক্ষ্য দিতে বলা হচ্ছে। এর পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীর পুলিশও রাজৌরিতে গিয়ে ‘ডিএনএ’ নমুনা সংগ্রহ করেছে।’
ওই এনকাউন্টারের পরে, লাশগুলো বারমুল্লা জেলার গান্টমুলা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছিল। ওই জায়গাটি এনকাউন্টার স্থল থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে। ২০২০ সালের ৩ অক্টোবর, স্থানীয় প্রশাসন ওই তিনজনের লাশ কবর থেকে বের করে তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ যে ‘ডিএনএ’ নমুনা পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল তা মৃতদের সাথে মিলে গিয়েছিল।
এখনও পর্যন্ত এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটেছে তা হ’ল মৃত ব্যক্তিদের ’সন্ত্রাসীর’ যে ট্যাগ দেওয়া হয়েছিল তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। আসলে তারা ছিল নিরীহ বেসামরিক ব্যক্তি যারা একটি ভুয়ো এনকাউন্টারে মারা গিয়েছিল। প্রত্যেকে অপেক্ষা করছে অপরাধে জড়িতদের কী হবে তার চূড়ান্ত ফলাফলের জন্য।
আর এভাবেই, জম্মু-কাশ্মীরে মালাউন বাহিনীরা ভুয়ো এনকাউন্টার চালিয়ে নিরীহ বেসামরিক মুসলিমদের হত্যা করে চলছে। যার কোন বিচার এখনো হয়নি।
সূত্র: পার্সটুডে।