মাফিয়া খাতুনের (৭৮) স্বামী মারা গেছেন ৪০ বছর আগে। দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ হয়ে কষ্টে দিন কাটালেও বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন না তিনি। তাই আক্ষেপ করে মাফিয়া বলেছেন, ‘আর কত বয়স হইলে বয়স্ক ভাতা পামু’।
মাফিয়া খাতুনের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি ওই এলাকার মফিজ ব্যাপারী বাড়ীর মৃত কাদেরের স্ত্রী।
এই বৃদ্ধা বলেন, ‘আমার স্বামী মরছে ৪০ বছর। এহনো কোনো দিন সরকারি কোনো ভাতা পাই না। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাইছি। আর কত বয়স হইলে বয়স্ক ভাতা পামু। আর কত বছর হলে বিধবা ভাতা পামু। কেউ মোগো খবর নেয় না।’
মাফিয়া খাতুন আরও বলেন, ‘২৫ বছর প্যারালাইসিসে ডান হাতসহ ডান পাশ বোধ শক্তি পাই না। হাটা চলা করতে অনেক কষ্ট লাগে। লাটি দিয়া হাটি। পোলা দুটা নদীতে মাছ ধরে। পোলারা আমার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ কইরা সব হারাইছে। বুড়া বয়সে মনে চায় একটু ভালা কিছু খাই কিন্তু টাকার জন্য তাও খেতে পারি না। ’
মাফিয়া আরও বলেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে অনেক কষ্ট করে পোলাপাইন বড় করছি। অভাবের সংসারে পোলাইন পড়াইতে পারি নাই। মরার আগে যদি একটু শান্তি পাইতাম। সরকার মানুষের ঘর দেয়, বয়স্ক ভাতা দেয়, বিধবা ভাতা দেয়। আর আমরা গরিব মানুষ কিছু পাই না।’
মাফিয়ার ছেলে আলম মাঝি বলেন, এলাকার মেম্বার-চেয়াম্যানের পেছনে অনেক ঘুরছি, কোনো ভাতা দেয় না আমাগো রে। মা বুড়া বয়সে অনেক কষ্ট পায়। নদীতে মাছ ধরে যেই টিয়া পাই, হেই টিয়া দিয়া মার লইগা ওষুধ আনি চাউল ডাইল আনি। আর ভালো কিছু মারে খাওইতে পারি না।’
বোরহানউদ্দিন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. বাহাউদ্দিন বলেন, ‘ভাতা সংক্রান্ত বিষয়ে ইউনিয়ন কমিটি রয়েছে। তারা যে সকল নাম দেন, আমরা ওই নাম নিয়ে কাজ করি। যদি এরকম বয়স্ক লোক হয়ে থাকে, ওই ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করে তার নামে ভাতা দেওয়ার চেষ্টা করব।’ আমাদের সময়