কসাই মোদির অপরাধনামা! (শেষ পর্ব)

    0
    1641
    কসাই মোদির অপরাধনামা! (শেষ পর্ব)

    শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ২৬-২৭ মার্চ ঢাকা সফরে আসছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী কসাই নরেন্দ্র মোদী।
    বাংলাদেশের হিন্দুঘেষা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে মোদী ঢাকা সফর করবে। বাংলাদেশের কথিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ নামের শিরকী পূজা উপলক্ষে মোদির এই সফর।

    বিশ্বের সবচেয়ে কুখ্যাত ১০ জন সন্ত্রাসীর লিস্টেও ছিল মোদির নাম। এমন কুখ্যাত মানুষকে নিজেদের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে হিন্দুত্ববাদী ভারত আসলে তাদের আসল চেহারা প্রকাশ করেছে। হিন্দুত্ববাদী ভারত সবসময় চেষ্টা করে এসেছে মোদি তথা ভারতের গায়ে মুসলিম নির্যাতনের যে কলঙ্ক লেগে আছে তা তুলে ফেলার। মোদিকে শেখ হাসিনার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে আপ্যায়ন, মোদির হাতে লেগে থাকা মুসলিমের রক্ত মুছে ফেলার চক্রান্তের একটি অংশ। কিন্তু মোদির হাতে এতো মুসলিমের রক্ত লেগে আছে যে তা কোনো চাল চাতূরীর মাধ্যমেই মুছে ফেলা সম্ভব নয়।
    ভারতে মুসলিমদের উপর বহু দশক ধরে চলমান নির্যাতনের দীর্ঘ অপরাধনামার সংক্ষিপ্ত কিছু অংশ তুলে ধরা হচ্ছে এই আমাদের এই সিরিজে। গত তিন পর্বে আমরা আলোচনা করেছিলাম বাবরি মসজিদ ধ্বংস, গুজরাট গণহত্যা, কাশ্মীরের মুসলিমদের উপর ভারতের অত্যাচার-নির্যাতন , দিল্লি গনহত্যা এবং গো-রক্ষার নামে পিটিয়ে মুসলিম মারার মতো বর্বর কর্মকান্ড নিয়ে । এ পর্বে আমরা দৃষ্টি দিব এমন কিছু ঠুনকো বিষয়ের দিকে, যাদের কারণে ভারতে সকাল সন্ধ্যা মুসলিমদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে মোদির সৈনিকেরা।

    ৬/ ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় মুসলিম হত্যা:

    মুসলিম নিধনে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের চেতনার ন্যারেটিভ হলো জয়-শ্রীরাম ধ্বনি। এ এমন এক ধ্বনি, যার ব্যবহারে মুসলিম মারায় পাওয়া যায় রাষ্ট্রীয় ও আইনি ‘বৈধতা’। বাংলাদেশে যেমন ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ ব্যবহার করলে সকল অপরাধ করলেও পার পাওয়া যায়, ভারতে তেমনি এই জয়-শ্রীরাম ধ্বনি।

    ভারতের অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছিল, ‘সারা দেশে এখন মানুষ মারতেই ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি ব্যবহার করা হচ্ছে।’ সে আরও বলে, ‘আমি আগে এতো হিংস্র আওয়াজে কাউকে ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে শুনিনি। এখন মানুষকে লাশ বানাতে এই স্লোগান ব্যবহার করা হচ্ছে।’

    জাতিসংঘের হিসেব বলছে, প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী যতো ‘অনার কিলিং’ হয়, তার প্রতি পাঁচটির একটিই ঘটে ভারতে। এখন তো সরাসরি রাস্তাঘাটেই মুসলিমদের ওপর হামলা চালাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী উগ্র ভারতীয়রা। আর এক্ষেত্রে হাতিয়ার বানানো হচ্ছে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানকে।
    বিবিসির ভারতীয় সাংবাদিক গীতা পাণ্ডে বলে, ‘আগে রামধ্বনি তুলে অভিবাদন জানানো হতো। আর এখন উগ্র হিন্দুরা এই ধ্বনি ব্যবহার করছে মানুষ খুনে। সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্যে মুসলিমবিদ্বেষ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।’
    এই জয় শ্রীরাম স্লোগান তুলেই ওরা মুসলিমের রক্ত ঝরায়, এই স্লোগানের চেতনা থেকেই হিন্দুরা মুসলিম নারীদের পবিত্র দেহে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে, রাস্তাঘাটে মুসলিমকে ধরে এই স্লোগান জপতে বলে; অস্বীকৃতি জানালেই গণটিুনি দিয়ে করা হয় খুন।

    নিকট অতিতের কিছু ঘটনা:

    (ক) উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসামের বারপেটা জেলার ঘটনা। একদল মুসলিম যুবক রাস্তাধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন। পথরোধ করে দাঁড়ায় স্থানীয় হিন্দুরা। পোশাক-আশাক দেখে ওরা অনুমান করেছে এরা মুসলিম। তারপর যথারীতি ‘জয় শ্রীরাম’, ‘ভারত মাতা কি জয় এবং ‘পাকিস্তান মুর্দাবাদ’ বলে সমস্বরে স্লোগান দিতে বলা হয়। অন্যথায় গণপিটুনি দেওয়া হবে, দেখানো হয় এই ভয়। শেষে বাধ্য হয়ে এসব অপবিত্র স্লোগান দিয়ে প্রাণে বাঁচেন ওই মুসলিম যুবকদল।

    (খ) কলকাতার পূর্বাঞ্চলীয় শহরের আরেকটি ঘটনা। ট্রেনে করে যাচ্ছিলেন এক মাদ্রাসা শিক্ষক। দাড়ি-টুপি-পাঞ্জাবি দেখে হিন্দুত্ববাদীরা তাকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতে থাকে। জয়শ্রীরাম বলতে অস্বীকৃতি জানানোয় একপর্যায়ে চলন্ত ট্রেন থেকে থাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় ওই আলেমকে। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে কাটান দীর্ঘদিন তিনি।

    (গ) ভারতের ঝাড়খন্ডে চুরির মিথ্যা অপবাদে এক মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গাছের সাথে বেঁধে ১৮ ঘন্টা যাবত তাকে নির্যাতন করে হিন্দুরা। ২৪ বছরের ওই যুবকের নাম তাবেজ আনসারি। মাত্র দুইমাস পূর্বে সে বিয়ে করেছিল। অবশ্য চুরির অপবাদে মুসলিম-খুন হিন্দুদের একটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। জয় শ্রীরাম বলতে অস্বীকার করলেই ‘চোর চোর’ ধ্বনি তুলে শুরু হয় পাশবিকতা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চলতে থাকে নির্যাতন।

    (ঘ) উত্তর প্রদেশের ঘটনা। আফতাব আলম নামে ৪৫ বছরের এক মধ্যবয়স্ক মুসলিম। পেশায় ট্যাক্সিচালক। যাত্রী নামিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন রাতে। পথিমধ্যে গাড়ি থামায় উগ্র হিন্দুরা। বুঝতে পারে, লোকটি একজন মুসলিম। হিংস্রতা জেগে উঠে ওদের চেতনায়। যথারীতি সেই গ্র্যান্ড-ন্যারেটিভের ব্যবহার। বল, জয় শ্রীরাম। অবস্থা বুঝতে পেরে আফতাব আলম ছেলেকে কল দিয়ে মোবাইল পাশে রেখে দেন।
    ছেলে জানায়, ওপাশে চিল্লাপাল্লার শব্দ শোনা যাচ্ছিল। বাবাকে কেউ বলছে, জয় শ্রীরাম না বললে তোকে খুন করে ফেলবো। একপর্যায়ে ওরা ভারি কিছু দিয়ে বাবার মাথায় আঘাত করে। এরপর কলটি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
    আমি তৎক্ষণাৎ পুলিশ স্টেশনে ফোন দিই। কিন্তু পুলিশ এ ব্যাপারে নির্বিকার ছিল। কোনো পদক্ষেপেই নেয়নি তারা আমার বাবাকে বাঁচাতে।
    পরদিন সকালে রাস্তার ধারে নিহত আফতাব আলমের লাশ পাওয়া যায়।

    (ঙ) গফুর আহমেদ নামে এক অটো চালকের গাড়ি থামিয়ে নরেন্দ্র মোদি জিন্দাবাদ এবং জয় শ্রী রাম বলতে বলা হয়। এমনটা বলতে রাজি হন না তিনি। হিন্দুরা রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে তার দাড়ি টেনে ছিঁড়ে ফেলে। আঘাতের পর আঘাতে নাক-মুখ ফেটে রক্ত বেরুতে থাকে। এভাবেই একপর্যায়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। উগ্র হিন্দুরা নিহতের মানিব্যাগ ও ঘড়িটি পর্যন্ত ছিনতাই করে।

    ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ পর্যন্ত এমন ঘটনা ঘটেছে কয়েকশত। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছে কয়েকডজন নিরপরাধ মুসলিম। আহতের সংখ্যাও নিতান্ত কম নয়; শতাধিক। এসবের কোনোটিরই বিচার হয়নি আদালতে। খুনিরা দিনে-দুপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে বুক উঁচু করে। আর বিজেপি নেতারা বলছে, এসব ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’।

    ৭/কথিত লাভ জিহাদের নামে মুসলিম নির্যাতন:

    মুসলমানরা হিন্দু নারীদের বিয়ে করে ধর্মান্তরিত করছে বলে ভারতের কট্টরপন্থি বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে। বিয়ের মাধ্যমে ধর্মান্তরিত করার এ প্রক্রিয়াকে তারা কথিত ‘লাভ জিহাদ’ বলে অ্যাখ্যা দিচ্ছে।
    তাদের চাপেই উত্তর প্রদেশে নতুন এ ধর্মান্তররোধী আইন হয়েছে; যাকে সমালোচকরা ‘ইসলামোফোবিক আইন’ নামে অভিহিত করেছেন।
    শুধু উত্তর প্রদেশই নয়, ভারতের আরও অন্তত চারটি রাজ্য ‘লাভ জিহাদ’ বিরোধী আইন পাসের চেষ্টা চালাচ্ছে। মনগড়া এই আইনে কেউ সাব্যস্ত হলে তাঁর জামিন অযোগ্য। হতে পারে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত সাজা।

    (ক) আফরাজুল হত্যা:-মুসলিম যুবকের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মালদহের সৈয়দপুরে। লাভ জেহাদের জেরে খুন হতে হয়েছে তাকে। গোটা ঘটনার ভিডিও রয়েছে।
    চারিদিকে গাছপালা। তার মধ্যেই একফালি রাস্তা। সেখানে সেই মুসলিম যুবকের গলা টিপে শ্বাস রোধের চেষ্টা চলছে। পরে ডান হাতের ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের পর এক কোপ। এরপর পেট্রোল ঢেলে গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়।
    হত্যাকারীর পরনে লাল জামা, সাদা প্যান্ট আর গলায় জড়ানো ছিল সাদা মাফলার। গাল জুড়ে হাল্কা দাড়িও রয়েছে তার। যুবককে জখম করে ফেলে রেখে ক্যামেরার সামনে এসে নির্মমভাবে খুনের ব্যাপারে কিছু কথাও বলে।
    হত্যাকারী শম্ভুলাল দাবি করে, এ ঘটনা ‘লাভ জিহাদে’র ফল। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে শম্ভু লাল মুসলিমদের সাবধান করে দিয়ে বলছে: ”আমাদের দেশে যদি ‘লাভ জিহাদ’ চালাতে চান- আপনারও এই পরিণতি হবে।”

    জানা গেছে, মালদহ থেকে আফরাজুল রাজস্থানে দিনমজুরির জন্য গিয়েছিলেন। পরে কয়েক দিন ধরেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ওই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই জঙ্গলের ভিতরের রাস্তায় তাঁর অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়।

    (খ) রশিদ নামে এক মুসলিম পুরুষকে বিয়ে করেন মোরাদাবাদের এক নারী। পরে লাভ জিহাদের অভিযোগ দায়ের করা হয় ওই দম্পতির বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রশিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই নারীকে প্রথমে নারী সুরক্ষা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। পরে সরকারি হোমে স্থানান্তরিত করা হয় তাকে।
    গণমাধমের কাছে সেই নারী দাবি করেন, তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে দেখেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি নারী সুরক্ষা কেন্দ্র। পরিস্থিতির অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা ওষুধ এবং ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর পরই তার গর্ভপাত হয়ে যায় বলে অভিযোগ করছেন তিনি।
    (গ) ভারতজুড়ে বির্তকের মধ্যেই উত্তরপ্রদেশে ঘটা করে কথিত ‘লাভ জিহাদ’ আইন পাশ করেছিল যোগী আদিত্যনাথ সরকার। সেই আইন বলবৎ হওয়ার এক মাসে ওই আইনে ১৪টি মামলা দায়ের করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। মোট ৫১ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪৯ জন এখনও জেলে রয়েছেন।

    ৮/ নানা অযুহাতে মুসলিমদের উপর হামলা:

    (ক) ভারতে বিহারের বৈশালি জেলার আনঙ্কার থানার চাঁদপুর অঞ্চলের গুলনাজ খাতুন। এই ২০ বছর বয়সী মুসলিম তরুণীকে প্রায় ৩ মাস ধরে চন্দন কুমার ও সতীশ কুমার জ্বালাতন করতো, প্রথমে গুলনাজকে প্রেম করার জবরদস্তি করে। এমনকি গুলনাজ খাতুনকে বিয়ে করবে বলে এই হিন্দু হুমকি পর্যন্ত দেয়। যদি বিয়ে না করে তাহলে হত্যা করবে, তবু গুলনাজ রাজি হয়নি। মুসলিম নারী হিসেবে হিন্দু মালাউনকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়াটাই তো স্বাভাবিক ছিল। এটাই ইসলামি শরিয়ার নির্দেশ। কিন্তু এটাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    গত ৩০ শে অক্টোবর গুলনাজ খাতুন ও গুলশান খাতুন দুই বোন বাড়ির পাশে আবর্জনা ফেলতে গিয়েছিল। সেই সময় চন্দন কুমার ও সতীশ কুমারসহ তার সঙ্গীরা তাঁকে তুলে এনে শ্লীলতাহানী করে, সে বাধা দেওয়ায় গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এবং খালে ধাক্কা মেরে দিয়ে পালিয়ে যায়। ছোটো বোন গুলশান চিৎকার করে অনেক দেরিতে মানুষ পৌঁছায়। সবাই আসতে আসতে প্রায় ৮০% পুড়ে যায় গুলনাজ। সেই দেহ নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছায়, ১৭ দিন পরে মারা যায় গুলনাজ।
    অপরাধীরা সন্ত্রাসী দল বিজেপি ও আরএএস সমর্থক হিন্দু হওয়ায় এই পুরো মামলায় পুলিশ অবহেলা করতে থাকে। নিহত গুলনাজের স্বজনরা অভিযোগ করে যে আসামিরা তাদের হুমকি দিচ্ছে। মামলা না তুললে অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর হবে।

    (খ) ভারতীয় মুসলিমদের উপর আরএসএস সন্ত্রাসীদের হামলা:

    আরএসএস সন্ত্রাসীদের কথা হলো হিন্দু গ্রামের পাশে মুসলিমরা বাড়ি করতে পারবে না। এজন্য মুসলিম ডাক্তার নাইমুল হকের বাড়ি তৈরি বন্ধ করতে কয়েকমাস ধরে হুমকি দিয়ে বলেছে, তাদের কথা না মানলে ফল খারাপ হবে। সব ধরণের বৈধ কাগজপত্র থাকলেও মুসলিম কাউকে বাড়ি করতে দিবে না বলে তারা হুমকি দিতে থাকে। প্রশাসনকে জানানোর পরও কোনো পদক্ষেপ নেয় নি। অবশেষে ২১ শে জুন ২০-২৫ জন আরএসএস সন্ত্রাসী অস্ত্র হাতে হামলা চালায় মুসলিম বাড়িতে । ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায়।
    সংবাদ মাধ্যম বেঙ্গল নিউজ সূত্রে জানা যায়, হিন্দুত্ববাদীরা সাদ্দাম হোসেন, সরজেমা বিবি, সোনাভান খাতুনকে তলোয়ার ও ভোজালি দিয়ে আক্রমণ করে।
    সাদ্দামের পেটের নাড়িভুড়ি বের করে ফেলে। তাঁর মাথাতেও আঘাত করেছে। এক মুসলিম মহিলার স্তন তলোয়ার দিয়ে কেটে দেয়। এমনকি দুষ্কৃতিদের হাত থেকে রেহাই পায়নি সাদ্দামের গর্ভবতী স্ত্রী সোনা ভান বিবিও।

    এভাবেই মোদির হিন্দুত্ববাদী ভারতে একের পর এক মুসলিমদের রক্ত ঝরছে। মোদির লক্ষ্য উদ্দেশ্য খুব পরিষ্কার। বাংলাদেশ ভারত পাকিস্তান মিলে রাম রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায় সে। যে রাজ্যের প্রত্যেকটি নাগরিক হবে হিন্দু। এতো কিছুর পরেও শেখ হাসিন সরকার মোদিকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। মোদির অপরাধনামা তুলে ধরলে বাংলাদেশের নাগরিকদের গ্রেফতার করছে। ছাত্রলীগ, পুলিশ দিয়ে পেটাচ্ছে। এসব থেকে কি স্পষ্ট প্রমাণ হয় না যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের জনগণের ব্যাপারে কিছুই ভাবে না? তার সকল চিন্তা ভাবনা প্রভু ভারতকে সন্তুষ্ট করা? হিন্দুদের খুশি রেখে নিজের গদি টেকানো ?
    এর মাধ্যমে কি এটাই প্রমাণ হয় না যে শেখ হাসিনা ভারত তথা হিন্দুদের দালাল?

    লেখক: উসামা মাহমুদ, প্রতিবেদক আল-ফিরদাউস নিউজ

    পড়ুন আগের পর্বগুলো-

    কসাই মোদির অপরাধনামা! (প্রথম পর্ব)

    কসাই মোদির অপরাধনামা! (দ্বিতীয় পর্ব)

    কসাই মোদির অপরাধনামা! (তৃতীয় পর্ব)

    তথ্যসূত্র:

    [১] উত্তর প্রদেশে ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় মুসলিম কিশোরকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা: https://tinyurl.com/h2d6sz37
    [২]‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় পিটিয়ে মুসলিম যুবককে হত্যা: https://tinyurl.com/jmam3ez2
    [৩]‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় ভারতে গণপিটুনির শিকার তিন মুসলিম কিশোর
    https://tinyurl.com/vpp39vfj
    [৪]ভারতে মুসলিম যুবককে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা: https://tinyurl.com/6pyhyc6w
    [৫]ভারতে ‘লাভ জিহাদ’ ঠেকাতে রাজস্থানে এক মুসলিমকে কুপিয়ে হত্যা: https://tinyurl.com/a5z2d4p7
    [৬]ভারতে লাভ জিহাদের অভিযোগে মুসলিম স্বামী ও দেবরকে গ্রেপ্তার, স্ত্রীকে নারী সুরক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে গর্ভপাতের অভিযোগ: https://tinyurl.com/4p67uh2w
    [৭]লাভ জিহাদ আইনে’ ভারতে মুসলিম যুবক গ্রেপ্তার: https://tinyurl.com/bjcbxzbs
    [৮]উত্তরপ্রদেশে ‘লাভ জিহাদ’ বিরোধী আইনে এক মাসে গ্রেফতার ৫১: https://tinyurl.com/4bkk6pur
    [৯]ভারতে গেরুয়া সন্ত্রাসীকে বিয়ে না করায় মুসলিম তরুণীকে জীবন্ত জ্বালিয়ে হত্যা: https://tinyurl.com/yh2v5fdf

    [১০] RSS সন্ত্রাসীদের হামলা মুসলিমের বাড়ি তৈরি বন্ধ করতে, কাটা হলো মহিলার স্তন – হরিশচন্দ্রপুর, মালদা: https://tinyurl.com/4cm4h4b6

    মন্তব্য করুন

    দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
    দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

    পূর্ববর্তী নিবন্ধইয়ামান | মুজাহিদদের হামলায় ৮ মুরতাদ সেনা নিহত, ৫৭টি অস্ত্র গনিমত
    পরবর্তী নিবন্ধগুজরাট গণহত্যা : রক্তচোষা নতুন ভারতের আবির্ভাব