মোল্লা আখতার মানসুর: ইসলামি ইমারাহ’র দুঃসময়ে হাল ধরা এক সফল নেতা

    6
    2034
    মোল্লা আখতার মানসুর: ইসলামি ইমারাহ’র দুঃসময়ে হাল ধরা এক সফল নেতা

    আজ থেকে পাঁচ বছর আগে এই দিন (২২মে) আফগানিস্তানের স্বাধীনতা যুদ্ধের আরো এক পুরোধা এই নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।

    পাঁচ বছর আগে এই দিন ইসলামি ইমারাহর দ্বিতীয় আমির শাহাদাত বরণ করেন। সামরিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে ইসলামি ইমারাহ একজন দক্ষ নেতা হারায়। মোল্লা আখতার মানসুর রহিমাহুল্লার’র শাহাদাত বরণে যুদ্ধরত এবং সাধারণ আফগানরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তা আদৌ পুষিয়ে নেওয়ার নয়। আলহামদুলিল্লাহ, মোল্লা আখতার মানসুর ইসলামি ইমারাহর মুজাহিদদের জন্য এমন এক অনুকরণীয় আদর্শ রেখে গেছেন যা ইতিহাসের পাতায় সোনালী হরফে লেখা থাকবে।

    তিনি তাঁর ছয় বছরের দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও সামরিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বিশ্বের তাবৎ কুফরী শক্তি সমর্থিত কাবুল সরকারকে নাজেহাল করে ছাড়েন। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় সকল গোত্রের আফগান জনসাধারণ ইসলামি ইমারাহর পক্ষে চলে আসে। দেশীয় বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সিংহভাগকে তিনি বোঝাতে সক্ষম হন যে, ইসলামি ইমারাহর সংগ্ৰাম দখলদার বিরোধী সংগ্রাম। ইসলামি ইমারাহর সংগ্ৰাম ন্যায্য সংগ্ৰাম।

    মোল্লা আখতার মানসুর রহিমাহুল্লাহ’র ব্যক্তিত্ব, কর্ম, জিহাদী স্পৃহা ও মজবুত ঈমানের বিবরণ ও গুণকীর্তন দুচারটি প্রবন্ধে শেষ করা সম্ভব নয়। তিনি অত্যন্ত নাজুক মূহুর্তে ইসলামি ইমারাহর শুধু হাল ধরেননি বরং একইসাথে এর ভাবমূর্তি সমধিক উজ্জ্বল করেছেন।

    ২০১০ সালে মোল্লা মুহাম্মদ উমর মুজাহিদ রহিমাহুল্লাহ তাঁকে ইসলামি ইমারাহর সহকারী প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। ইসলামি ইমারাহর প্রতিরোধ যুদ্ধের সে সময়টি ছিল খুবই সঙ্কটপূর্ণ। সেসময় ইসলামি ইমারাহর বিরুদ্ধে দখলদারদের তীব্রতর সামরিক হামলা ও প্রোপাগান্ডা চলছিল। ইসলামি ইমারাহর প্রতিরোধ শক্তি চিরতরে নিঃশেষ করতে নতুন নতুন সেনাদল মোতায়েন করা হচ্ছিল। ইমারাহকে দুর্বল করতে, বিভক্ত করতে ও পরাজিত করতে শত্রুরা সম্ভাব্য সবকিছু করেছে। আলহামদুলিল্লাহ, মোল্লা আখতার মানসুর রহিমাহুল্লাহ কঠোর হাতে শত্রুদের দমন করেন । আল্লাহর ইচ্ছায় তাদের সকল পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেন।

    আমিরুল মুমিনীন মোল্লা মুহাম্মদ উমর মুজাহিদ রহিমাহুল্লাহ’র মৃত্যুর পর মোল্লা আখতার মানসুর রহিমাহুল্লাহকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়। সেসময় ইসলামি ইমারাহ বহুবিধ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি ছিল। ক্ষমতালোভী কিছু ব্যক্তি বিদ্রোহ করে বসেছিল। দায়েশ (আইএস) মাথাচাড়া দিচ্ছিল। দখলদাররা সামরিক হামলা জোরদার করার পাশাপাশি বিভিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠন ও মিলিশিয়া তৈরি করে সংকটকে ঘনীভূত করছিল। কিন্তু এত সংকট,বন্ধুরতা আর প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মোল্লা আখতার মানসুর রহিমাহুল্লাহ আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে শত্রুদের সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেন। তিনি কুফ্ফার সংঘ ও বাতিলের সামনে পর্বতের মত অনড় অবস্থান গ্ৰহন করেন। সেসময় তিনি মার্কিন জনগণের প্রতি এক খোলা চিঠি পাঠান। তিনি তাদেরকে দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে বলেন।

    আজ ইসলামি ইমারাহ বিশ্ববাসীর সমর্থন ও স্বীকৃতি পাচ্ছে। এটি মোল্লা আখতার মানসুর রহিমাহুল্লাহ’র মতো নেতৃবর্গের কুরবানির ফসল । তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে ইসলামি ইমারাহর সেনারা নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আল্লাহ চাইলে সেদিন খুব দূরে নয় যেদিন প্রিয় আফগানিস্তান স্বাধীন হবে এবং ইসলামি শরিয়াহ কায়েম হবে।

    লেখক: মুহাম্মাদ জালাল

    অনুবাদক: তারেক মুসান্না

    6 মন্তব্যসমূহ

    মন্তব্য করুন

    দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
    দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

    পূর্ববর্তী নিবন্ধইসরায়েলি আদালতের নির্দেশে ৩ সন্তান নিয়ে গৃহহীন হচ্ছেন ফিলিস্তিনি নারী
    পরবর্তী নিবন্ধসোমালিয়া | কুফ্ফার বাহিনীর সামরিক ব্যারাকগুলোতে আল-কায়েদার তীব্র হামলা