আল-কায়েদা পূর্ব আফ্রিকা শাখা হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদদের প্রতিষ্ঠিত একটি ইসলামিক আদালত গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে ৬ গুপ্তচরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে। যারা ক্রুসেডার মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করতো।
গত ২৬ জুন, শাবাব নিয়ন্ত্রিত দক্ষিণ সোমালিয়ার যুবা রাজ্যের সাকো শহরে জনসম্মুখে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ইসলামিক আদালত। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে ইসলামিক আদালত গুপ্তচরদের স্বীকারোক্তি গ্রহণ করেছেন।
ইসলামিক আদালতের মতে, প্রথম যেই গুপ্তচরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়, তার নাম ওমর আবদুল কাদির হিরালি, সে “ওমর কাজো” নামে পরিচিত, এসময় তার বয়স হয়েছে ৩৬ বছর।
ওমরের বিরুদ্ধে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার গুপ্তচরবৃত্তি করা এবং দেশের দক্ষিণে শাবেলী রাজ্যের কনিয়াব্রো শহর এবং এর শহরতলিতে মার্কিন বোমা হামলা বাস্তবায়নে অংশ নেওয়ার অভিযোগ ছিল। ওমর তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি আদালতের সামনে স্বীকার করেছে। সে তাদের কাজের বিবরণ বর্ণনা করার সাথে সাথে স্বীকার করেছে: “আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থার একজন সহযোগী আমাকে তাদের সাথে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিল এবং আমি তার প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলাম, সে আমাকে মুজাহিদিনদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ এবং গুপ্তচর নিয়োগের বিষয়ে কিছু দায়িত্ব অর্পণ করেছিল। সে এও স্বীকার করেছে যে, তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানী মোগাদিশু ও যুবা রাজ্যে নিযুক্ত হারাকাতুশ শাবাবের প্রাক্তন গভর্নর ছাড়াও বেশ কয়েকজন মুজাহিদকে শহিদ করেছে ক্রুসেডার আমেরিকা।
গুপ্তচর আরও বলেছে: “কনিয়াব্রো শহরে যে অপারেশন হয়েছিল তাতে আমারও প্রধান ভূমিকা ছিল, আমি নিজে বিশেষ বাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়েছিলাম। স্বীকার করছি যে আমি আমেরিকানদের জন্য আরও ৪ গুপ্তচর নিয়োগ দিয়েছিলাম। ”
দ্বিতীয় গুপ্তচরের নাম আবেদ হাসান আহমেদ, যার বয়স ২৯ বছর। তার বিরুদ্ধে ক্রুসেডার আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থার জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করার এবং কোনিপুরে মার্কিন অভিযানে মুখ্য ভূমিকা নেওয়ার অভিযোগ ছিল।
আবেদ স্বীকার করেছে যে, সে আমেরিকানদের জন্য কাজ করা একজন গুপ্তচর ছিল এবং আদালতের সামনে সে আমেরিকার জন্য যে কাজগুলো আঞ্জাম দিয়েছিল সেগুলির কয়েকটির ব্যাখ্যাও করেছে।
সে বলেছে: “জিলানী মে” নামে একজন আমাকে আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থার সাথে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিল এবং আমি তার প্রস্তাব মেনে নিয়েছিলাম। তারপর সে আমাকে মুজাহিদিন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য পাঠিয়েছিল এবং আমি যে কাজটি করেছি তা হ’ল- আমি একটি গ্রুপের মধ্যে কাজ করেছি যার লক্ষ্য ছিল শাইখ বিলির উপর নজরদারি করা। আমার তথ্যের ভিত্তিতে তার উপর বোমা ফেলার প্রক্রিয়া আমি প্রত্যক্ষ করেছি, তবে আমি এও দেখছিলাম যে বোমা হামলায় কীভাবে তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন। আমি মুজাহিদিনের একটি গাড়ির মধ্যেও চিপ লাগিয়েছিলাম। এরপর এটিতে ড্রোনের সাহয্যে বোমা ফেলেছিল মার্কিন বাহিনী। আমি মুজাহিদ কমান্ডার রাসমি এবং আবু ওয়ার্দেওর গাড়িতেও চিপ রেখেছিলাম। অতঃপর তাদের উভয়কেই বোমা হামলার মাধ্যমে শহিদ করা হয়েছিল।
তৃতীয় গুপ্তচর হল- ৩৬ বছর বয়সী ফার্টুন ওমর আবকো নামের এক মহিলা, যে “ফেরতু” নামে পরিচিত তার বিরুদ্ধে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করা এবং বোনিয়া অঞ্চলে বোমা হামলার চালানোর অভিযোগ করা হয়েছিল।
ফার্টুন আদালতের সামনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করেছে, এবং আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থার সাথে তার কাজ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে বলেছে: “আমার আত্মীয়-স্বজনদের একজন আমাকে আমেরিকানদের সাথে কাজ করা প্রস্তাব দিয়েছিল এবং আমি তা গ্রহণ করেছিলাম। সে আমাকে কোনিয়াব্রো শহরে ডেকেছিল এবং আমাকে মুজাহিদিনদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে বলে। আমি তার প্রস্তাবটি গ্রহণ করি এবং আমি মুজাহিদদের তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করে তার নিকট পৌঁছাতে থাকি। একবার কমান্ডার আবু ওয়ারিশীকে একটি বাড়িতে প্রবেশ করতে দেখি, তখন আমি সেখানে একটি চিপ লাগিয়ে আসি। পরে রাত্রিবেলায় সেখানে বোমা হামলা চালারো হয়। এছাড়াও কনিয়াব্রো হাসপাতালের কাছে পার্কিং গ্যারেজেও একটি চিপ রেখেছিলাম। পরে এখানেও বোমা ফেলা হয়েছিল, আমি আইমানকেও চিপ দিয়েছিলাম, যা সে শাবাবের কুনিও চৌকিতে লাগিয়েছিল এবং সেখানেও বোমা ফেলা হয়েছিল। আমি স্বীকার করি যে আমেরিকানদের জন্য আমি বেশ কয়েকটা গুপ্তচরকে নিয়োগ দিয়েছিলাম। ”
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চতুর্থ গুপ্তচরের নাম ছিল ইব্রাহিম ওমর আলী, ৫৫ বছর বয়সী এই লোক “এবরু পান্ডে” নামে পরিচিত। সেও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত।
ইব্রাহিম আদালতের সামনে গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ স্বীকার করে বলেছে: “আবু ওয়ারশি নামে এক ব্যক্তি আমাকে এই চাকরীর প্রস্তাব দিয়েছিল এবং আমি তার প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলাম। সে আমাকে মুজাহিদিন সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করতে বলেছিল। এরপর থেকে আমি শাইখ বালির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে থাকি। আমার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর উপর বোমা ফেলা হয়েছিল। হামলার পর ঘটনাস্থলে আমি একটি সমীক্ষাও চালিয়েছি। এছাড়াও মুজাহিদিনের চোখের আড়ালে অনেক দূরে এমন একটি জায়গা চিন্হিত করি, যেখানে মার্কিন বিশেষ বাহিনী রাতে অবতরণ করে এবং আল-শাবাবের বিরুদ্ধে অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনা করে। এরপর মার্কিন সৈন্যরা সেখান থেকে কোনিয়াব্রো শহরে বোমা হামলা চালিয়েছিল এবং অনেক মুজাহিদকে শহিদ ও আহত হয়েছিল।
বাকী গোয়েন্দাদের মতোই পঞ্চম গুপ্তচরও আদালতে নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে। তার নাম সাদ্দাম ওসমান মুহাম্মদ নূর। ২১ বছর বয়সী এই যুবকের বিরুদ্ধে আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থার জন্য গুপ্তচরবৃত্তি এবং বোনিয়া বোমা হামলায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সাদ্দাম আমেরিকানদের জন্য গুপ্তচর হিসাবে তাঁর কাজ স্বীকার করে বলেছে: “হ্যাঁ, আমি আমেরিকানদের সাথে কাজ করেছি এবং যে কাজটি আমি তাদের দিয়েছি, তা হ’ল যেই বাড়িতে শিক্ষক “মুহিউদ্দিন” ছিলেন সেখানে আমি একটি স্লাইড রেখেছিলাম। এভাবে আরও দুটি বাড়িতেও আমি স্লাইড রেখেছিলাম। যার ফলে এসব স্থানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল।পাশাপাশি আমেরিকানদেরকে মুজাহিদিনের বাড়ি ও তাদের সংখ্যা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছিলাম। ”
ষষ্ঠ গুপ্তচর ওয়াইস হাসান হাজী মুহাম্মদ। ৩৬ বছর বয়সী এই লোক “উয়েস ইয়াও” নামেও পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে একজন যাদুকর হওয়ার পাশাপাশি আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থার জন্য কাজ করা গুপ্তচর হিসাবে অভিযোগ করা হয়েছিল। সে আদালতের সামনে স্বীকারোক্তি দিয়েছে: “হ্যাঁ, আমি আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থার সাথে কাজ করেছি, এবং আমি কনিয়াব্রো শহরে তাদের সাথে পরিচিত হয়েছি“। ওমর কাজো আমাকে গুপ্তচর হিসাবে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন এবং আমি তাদের সাথে কাজ করতে রাজি হয়েছিলাম। এরপর প্রশিক্ষণ নিতে আমাকে রাজধানী মোগাদিশুতে যেতে বলেছিল। প্রশিক্ষণে যাওয়ার আগে আমি মুজাহিদদের একটি কেন্দ্র সম্পর্কে তাদেরকে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছিলাম।
শেষ গুপ্তচর স্বীকার করেছে যে, সে যাদুবিদ্যায় কাজ করত এবং বলেছে “আমি উইজার্ড হিসাবে কাজ করেছি এবং আমি স্বীকার করছি যে আমি অনেক লোককে ডাইনি দিয়ে আঘাত করেছি।
অতঃপর তাদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ প্রমাণিত হলে ইসলামিক আদালত দক্ষিণ সোমালিয়ার যুবা রাজ্যের সাকো শহরে জনসাধারণ ও কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে একটি সরকারী মাঠের মাঝখানে গুলি চালিয়ে তাদেরকে হত্যা করে।
সোমালিয়ায় সামরিক যুদ্ধের পাশাপাশি মুজাহিদিন এবং আমেরিকানদের মধ্যে একটি তীব্র গোয়েন্দা যুদ্ধ চলছে, যেখানে মার্কিন বাহিনী শাবাব যোদ্ধাদের এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিকে লক্ষ্য করার জন্য মাটিতে গুপ্তচর নিয়োগ দিয়েছে। হারাকাতুশ শাবাবও এই গুপ্তচরদের মাটি থেকে খোঁজে খোঁজে হত্যা করছেন। আর যাদেরকে বন্দী করা সম্ভব হচ্ছে তাদেরকে ইসলামিক আদালতে বিচারের জন্য নিয়ে আসা হচ্ছে।
আলহামদুলিল্লাহ !
মার্কিনমুলুকের অবসান ঘটুক!
চরদের হত্যা করার ভিডিও প্রকাশ করলে অনেক ভালো হতো।
আলহামদুলিল্লাহ
মুমিনরা আল্লাহর পথে লড়াই করে। আর কাফেররা তাগুতের পথে লড়াই করে। আর তোমরা শয়তানের দোসরদের বিরুদ্ধে লড়াই কর। নিঃসন্দেহে শয়তানের চক্রান্ত দুর্বল।
সাহায্য কেবল আল্লাহ থেকে। বিজয় অতি নিকটে। আর (এ দুয়ের) সুসংবাদ দাও মুমিনদের সকাশে।
মোহতারাম ভাই, আশ-শাবাব মুজাহিদিনদের অথবা আল কায়েদা আফ্রিকান শাখার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট লিংকটি দেওয়া যাবে? জাজাকাল্লাহ।
Oh Allah give power to all Mujahedin.