বীর মুজাহিদের শাহাদাত বরণে শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরির সান্তনা বার্তা- ১

3
2471
বীর মুজাহিদের শাহাদাত বরণে শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরির সান্তনা বার্তা- ১

সম্প্রতি বৈশ্বিক জিহাদী তানযিম জামা’আতুল-কায়েদার কেন্দ্রীয় আস-সাহাব মিডিয়া দলটির প্রধান আমীর শাইখ ড. আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিজাহুল্লাহ্’ নতুন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। “صهاينة العرب | من فصيل لابن زايد؟!” শিরোনামে প্রকাশিত এই ভিডিওটি দৈর্ঘ্য ১:০১:৩৬ সেকেন্ড। যেখানে তিনি মুসলিম ভূমিতে জায়নিস্ট-ক্রুসেডারদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়তাকারী এবং তাদের  কর্মকান্ডের প্রসারে সাহায্যকারী একদল কুচক্রী ও চরিত্রহীন ‘আরব জায়নিস্ট’দের নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে এই আলোচনার পূর্বে তিনি উম্মাহর শ্রেষ্ঠ কয়েকজন বীর মুজাহিদ ও উমারাদের শাহাদাত বরণে এই উম্মাহকে সান্তনা বার্তা শুনান।

যেখানে শাইখ ড. আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিজাহুল্লাহ্ বলেন, আমি উম্মাহকে সান্তনা দিতে চাই একদল বীর মুজাহিদের শাহাদাত বরণে, আল্লাহ তাঁদের সকলের রুহের উপর রহমত নাযিল করুন এবং তাঁদের দান করুন জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম, আমাদেরকেও তাঁদের সঙ্গী হবার তৌফিক দান করুন। শহীদের এই কাফেলায় শামিল ভাইরা হলেন – মুহাম্মাদ সাইদ আল শিমরানি, আবু হুরায়রা আস সান’আনি, হিশাম আল ইশমাউই, শাইখ আবু মুসআব আবদুল ওয়াদুদ, আবুল কাসেম আল উরদুনি এবং আবু মুহাম্মাদ আল সুদানি – আল্লাহ তাঁদের সকলকে কবুল করুন। দ্বীন এবং উম্মাহর গৌরব এবং পবিত্রতা রক্ষায় এই ভাইরা আমৃত্যু লড়ে গেছেন ক্রুসেডার ও তাদের পদলেহীদের বিরুদ্ধে। তাঁরা এমন আদর্শ রেখে গেছেন, যা সকলের জন্য অনুকরণীয়। তাঁরা তাঁদের আদর্শকে রেখে গেছেন জিহাদ, কুরবানী এবং আত্মত্যাগের রাস্তার মশালস্বরূপ।

সাইদ আল শিমরানি। তাঁর চিন্তাভাবনাই ছিল শুধু উম্মাহকে নিয়ে। সাহসিকতার সাথে তিনি পুনরুজ্জীবিত করেছেন মুহাম্মাদ বিন মাসলামা (রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) এর অনুসৃত শাতিমে রাসূলকে হত্যার পন্থাকে। এই পন্থাকে পুনরুজ্জীবিত করতে তিনি ক্রুসেডার বাহিনীর ব্যূহ ছিন্ন করে হামলা চালিয়েছেন নিজের সর্বশক্তি দিয়ে। ইসলাম ও মুসলিমদের পক্ষ থেকে আল্লাহ রাব্বুল ইযযাত তাঁকে সর্বোচ্চ জাযা (প্রতিদান) দান করুন, আমীন!

আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক অবিচল নেতা ও অকুতোভয় বীর সিংহ আবু হুরায়রা আস সান’আনি এর উপর। সাফাভিদের উত্তরসূরি হুথি সন্ত্রাসী, ক্রুসেডার আমেরিকা এবং তার উচ্ছিষ্টভোগী সৌদি ও আমিরাতি বাহিনীর সাথে পুরোপুরি অসম এক সমরে নিজের অনুসারি মুজাহিদ ভাইদের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। তিনি শত্রুর প্রবল হামলায় না শঙ্কিত হয়েছেন, না হাল ছেড়ে পিছু হটেছেন। বরং কালিমার ঝান্ডা শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত বুলন্দ করে রেখেছিলেন তিনি, এরপর পান করেছেন শাহাদাতের অমিয় সুধা। কালিমার এই ঝান্ডাকে রক্তে রঞ্জিত করে এটি বহনের মহান দায়িত্ব তিনি দিয়ে গেছেন তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি মুজাহিদ ভাইদের।

উম্মাতে মুসলিমাকে আমি সান্ত্বনা দিতে চাই আরো এক বীরের বিয়োগব্যথায়। তিনি হলেন সদা ধৈর্য্যশীল বীর মুজাহিদ হিশাম আল ইশমাউই, আল্লাহ তাঁর রুহের উপর রহমত নাযিল করুন। হিশাম ইশমাউই এর বীরগাথা বলতে গেলে বলতে হবে তাঁর সাথীভাই – ইমাদ আব্দুল হামীদ এবং উমর রিফা’ই সুরুর এর ব্যাপারেও। আল্লাহ তাঁদের উভয়ের উপর রহম করুন। আলোর দিশারি এই আত্মোৎসর্গকারীরা সদা অবিচল থেকেছেন মিশরের বিপদশঙ্কুল ময়দানে। তাঁরা উম্মতকে জানিয়ে দিলেন, মিশরের ভূমি এখনো সক্ষম এমন এক প্রজন্ম তৈরীতে যারা সদা তৎপর দা’ওয়াহ, জিহাদ এবং নিজেকে বিলিয়ে দেবার ময়দানে।

আফ্রিকার ইসলামিক মাগরিবের আমার ভাই, প্রখ্যাত শাইখ, বীর মুজাহিদ এবং প্রজ্ঞাময় আমীর আবু মুসআব আবদুল ওয়দুদ ছিলেন পুরো অঞ্চলে জিহাদের ময়দানে সবথেকে উপযুক্ত ব্যক্তিদের একজন। আল্লাহ তাঁর ও তাঁর সঙ্গী ভাই আবদুল হামীদ, আবু আবদুল কারীম এবং আনাস এর উপর খাস রহমত নাযিল করুন। এই উম্মাহর জন্য তাঁর অবদান অনেক। জিহাদের ময়দানে তিনি দিয়েছে  কঠিনতম পরীক্ষা। আমি তাঁর জন্য দুয়া করি, আল্লাহ পাক যেন তাঁকে তাঁর কাজের সর্বোত্তম জাযা দান করেন। চলমান এই ক্রুসেড যুদ্ধের মোকাবেলায় শাইখ আবু মুসআব মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ করেছেন, তাঁদেরকে পরিণত করেছেন কাতারবদ্ধ এক সীসাঢালা প্রাচীরে। শাইখ আবু মুসআব ছিলেন অনেক দানশীল এবং আত্মত্যাগী। তাঁর জীবনী সম্পর্কে অধ্যায়ন এবং এর যথাযথ অনুকরণ আমাদের সকলের কর্তব্য। আল্লাহর কাছে আমার দুয়া, তিনি যেন জান্নাতে শাইখের সাথে আমাদের সকলকে থাকার সুযোগ করে দেন। আল্লাহ যেন আমাকে সুযোগ করে দেন জিহাদের ময়দানে শাইখের দক্ষতা ও প্রাধান্য এবং দানশীলতার ময়দানে তাঁর সুপ্রসারিত হাত সম্পর্কে তুলে ধরতে।

মুহাজির ভাই আবু কাসসাম আল উরদুনি, আল্লাহ তাঁর উপর রহমত নাযিল করুন। তিনি ছিলেন একজন মুহাজির এবং একজন মুজাহিদ যিনি কখনোই দ্বিধাবোধ করেননি আল্লাহর রাস্তায় নিজের সবটুকু কুরবান করতে। জিহাদের ময়দানে তিনি আপন দক্ষতা ও নৈপুণ্য দিয়ে ক্রমেই পদোন্নতি লাভ করেছেন। এক পর্যায়ে স্বয়ং আল্লাহ পাক তাঁকে পদোন্নতি দিয়েছেন, আবু কাসসামকে তিনি দান করেছেন শাহাদাতের ঈর্ষণীয় মর্যাদা। আল্লাহর কাছে আমার দুয়া, তিনি যেন ভাইয়ের শাহাদাতকে কবুল করে নেন এবং সিরিয়া ও পূর্ব আফ্রিকায় ভাইয়ের রাখা অবদানের পূর্ণ প্রতিদান প্রদান করেন।

আল্লাহ, আমাদেরকে আবু কাসসাম ও অন্য সব শুহাদাদের সাতে মিলিত করুন, আপনার অসীম-অশেষ ক্ষমা ও রহমতের সুশীতল ছায়ায়! আমিন।

3 মন্তব্যসমূহ

Leave a Reply to Anonymous প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধবেরিয়ে আসছে আমেরিকার কথিত উদ্ধার অভিযানের আসল চিত্র-
পরবর্তী নিবন্ধবৈশ্বিক কুফ্ফার জোটের উপর হামলার আহ্বান আল-কায়েদা প্রধান ড. আইমান আয-যাওয়াহিরীর- ২