বৈশ্বিক কুফ্ফার জোটের উপর হামলার আহ্বান আল-কায়েদা প্রধান ড. আইমান আয-যাওয়াহিরীর- ২

2
3084
বৈশ্বিক কুফ্ফার জোটের উপর হামলার আহ্বান আল-কায়েদা প্রধান ড. আইমান আয-যাওয়াহিরীর- ২

সম্প্রতি বৈশ্বিক জিহাদী তানযিম জামা’আতুল-কায়েদার কেন্দ্রীয় আস-সাহাব মিডিয়া দলটির প্রধান আমীর শাইখ ড. আইমান আয-যাওয়াহিরী হাফিজাহুল্লাহ্’ নতুন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। “صهاينة العرب | من فصيل لابن زايد؟!” শিরোনামে প্রকাশিত এই ভিডিওটি দৈর্ঘ্য ১:০১:৩৬ সেকেন্ড।

ভিডিওটিতে শাইখ ড. আইমান আয-যাওয়াহিরীর হাফিজাহুল্লাহ্ ফিলিস্তিনের সাথে আরবের গাদ্দারদের দীর্ঘ ইতিহাস বর্ণনার পর ১৯৩৫ সালের ২৬ জানুয়ারী মাসজিদুল আকসাতে সংগঠিত উলামাদের জামায়েত থেকে প্রকাশিত একটি ফতোয়া উল্লেখ্য করেন। যেখানে তাঁরা সকলেই ইজমা হয়ে ফতোয়া দিয়েছিলেন যে, ফিলিস্তিনের এক বিঘত ভূমিও ইয়াহুদীদের কাছে বিক্রি করা হারাম; শুধু এতটুকুই নয়, বরং যারা বিক্রি করবে বা বিক্রিতে কোন ভাবে সহযোগীতা করবে, তা তাদের রিদ্দাহ ও কুফুর প্রমাণ এবং বাইতুল মাকদিস, ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে সাহায্য হিসেবে গণ্য হবে।

শাইখ এর পরেই এই ফতোয়াকে ঐসমস্ত গাদ্দারদের বিরুদ্ধে দলীল হিসেবে ইপস্থাপনের কথা বলেছেন, যারাই ফিলিস্তিনের ব্যপারে জাতিসংঘের কোন সিদ্ধান্তকে মেনে নিবে।

এরপর শাইখ বলেন ইসরাইল হচ্ছে মুসলিম বিশ্বের বুকে আমেরিকার তৈরিকৃত পরামানু বোমা সহ সকল সক্ষমতার অধিকারী এক শক্তি। আর এটা তাদের পক্ষ থেকে পরিচালিত একটি ক্রুসেড। তাই আমাদেরকে পুরো বিশ্বে এই ইসরাইলকে সাহায্যকারী বৈশ্বিক জোটের উপর হামলা চালাতে হবে।

তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রথম অস্ত্র হচ্ছে সচতেনতা; কে শত্রু ও কে বন্ধু তা ভালোভাবে চেনা। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা এক উম্মাহ, বিভিন্ন ফ্রন্টে আমাদের যুদ্ধ এক। আমাদেরকে সমস্ত তন্ত্র-মন্ত্র ছেড়ে তাওহীদের কালিমাতলে একত্রিত হতে হবে। কারণ, এছাড়া সবই ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছু বয়ে আনবে না। ফিলিস্তিন যার উৎকৃষ্ট উদাহারণ।

শাইখ বলেন, উম্মাহকে যুদ্ধের ময়দানে ফিরিয়ে আনতে হবে ও অস্ত্র ধারণ শিক্ষা দিতে হবে। কারণ সকল সরকারী আলেমদের ফতোয়ার লক্ষ্য হচ্ছে উম্মাহ যাতে অস্ত্র ছেড়ে দেয়।

তিনি বলেন, আমাদেরকে আকিদাগত, চিন্তাগত, তারবিয়াগত, রাজনৈতিক ও সামরিকভাবে এই জয়ানিষ্ট জোট ও তাদের ক্রুসেডার মিত্রদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে, আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে যে এই ক্রুসেড যুদ্ধ প্রতিহত করা আমাদের পরবর্তি প্রজন্মের প্রচেষ্টাকে সহজ করে দিবে। এ জন্য আমাদেরকে প্রথমে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আর উম্মাহর মাঝে যেকোন ফাটলের চেষ্টাই অপরাধ, যার জন্যে শাস্তি পেতে হবে।

শত্রুরা সবচেয়ে বেশি ভয় করে মরক্কো থেকে কাশগর পর্যন্ত মুসলিমদের ঐক্য হয়ে যাওয়াকে। তাই তারা যুদ্ধ, ধোঁকা ও মুসলিম উম্মাহকে গোলাম বানানোসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এই ঐক্যকে বাঁধা দিয়ে রাখে।

তাই এই ক্রুসেডকে প্রতিহত করতে আমাদের প্রয়োজন দীর্ঘ সবর ও জিহাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতির। সেই সাথে প্রয়োজন সর্বত্র শত্রুর শক্তি ক্ষয় ও শত্রুকে পরাস্ত করা। তাই আমাদেরকে প্রথমে সুসজ্জিত শত্রুদের ক্লান্ত করার কৌশল অবলম্বন করতে হবে, শত্রুকে ক্লান্ত ও তাদের শক্তি ক্ষয়ের জন্যে তেমন কিছুই প্রয়োজন নেই। বরং উদ্ভাবনী শক্তি ও সাধারণ উপাদান দিয়েও শত্রুর শক্তি ক্ষয় করা সম্ভব, যেখানে সমগ্র বিশ্ব হবে আমাদের যুদ্ধক্ষেত্র। এই মারহালায় শত্রুদের উপর ততক্ষণ পর্যন্ত আক্রমণ চলতে থাকবে, যতক্ষণ না আমরা শত্রুকে অর্থনৈতিক ও সামরিক রক্তপাতের মাধ্যমে হতাশ, ক্লান্ত ও তাদের মনোবল শেষ করে দিতে পারি। আর এই প্রেক্ষাপটে শত্রুর প্রত্যাশার বাইরে শত্রুকে আঘাত করা, শত্রুর নিরাপত্তা সারির পিছনে আক্রমন করা এবং শত্রুর মাটি ও শত্রুর সীমানার বাইরে অপারেশনগুলো পরিচালনা করার গুরুত্ব স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

শাইখ বলেন, এই ধরণের অভিযানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি অভিযান ছিল সাম্প্রতিক সময়ে সিরিয়ার রাক্কায় রাশিয়ার একটি ঘাঁটিতে তানযিম হুররাস আদ-দ্বীনের শহিদী হামলা। এই অভিযানটি ছিল শত্রুর সামরিক অবরোধ ভাঙার একটি বাস্তব উদারহরণ।

এরপর শাইখ আল্লাহর কাছে এই দো’আ করেন যে, আল্লাহ্ তা’আলা যেন এই অপারেশনের শহীদদের কবুল করেন এবং যারা এই অপারেশনকে সমর্থন করেছেন তাদের সবাইকে পুরস্কৃত করেন। আল্লাহ তা’আলা আমাদের মুসলিম ভাইদের এবং সিরিয়া ও অন্য স্থানে মুজাহিদিন ও এই উম্মাহকে সম্মিলিত শত্রুর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

তিনি বলেন, ইসলামের শত্রুরা সর্বদা চায় জিহাদকে তাদের চাহিদামত স্থান ও সময়ে সীমাবদ্ধ করে ফেলতে। তাই আমাদেরকে এই সীমানা ভেঙ্গে বাহিরে আঘাত করতে হবে। তারা যেমনভাবে সব জায়গা থেকে আমাদেরকে আক্রমণ করে, আমাদেরকেও সর্বস্থানে তাদেরকে আক্রমণ করতে হবে।

তাই হে মুসলিম ভাইয়েরা, আপনারা সর্বস্থান থেকে এই হামলায় শরীক হোন, যাতে আমরা প্রমান করে দিতে পারি যে, কুদ্‌স কখনো ইয়াহুদীদের ভূমিতে পরিনত হবে না, ইনশাআল্লাহ।

শাইখ ড. আইমান আয-যাওয়াহিরীর হাফিজাহুল্লাহ্ আশা করেন যে, আগামী বছরগুলোতে এই উম্মাহ জায়নিস্ট-ক্রুসেডারদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আরও একতাবদ্ধ প্রচেষ্টার সাক্ষী হবে। ইনশাআল্লাহ্।

2 মন্তব্যসমূহ

Leave a Reply to khan saheb প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধবীর মুজাহিদের শাহাদাত বরণে শাইখ আইমান আয-যাওয়াহিরির সান্তনা বার্তা- ১
পরবর্তী নিবন্ধদেশের মোট ইন্টারনেটের অর্ধেকই ব্যয় হচ্ছে পর্নোগ্রাফি ও টিকটকে