বরাবরই বিতর্কিত মন্তব্য করা উত্তর প্রদেশের শ্রম প্রতিমন্ত্রী রঘুরাজ সিং গতকাল (বৃহস্পতিবার) আবারও মুসলিম বিদ্বেষী মন্তব্য করেছে।
গত ২৫ নভেম্বর একটি ভিডিও বার্তায় মুসপিলমদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মাদ্রাসাগুলির বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযােগ করে এই উগ্র হিন্দু নেতা বলেছে, “মাদ্রাসাগুলাে সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি, সেখানে সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে একজন সন্ত্রাসী হয়, তাদের চিন্তাভাবনা সন্ত্রাসী।’ভগবান’ সুযােগ দিলে সারাদেশের মাদ্রাসা বন্ধ করে দেবাে। গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে তার এই ধরণের মন্তব্য উত্তর প্রদেশে রাজনৈতিক মহলে আলােড়ন সৃষ্টি করেছে।
সে আরও বলেছে, “সন্ত্রাসের মুখ গুঁড়িয়ে দিতে হবে, সাপের মুখে তার ফণা পিষে দিতে হবে। একইভাবে সন্ত্রাসবাদের ফণাকেও আমরা গুড়িয়ে দেবাে।”
সবশেষে সে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে আবেদন করে বলেছে, “আমি মােদী সরকারকে সারা দেশে মাদ্রাসা নিষিদ্ধ করার অনুরােধ করব।”
এর আগে গত বছর মুসলিম নারীদের বোরখা পড়ার উপরেও নিষেধাজ্ঞা আরপের কথা বলেছিল এই সন্ত্রাসী মন্ত্রী।
হিন্দুত্ববাদীদের নিয়ন্ত্রিত ভারতের স্কুলগুলোতে প্রকাশ্যে মুসলিমদের হত্যার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাদের দেমাগে গেঁথে দেওয়া হয় মুসলিমরা তাদের আদি শত্রু। মুসলিমরা হিন্দুদের উপর আক্রমণ চালিয়েছিল, তাই তাদেরকে মারতে হবে, নিতে হবে প্রশিক্ষণ। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী প্রশাসনের কাছে এগুলো সন্ত্রাসের সঙ্গায় পরে না!
যেখানে সমগ্র ভারত জুড়ে হিন্দুত্ববাদীদের নানা হিংস্র কর্মকাণ্ডের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মুসলিমদের, সর্বত্রই হিন্দুত্ববাদীদের প্রশিক্ষিত সদস্যরা নানা অভিযোগ তুলে মুসলিদের উপর হামলে পড়ছে, সেখানে হিন্দুত্ববাদী এমপি মন্ত্রীরা এগুলো বন্ধ না করে উল্টো মুসলিদেরকেই কোনঠাসা করতে ভিত্তিহীন প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে, মুসলিম বিদ্বেষকে জোড়ালোভাবে উসকে দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, ভারতে এখন বিজেপির অপশাসনে অর্থনৈতিক সংকট, বেকারত্ব ও মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি নানান আর্থ-সামাজিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। একদিকে চাকরিহীনতার কারণে যুবকরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে, আরেকদিকে ডিজেল পেট্রোলের দাম বাড়তে বাড়তে শত পার করেছে।
আর এসব কুকীর্তি ও অযোগ্যতা ঢাকতেই বিজেপির এমপি-মন্ত্রীরা একবার তালিবেন্দের আফগান বিজয়কে তেলের দাম বাড়ার কারণ বলছে, আরেকবার বলছে জে ভারতের সব সমস্যার জন্য মুসলিমরা দায়ী। আর ব্যর্থতা ঢাকতে তাদের মুসলিম-বিদ্বেষের হাতিয়ার তো আছেই।
এভাবেই বিজেপির নেতা-কর্মীরা জনগণকে বোকা বানিয়ে তাদেরকে মুসলিম নিধন, আসাম-ত্রিপুরা ইস্যু, কবরস্থান ভাঙা, মাদ্রাসা বন্ধ করা, ভারত-পাকিস্তান ইস্যু, মন্দির ভেঙে মসজিদ করা, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে জনগণকে উস্কে দেওয়া – এসব ইস্যুতে মাতিয়ে রেখেছে।
সব মিলিয়ে ভারত তথা উপমহাদেশের ঘটনাপ্রবাহ এক বিরাট গণহত্যার ক্ষেত্র তৈরির দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে বলে আশংকা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তথ্যসূত্র
——
১। মাদ্রাসায় সন্ত্রাসের প্রশিক্ষণ হয়, ‘আইএসআই’ এজেন্টরা মাদ্রাসারই ছাত্র তাই মাদ্রাসা বন্ধ করে দেবো : রঘুরাজ সিং
https://tinyurl.com/5kknvw5a
২। Madrasas are hideouts of terrorists: UP Minister
https://tinyurl.com/y6xycfcu