কাবুলে মার্কিন ড্রোন হামলা ও শাইখ আইমান আল-জাওয়াহিরি বিষয়ে তালিবানের সর্বশেষ বক্তব্য

ত্বহা আলী আদনান

2
4223

সম্প্রতি ক্রুসেডার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছিল যে, গত ১লা আগষ্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে একটি আবাসিক ভবনে ড্রোন হামলা চালিয়েছে তারা। তার দাবি অনুযায়ী, ড্রোন থেকে মিসাইল ছুড়ে এই হামলাটি চালানো হয়েছে, যাতে শহীদ হয়েছেন বৈশ্বিক ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী জামা’আতুল কায়েদার সর্বোচ্চ আমীর শাইখ আয়মান আল-জাওয়াহিরি (হাফি.)।

দাবি করা হয় যে, যখন তিনি ভবনের বারান্দায় অবস্থান করছেন, ঠিক তখনই ড্রোন হামলাটি চালানো হয় তাঁর উপর। আর ক্রুসেডার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই দাবির পরই শুরু নানারকম জল্পনা কল্পনা। এসব প্রচারিত হতে থাকে আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও সামাজিক গণমাধ্যমগুলোতে শাইখের শাহাদাত বা বেঁচে থাকা নিয়ে নানরকম তথ্য।

সর্বশেষ আজ ১০ আগষ্ট আফগানিস্তানের জাতীয় টেলিভিশন আরটিএ-র এক সাক্ষাৎকারে এবিষয়ে কথা বলেন ইমারাতে ইসলামিয়ার মুখপাত্র মুহতারাম জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ।

সেখানে টিভি সাংবাদিক জাবিহুল্লাহ্ মুজাহিদকে জিজ্ঞাসা করেন যে, কাবুলে মার্কিন ড্রোন হামলায় আয়মান আল-জাওয়াহিরি কি সত্যিই নিহত হয়েছেন?

উত্তরে জাবিহুল্লাহ্ মুজাহিদ (হাফি.) বলেন, “এটি এখনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের একটি দবি হিসাবেই রয়ে গেছে। তাছাড়া মার্কিন ড্রোন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা যেখানে আঘাত করা হয়েছে, সেখানে মানবদেহের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। আমরা এটাও স্পষ্ট করেছি যে, কাবুলে আয়মান আল-জাওয়াহিরির উপস্থিত ছিলেন কিনা সে সম্পর্কেও ইমারাতে ইসলামিয়া অবগত নয়।”

“আর তিনি এখানে ছিলেন বা এই হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন তাও আমাদের জানা নেই। তাই আমরা এখনো এবিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছি না। তবে বিষয়টি ইমারাতে ইসলামিয়ার তদন্তাধীন রয়েছে। এ জন্য একটি কমিশন নিয়োগ করা হয়েছে, যারা বিষয়টি তদন্ত করে পরিস্থিতি সরকারের সামনে তুলে ধরবে। উপযুক্ত হলে তা জনসাধারণের জন্য মিডিয়াতেও প্রকাশ করা হবে।”

“তবে এটা স্পষ্ট যে, এই হামলার মাধ্যমে আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে আমেরিকা। আমরা এর নিন্দা করেছি এবং আবারও এর তীব্র নিন্দা জানাই। কেননা এটি আফগানিস্তান ভূখণ্ডের স্বাধীনতা এবং দোহা চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। দোহা চুক্তিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, যদি তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এমন কিছু জানতে পারে, যা তাদের শান্তির জন্য হুমকি বা চুক্তির বিরুদ্ধে যায়, তাহলে এবিষয়ে আমেরিকা আফগানিস্তান সরকারের সাথে যোগাযোগ করবে এবং সরকার এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে। তবে আমেরিকানরা নিজেরাই এখানে সরাসরি কাজ করতে পারবে না।”

“কিন্তু তারা এবিষয়ে আমাদেরকে কিছুই জানায়নি এবং নিজেরাই পদক্ষেপ নিয়েছে। আর সেটা তারা স্বীকারও করেছে। যার মাধ্যমে আমেরিকা সুস্পষ্টভাবে আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে। তাই আমরা আবারও জানিয়ে দিচ্ছি যে, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে এর পরিণতির জন্য আমেরিকা নিজেই দায়ী থাকবে।”

2 মন্তব্যসমূহ

  1. এখানে শায়েখের জীবিত থাকার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে “এটি এখনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের একটি দবি হিসাবেই রয়ে গেছে। তাছাড়া মার্কিন ড্রোন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা যেখানে আঘাত করা হয়েছে, সেখানে মানবদেহের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। আমরা এটাও স্পষ্ট করেছি যে, কাবুলে আয়মান আল-জাওয়াহিরির উপস্থিত ছিলেন কিনা সে সম্পর্কেও ইমারাতে ইসলামিয়া অবগত নয়।” (জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ হাফিঃ)

Leave a Reply to Khan Jahan Ali প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুসলিমদের উপর বেড়েছে উগ্র হিন্দুদের বর্বর হামলা: দুজনকে ছুরিকাঘাত, একজনকে পিটিয়ে জখম
পরবর্তী নিবন্ধশাবাব কর্তৃক পাবলিক স্কয়ারে আরও ৬ জাওয়াসিসের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর