সাম্প্রতিক দিনগুলোতে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির মধ্যে লড়াই পূর্বের যেকোনো সময়ের চাইতে তীব্র আকার ধারণ করেছে। যেখানে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা জনগণের সমর্থন নিয়ে গাদ্দার সরকারি বাহিনী ও সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলির মোকাবিলা করছেন। এবং অনেক এলাকা থেকে শত্রুদের পিছু হটতে বাধ্য করেছেন।
সেই সূত্র ধরেই ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিনের মুজাহিদরা মুসলমানদের জান-মাল রক্ষার জন্য একটি সামরিক অভিযান শুরু করেছেন। সেই অসহায় মুসলমানদের পক্ষে তারা তাদের সাম্প্রতিক লড়াই শুরু করেছেন, যাদের রক্ত ঝরানো হচ্ছে এবং তাদের মাল আত্মসাৎ করে চলছে গাদ্দার মালিয়ান সামরিক বাহিনী ও খারিজিদ গোষ্ঠী আইএস সন্ত্রাসীরা।
এই লক্ষ্যে মুজাহিদগণ অক্টোবরের শেষ দিকে মেনাকা রাজ্যের আমাকরা এবং ইনিকার অঞ্চলে প্রথম অভিযান চালানো শুরু করেন। এই দু’টি এলাকায় খারেজি আইএস সন্ত্রাসীদের অবস্থানগুলিতে কয়েক ঘন্টা যাবৎ হামলা চালান মুজাহিদগণ, এবং সন্ত্রাসীদের এলাকাগুলি ছেড়ে যেতে বাধ্য করেন। তবে পালানোর আগ পর্যন্ত মুজাহিদদের হামলায় অন্তত ১০ আইএস খারিজি নিহত হয়।
এই অভিযানের পর মুজাহিদগণ রাজ্যটির আইগাজরাগান ও তামালেট শহরে অভিযান চালাতে শুরু করেন, যা সন্ত্রাসী আইএস’এর শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। ২৮ অক্টোবর শহর দু’টিতে প্রথম হামলা চালানো শুরু হয়। মুজাহিদদের প্রথমদিনের এই হামলায় সন্ত্রাসী আইএস গোষ্ঠীর অন্তত ৬০ সদস্য নিহত হয়। এরফলে আইগাজরাগান ছেড়ে পালায় আইএস সদস্যরা।
তবে তখনও তামালেট শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার চেষ্টা করে সন্ত্রাসী আইএস। ফলে মুজাহিদগণ পরের দিন আরও শক্তি নিয়ে শহরটিতে ভারী হামলা চালান। এসময়ের মধ্যে অন্য এলাকার আইএস সন্ত্রাসীরাও শহরটিতে জড়ো হলে, ২৯ অক্টোবর সেখানে ভারী লড়াই শুরু হয়। ঐ লড়াইয়ে ৩০ জন মুজাহিদ শাহাদাত বরণ করেন। বিপরীতে মুজাহিদগণ ডজনকে ডজন আইএস সদস্যকে হত্যা করেন। অবশেষে আইএস সন্ত্রাসীরা এই শহরটি ছেড়ে প্রতিবেশি দেশ নাইজারের দিকে পালিয়ে যায়।
এই শহর ও এলাকাগুলো ছাড়াও গত কয়েকদিনের লড়াইয়ে মুজাহিদগণ সন্ত্রাসী আইএসদের হাত থেকে আরও অর্ধডজন এলাকা মুক্ত করেছেন। যেসব এলাকায় এই সন্ত্রাসীরা মাসের পর মাস ধরে নিরপরাধ লোকদের রক্ত, সম্পদ ও তাদের সম্মানকে বিনষ্ট করা নিজেদের জন্য হালাল করে নিয়েছিলো।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এখনো মেনাকা ও গাও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী আইএসদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মুজাহিদগণ।
একই সাথে গাদ্দার মালিয়ান সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধেও অভিযান চলমান রেখেছেন মুজাহিদগণ। গত ২৮ অক্টোবর মুজাহিদরা বোগোলো গ্রামে দেশটির গাদ্দার সেনাবাহিনীর উপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে অনেক সৈন্যকে মুজাহিদগণ হত্যা এবং আহত করেন, বাকিরা এলাকাটি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
অতর্কিত এই হামলার কারণ সম্পর্কে জানা যায় যে, গাদ্দার বাহিনী স্থানীয়দের প্রচুর সংখ্যক গবাদি পশু ও সম্পত্তি চুরে করে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা এবিষয়ে ‘জেএনআইএম’ প্রশাসনের কাছে বিচার দায়ের করে। ফলে মুজাহিদগণ গাদ্দার সামরিক বাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে জনগণের সম্পদ ও গবাদি পশুগুলি উদ্ধার করেন এবং তা মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেন।
অপরদিকে ৩১ অক্টোবর সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি লক্ষ্য করে বিস্ফোরক ডিভাইসের বিস্ফোরণ ঘটান মুজাহিদগণ। ফলে গাড়িটি ধ্বংস হয়ে যায় এবং তাতে থাকা সমস্ত সৈন্য নিহত হয়। সফল এই হামলাটি মালির তুকতাল এলাকায় চালানো হয়।