দিল্লী গণহত্যা মামলায় মুসলিমকে খালাস দিতে বাধ্য হয়েছে হিন্দুত্ববাদী আদালত

মাহমুদ উল্লাহ

0
553
দিল্লী দাঙ্গায় একটি পুড়ে যাওয়া বাড়ি। ফাইল ফটো।

২০২০ সালের দিল্লী দাঙ্গার সময় উগ্র হিন্দুরা স্থানীয় মুসলিমদের ওপর পরিকল্পিত হামলা, হত্যা, ও লুটপাট চালিয়েছিল। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় কট্টর হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী সংগঠন আরএসএস এবং উগ্র হিন্দুরা খুন করেছিল কমপক্ষে ৩৫ জন মুসলিমকে। অথচ, হিন্দুত্ববাদী পুলিশ উল্টো মুসলিমদের উপর দোষ চাপিয়ে দেয়। মিথ্যে মামলা দিয়ে অনেক মুসলিমকে কারাগারে আটক করে এই মুসলিম বিদ্বেষী বাহিনী।

মিথ্যে মামলার আসামীদের একজন হচ্ছেন নূর মুহাম্মাদ। দীর্ঘ দু’বছর জেলে থাকার পর প্রমাণ হয় যে, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের “প্রমাণ নির্ভরযোগ্য নয়।” ফলে আদালত দিল্লির গণহত্যা মামলা থেকে নূর মুহাম্মাদকে খালাস দিতে বাধ্য হয়েছে৷

দিল্লী দাংগার পর এক উগ্র হিন্দু সীমা অরোরা একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল যে, তার শোরুমে উগ্র জনতা আগুন দিয়েছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে খজুরি খাস থানায় নথিভুক্ত করা একটি মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছিল এই মুসলিম যুবককে।

তদন্তের সময় পুলিশ কোন যাচাই বাছাই না করেই শুধুমাত্র মুসলিম হবার কারণে নূরকে “জনতার অংশ” হিসাবে উল্লেখ করে। পরবর্তিতে ঐ মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে।

এদিকে, আদালত বলেছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রকাশ্য প্রমাণ নেই। তাছাড়া, অভিযুক্তদের শনাক্ত করার ক্ষেত্রে সাক্ষীদের ধারাবাহিক কোন সাক্ষ্যও নেই।

এ কারণে, অতিরিক্ত দায়রা বিচারক পুলস্ত্য প্রমাচালা নুর মুহাম্মাদকে সমস্ত অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছে। ভারতের আইনি ওয়েবসাইটও তা প্রকাশিত হয়েছে।

এমনিভাবে, গত ২০ অক্টোবর, দিল্লি গণহত্যার একটি মামলায়, আরেক মুসলিম তাহির সহ ১০ জনকে খালাস দিয়েছে একটি আদালত। সেই রায়ে আদালত বলেছে, যাচাই না করেই তাদেরকে গুরুতর অপরাধের ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছিল।

মুসলিমদেরকে ভারত থেকে সম্পূর্ণ ভাবে বিতাড়িত করতে এমন কোন পদক্ষেপ নেই যা গ্রহণ করেনি গুজরাটের কশাই নরেন্দ্র মোদির সরকার। রাম রাজ্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মুসলিমদের বিরুদ্ধে মামলা, হামলা, নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যা, ধর্ষণ, মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির নির্মাণ আজ নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এসব খবর শুনতে শুনতে মুসলিমদেরও গা সয়ে গেছে। অথচ সারা বিশ্বের মুসলিমদের উচিৎ নির্যাতিত মুসলিমদের পক্ষে নিজ নিজ জায়গা থেকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আওয়াজ তোলা, প্রতিবাদ করা, এবং প্রতিরোধ সৃষ্টি করা।

তথ্যসূত্র:

1.“Evidence not reliable”: Court acquits Muslim youth in Delhi pogrom case – https://maktoobmedia.com/2022/11/03/evidence-not-reliable-court-acquits-muslim-youth-in-delhi-pogrom-case/

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅভিশপ্ত ইহুদিদের হাতে মুসলিম শিশু হত্যার শেষ কোথায়
পরবর্তী নিবন্ধদখলদার চীনা প্রশাসন উইঘুরদের মৃতদেহ কী করছে জানে না কেউ