আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্ত অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই উভয় দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে স্পিন-বোলদাক সীমান্তে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে সবচাইতে বেশি।
গতকাল ১৩ নভেম্বর রবিবার দুপুর ১টার দিকেও উভয় দেশের সীমান্তরক্ষীদের মাঝে এধরণের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে আফগানিস্তানের দিক থেকে একজন বন্দুকধারী পাকিস্তান গাদ্দার বাহিনীর এক অফিসারকে গুলি করে হত্যা করেন এবং অন্য এক সদস্যকে আহত করেন। হতাহতরা স্পিন-বোলদাক সীমান্তের বাব-দোস্তিতে গাদ্দার পাকিস্তান প্রশাসনের হয়ে কাজ করছিল।
Today's battle between Pakistani soldiers and the forces of the Islamic Emirate of Afghanistan took place on the Durand Line (Spin Boldak) and in this recorded video, a soldier is seen chasing a Pakistani officer and killing him. pic.twitter.com/Xk3KVolvG7
— Najib Farhodi (@NajibFarhodi1) November 13, 2022
[স্পিন-বোলদাক সীমান্তে গাদ্দার পাকি-অফিসারকে গুলি করে হত্যার সিসিটিভি ফুটেজ]
এই হামলার পর পাকিস্তান সীমান্তরক্ষীরা আফগানিস্তানের দিকে গুলি ছুড়লে সীমান্ত উত্তেজনা বেড়ে যায়, শুরু হয় উভয় দিক থেকে গোলাগুলি। এসময় ইমারাতে ইসলামিয়ার সীমান্তরক্ষীদের পাশাপাশি দেশটির আল-ফারুক বিগ্রেডের সদস্যরাও যুক্ত হন। ফলে লড়াই আরও তীব্র আকার ধারণ করে। এবং এতে নতুন করে আরও ১৫ পাকিস্তান সীমান্তরক্ষী নিহত এবং আরও ৮ সদস্য আহত হয়। বিপরীতে আফগানিস্তানের দিকে ৩ জন আহত হন।
এই ঘটনার পর পাকিস্তান তার পুরনো কৌশল হিসাবে স্পিন-বোলদাক সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। সেই সাথে নাপাক এই দেশটির এক সীমান্ত উপদেষ্টা “মীর জিয়াউল্লাহ লংগো” ঘোষণা করে যে, আফগানিস্তানের দিক থেকে ছুঁড়া গুলিবর্ষণে আমাদের ১ কর্মকর্তা নিহত এবং অন্য ২ সদস্য আহত হয়েছে। তাই আফগান কর্তৃপক্ষ যতক্ষণ না হামলাকারীকে আমাদের হাতে তুলে দিচ্ছে, ততক্ষণ স্পিন-বোলদাক সীমান্ত বন্ধ থাকবে।
হামলার কারণ সম্পর্কে জানা যায় যে, ইমারাতে ইসলামিয়ার অধীনে বসবাসকারী একজন নারী সীমান্ত অতিক্রম করার কালে, তাকে চেকিং এর নামে হেনস্থা এবং তার শরীরে স্পর্শ করে পাকি-মুনাফিকরা। সেই সাথে সীমান্ত অতিক্রমের বৈধ কাগজপত্র দেখানো সত্ত্বেও তাকে সীমান্ত অতিক্রম করতে বাধা দেয় পাকিস্তানের গাদ্দার কর্তৃপক্ষ। পরে ঐ নারী এই ঘটনা ও কাগজপত্র তালিবান সীমান্তরক্ষীদের দেখান। আর তখনই এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।
এই ঘটনার পর শুধু স্পিন-বোলদাক সীমান্তেই সংঘর্ষ স্থির থাকেনি, বরং আরও কয়েকটি সীমান্তে সংঘর্ষ হয়। সেই সাথে বেশ কিছু স্থান থেকে তালিবান সীমান্তরক্ষীরা পাকিস্তানের দেওয়া কাঁটাতারের বেড়া উঠিয়ে ফেলেন। এসময় ইমারাতে ইসলামিয়ার সীমান্তরক্ষীদের বলতে শুনা যায় যে, যারাই আমাদের ভূমির দিকে চোখ দিবে, আমরা তাদের চোখ উপড়ে ফেলবো। আমরা দূর্বল নই, বরং আমরা আরও নিজেদের লক্ষ্যে আরও অটুট হয়েছে। আমরা ৫২টি দেশকে ভেঙেছি, আর আপনি তো ছোট!
উল্লেখ্য যে, পাক-আফগান সীমান্ত ২,৬৭০ কিলোমিটার নিয়ে গঠিত। যেখানে দুই দেশের মধ্যে ১৮টি সীমান্ত ক্রসিং রয়েছে। তবে এসবের মধ্যে স্পিন-বোলদাক বা চামন-সীমান্ত গেটটি দুই দেশের মধ্যে অন্যতম ও ব্যস্ততম একটি ক্রসিং পয়েন্ট। গত ১৩ নভেম্বরের সংঘর্ষের পর স্পিন-বোলদাক সীমান্ত বন্ধ হওয়ার পর আজ ১৪ নভেম্বর দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সমস্যা সমাধানে আলোচনা শুরু হয়েছে।
অতীতেও সীমান্ত সংঘর্ষ নিয়ে একাধিকবার উভয় দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের গাদ্দার সীমান্তরক্ষীরা প্রতিবারই তা লঙ্ঘন করে আফগান মুসলিমদের সাথে দূর্ব্যবহার করেছে। ফলে আফগান সীমান্তরক্ষীদের হাতে এবারের মতো আগেও ধোলাই খেয়েছে গাদ্দার পাকি-সেনারা। আর প্রতিবারই তালিবানদের হাতে ধোলাই খেয়ে সীমান্ত বন্ধ করেছে গাদ্দার এই দেশটি।