আসামে দুটি মসজিদসহ মুসলিম বসতিতে বুলডোজার হামলা, ২৫০০ পরিবার গৃহহীন

উসামা মাহমুদ

1
601

পূর্বে কয়েক দফায় বুলডোজার চালানোর পর এবার আসামের সোনিতপুর জেলায় মুসলিম বসতিতে বুলডোজার চালিয়েছে উগ্র হিন্দুত্ববাদী কর্তৃপক্ষ। দুটি মসজিদসহ মুসলিমদের ২৫০০ বাড়িঘরে বুলডোজার চালানো হয়েছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারী, মঙ্গলবার এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।

উচ্ছেদ অভিযানের ফলে ২৫০০ বাঙালি মুসলিম পরিবার গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এই এলাকায় বসবাসকারী অধিকাংশ ব্যক্তিই বাংলাভাষী মুসলিম এবং তারা মূলত চাষাবাদে নিয়োজিত থাকেন।

এক মুসলিম বাসিন্দা বলেছেন, আমরা গত ৩৫ বছর ধরে মসজিদে নামাজ পড়ছি, সে দুটি মসজিদও ভেঙে দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী কর্তৃপক্ষ।

সোনিতপুরের জেলা প্রশাসক দেব কুমার মিশ্র টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে জানিয়েছে, অভিযানটি তিন দিন ধরে চলবে। কয়েক দশক ধরে হাজার হাজার লোক ‘অবৈধভাবে’ এলাকা দখল করে রেখেছে বলে সে দাবি করে। উগ্র মিশ্র আরো জানিয়েছে, তারা লাঠিমারী, গণেশ তপু, বাঘে তপু, গুলিরপাড় এবং শিয়ালিতে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে।

এদিকে, ভেঙ্গে ফেলা বাড়ি থেকে জিনিসপত্র সংগ্রহ করার সময়, ফিরোজা বেগম পিটিআই নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন যে প্রশাসন ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করার কথা বলেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে “কোনও তথ্য ছাড়াই ১৪ তারিখ থেকেই উচ্ছেদ শুরু করেছে।”

উগ্র হিন্দুত্ববাদী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ২০২১ সালের মে মাসে ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন মুসলিম এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। ২০০৬ সালের আইন অনুযায়ী মুসলিমরা জমির অধিকারী হলেও কোন কিছুর তোয়াক্কা করছে না হিন্দুত্ববাদী কর্তৃপক্ষ। এছাড়া উত্তরপ্রদেশ, আসামসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে মুসলিম বসতিতে উগ্র হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন বুলডোজার চালিয়ে আসছে।

তবে আসামকে বিশেষভাবে টার্গেট করা হচ্ছে, কেননা এখানকার অধিকাংশ মুসলিম বাংলা ভাষাভাষী। তারা ইংরেজ আমলে আসামে বসতি গড়েন, তার আগেও অনেকে সেখানে গিয়েছেন। এখন হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন ও নেতারা প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়ে তাদেরকে বাংলাদেশি ও বহিরাগত সাব্যস্ত করছে; সেখানে চীনের আদলে তৈরি করছে বড় বড় বন্দীশিবির।

মুসলিমদেরকে বাংলাদেশে তাড়িয়ে দেওয়ার প্রকাশ্য ঘোষণাও দিচ্ছে তারা, আর এ ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে তারা বদ্ধপরিকর। সেক্ষেত্রে এতো বিশাল সংখ্যক একটি জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হলে এখানে ব্যাপক অরাজকতা সৃষ্টি হবে, সহজেই তখন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সাহায্য করার নামে সেনা পাঠিয়ে দখল করে নেওয়া যাবে বাংলাদেশ। আসাম ও বাংলাদেশ নিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যাপারে সতর্ক করে আসছেন ইসলামি বিশ্লেষকগণ।



তথ্যসূত্র:
——–
1. Assam: 2,500 Bengali Muslim families go homeless as govt launches demolition drive, two mosques among bulldozed
https://tinyurl.com/48cvdu82

১টি মন্তব্য

  1. আছে কে কি কেউ যারা আমাদের হিন্দের ভাইদের সাথে দাঁড়াবে?
    কোথায় আজ মানবাধিকার সংস্থা গুলো?
    কোথায় আজ মানবাধিকারের কর্মিরা?

    => বাস্তবে এদের মানবাদিকার একটা মিথ্যা নাটক বৈ কিছুই নয়

Leave a Reply to ফাহিম-হাসান প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধইউপিতে ভিএইচপি এবং বজরং দল সন্ত্রাসীদের মসজিদ ভাঙচুর
পরবর্তী নিবন্ধশাবাবের চতুর্মুখি কৌশলি ফাঁদে সোমালি বাহিনী: ২৪ ঘন্টায় ৫টি শহর বিজয়