সম্প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আফগান নারীদের ইস্যুতে তালিবান সরকারের গৃহীত নীতিমালার ব্যপারে নিন্দা জানিয়েছে। কথিত নারী অধিকার ফিরিয়ে দিতে তালেবান নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘে এই নিন্দা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে মুসলিম প্রধান দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং পূর্ব এশিয়ার দেশ জাপান।
উল্লেখ্য যে, আফগানিস্তানে জাতিসংঘের অধীনে কাজ করে আসছিল বেশ কিছু আফগান নারী। ইমারাতে ইসলামিয়া কর্তৃক শরয়ী আইনকে অমান্য করে চলছিল তাদের কার্যক্রম। ফলস্বরুপ, ইমারতে ইসলামিয়া তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আর এ নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ তাদের সকল মানবিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে আফগানিস্তানে। কিন্তু ইমারতে ইসলামিয়া শরিয়াহর নীতিতে কোনো ছাড় দিতে রাজি হয়নি। ফলে জাতিসংঘ পুনরায় দেশটিতে তাদের কাজ শুরু করে এবং নতুন কৌশলে ইমারতে ইসলামিয়ার বিরোধীতায় সরব হয়ে উঠে।
নারী অধিকার নিয়ে আরব আমিরাত ও জাপানের নিন্দা প্রস্তাবে বলা হয়, আফগানে নারী অধিকার ইস্যুতে তালিবানের নিষেধাজ্ঞা জাতিসংঘের ইতিহাসে নজিরবিহীন। তাদের দাবি, এটি মানবাধিকার এবং মানবিক নীতিকে ক্ষুণ্ন করেছে। জাতিসংঘে এই নিন্দা প্রস্তাবটির পক্ষে ৯০টিরও বেশি দেশ সমর্থন দিয়েছে।
ফলে জাতিসংঘ ইমারতে ইসলামিয়াকে এক রকম হুমকি দিয়ে জানিয়েছে, ‘আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশ, মুসলিম বিশ্ব এবং পৃথিবীর সব প্রান্তের মানুষ আফগান নারীদের পক্ষে আছে। আফগানিস্তানের নারীদের নাম সমাজ থেকে মুছে ফেলার ঘটনায় বিশ্ব চুপ করে বসে থাকবে না।’
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের দূতও বলেছে, ‘আমরা তালেবানের নারী ও মেয়েদের নিপীড়নের পক্ষে দাঁড়াবো না। এই সিদ্ধান্তগুলো অমার্জনীয়। পৃথিবীর আর কোথাও এমন দেখা যায় না। তালেবানের এই আদেশ আফগানিস্তানের অপূরণীয় ক্ষতি করছে।’
অর্থাৎ আরব-আমিরাত, জাপান ও তাদের প্রস্তাব সমর্থনকারী দেশসমূহ বলতে চায় যে, তালিবান মুজাহিদরা নারীদের কথিত স্বাধীনতা হরণ করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। অর্থাৎ আফগান নারীদেরকে পর্দার বিধানের আওতায় এনে অশ্লীলতা, পাপাচার আর যৌন হয়রানির দ্বার বন্ধ করে দেয়াটা জাতিসংঘের দৃষ্টিতে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন।
অথচ, আফগানিস্তানে দীর্ঘ দিন ধরে আমেরিকা, ব্রিটেন ও ন্যাটো জোট লক্ষ লক্ষ নিরীহ বেসামরিক মুসলিমকে হত্যা করেছে, আরও লক্ষ লক্ষ মানুষকে উদ্বাস্তু করেছে। শুধু শিশুদের হিসেবই যদি ধরা হয়, দেখা যায় দৈনিক গড়ে ৫ জন শিশু হতাহত হয়েছে। আর এমন আগ্রসন চলেছে দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর। এর আগে রাশিয়া ও বৃটেনও আগ্রাসন চালিয়েছে কয়েক দশক ধরে।
শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা ইউনিসেফ এর তথ্য অনুযায়ী, ২০০৫-২০২১ পর্যন্ত ২৮,৫০০ নিষ্পাপ আফগান শিশু প্রাণ হারিয়েছে আমেরিকার হাতে। ইউনিসেফ ২০০১-২০০৪ সাল পর্যন্ত হতাহত শিশুর সংখ্যা প্রকাশ করেনি। অথচ আমেরিকার আগ্রাসন প্রথম দিকেই সবচেয়ে বেশি তীব্র ছিল। জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠনের করা রিপোর্টেই যদি ২৮,৫০০ শিশুর কথা উল্লেখ্য থাকে তাহলে বাস্তবতা কত ভয়াবহ তা সবার কাছেই স্পষ্ট।
ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কস্ট অব ওয়ার প্রজেক্ট’ অনুসারে ২০২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ন্যাটো জোটের হামলায় আফগানিস্তানে কমপক্ষে ১,৭১,০০০ জন নিহত হয়েছেন। শরনার্থী হয়েছেন প্রায় ৫৫ লক্ষ মানুষ। এছাড়াও যুদ্ধের অন্যান্য পরোক্ষ কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্ভবত অনেক বেশি।
আফগানিস্তানে আমেরিকার নেতৃত্বে ন্যাটো জোটের এমন বর্বরতা সত্ত্বেও কোন মানবাধিকার সংস্থা আমেরিকা বা ন্যাটোর বিরুদ্ধে কোনো নিন্দা প্রস্তাব পাশ করেনি। এমনকি কোনো মুসলিম দেশও মার্কিন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে টু শব্দটি করেনি। অথচ তারাই আজ কথিত নারী অধিকার ইস্যুতে জাতিসংঘে ইমারতে ইসলামিয়ার শরয়ী বিধানের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব তুলেছে।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, তালিবান প্রশাসন ইসলামি শরিয়াহ্ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারী ও শিশুসহ সকল আফগান নাগরিকদের জীবন, সম্পদ আর সম্মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন।
তথ্যসূত্র:
——-
1. Taliban must ‘swiftly reverse’ crackdown on women’s rights: UN
– https://tinyurl.com/mwpp2wyp
3. Over 28,000 children killed in Afghanistan since 2005 – UNICEF
– https://tinyurl.com/28hsps93
4. Costs of War
– https://tinyurl.com/4yrpsw8k
5. Civilian casualties in the war in Afghanistan (2001–2021)
– https://tinyurl.com/2xaxe86
আরবের এই নিকৃষ্ট শাসকরা মূলত পশ্চিমা জালেমদের খালাতো ভাই, এদের কাছে, চোরদের কদর আছে, সততার নাই কোনো দাম,
এরা হলো ঐ লেজ কাটা শিয়ালের নেয়, যে অন্যের লেজ কাটার পায়তারা করে, এরা চায় ইমারাতে ইসলামিয়্যা যেন তাদের মত মেরুদণ্ডহীন ইসলাম পালন করে