ইরানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশের ৩টি শহরের ৯টি সামরিক অবস্থানে একযোগে হামলার ঘটনায় দুই শতাধিক সৈন্য নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। ইরানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে পরিচালিত এই যুগপৎ অভিযানের দায় স্বীকার করেছে আঞ্চলিক ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী জাইশুল আদল।
প্রতিরোধ বাহিনী জাইশুল আদলের বিবৃতি অনুযায়ী, গত ২৪ রমাদান শেষ রাতে বেলুচিস্তান প্রদেশের চাবাহার, রাসেক এবং সেরবাজ শহরে ইরানি সেনাঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে একযোগে অভিযান পরিচালনা করছেন মুজাহিদগণ।
অভিযানে অংশগ্রহণ করেছেন সশস্ত্র ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী জাইশুল আদলের ৪টি ইউনিটের ১৬৮ জন মুজাহিদ। এই মুজাহিদদের মধ্যে ইস্তেশহাদী ইউনিটের ২৯ জন সদস্যও যোগ দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ৪ জন মুজাহিদ সামরিক বাহিনীর গুরত্বপূর্ণ ৪টি অবস্থান লক্ষ্য করে প্রথমে শহিদী অপারেশন পরিচালনা করেন। তারা প্রথম ইস্তেশহাদী হামলাটি চালান চাবাহার শহরে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের কমান্ড হেডকোয়ার্টারে। দ্বিতীয়টি চালানো হয় খোমেনি স্ট্রিটের অ্যাডমিরাল হেডকোয়ার্টার লক্ষ্য করে। তৃতীয় শহিদী অপারেশনটি চালানো হয় রাস্ক জেলা কর্পসের উপর। আর চতুর্থ ইস্তেশহাদী অপারেশনটি চালানো হয় ইরানের আইআরজিসি বাহিনীর দ্বিতীয় গুরত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে। গুরত্বপূর্ণ চারটি অবস্থানে সফল ইস্তেশহাদী অপারেশনের পর অন্যান্য ইনগিমাসী ও ইস্তেশহাদী ইউনিটের মুজাহিদগণ ঘটনাস্থলের কাছাকাছি অবস্থিত নৌ সদর দফতর, ১১তম পুলিশ স্টেশন, চাবাহার শহরের গোয়েন্দা সদর দফতর, সামরিক কারাগার এবং আইআরজিসির গুরত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিসহ ৯টি সামরিক অবস্থানে ঢুকে পড়েন, এবং এসব স্থানে ইরানি সামরিক বাহিনীর সাথে মুজাহিদগণ তীব্র লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন।
জাইশুল আদলের তথ্য অনুযায়ী, মুজাহিদগণ ৩টি শহরে ইরানি সামরিক বাহিনীর গুরত্বপূর্ণ অবস্থানগুলো লক্ষ্য করে ভোর রাত থেকে শুরু করে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত টানা ১২ ঘন্টা যাবৎ বীরত্বের সাথে লড়েছেন। দীর্ঘ এই যুদ্ধে মুজাহিদগণ সামরিক কারাগার, আইআরজিসির গুরত্বপূর্ণ ঘাঁটি, সদর দফতর সহ একাধিক সামরিক অবস্থানের নিয়ন্ত্রণ নেন এবং শহরের গুরত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে আধিপত্য বিস্তার করেন। ফলে হামলার শিকার শত্রু বাহিনীকে সাহায্য করতে আসা প্রতিটি ইরানি সামরিক ইউনিটকে মুজাহিদগণ রাস্তার মোড়ে মোড়ে অতর্কিত হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছেন।
জাইশুল আদলের অপারেশন কমান্ড রুমের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, অভিযানে শুধু ইরানি বিপ্লবী গার্ডেরই অন্তত ২০০ সৈন্য নিহত হয়েছে। এছাড়াও সংঘর্ষের সময় গোয়েন্দা সংস্থা ও আইআরজিসি সংস্থারও অসংখ্য সৈন্য হতাহত হয়েছে।
বিপরীতে এই অভিযানে অংশগ্রহণকারী জাইশুল আদলের ইস্তেশহাদী ইউনিটের ২৯ জন সদস্যের মধ্যে ১৮ জন মুজাহিদ বীরত্বের সাথে লড়াই করে শাহাদাত বরণ করেছেন। এছাড়া অন্য কোনো মুজাহিদ দীর্ঘ এই অভিযানে হতাহত হননি বলেও জানিয়েছে প্রতিরোধ বাহিনীটি।
আমি যদি শহীদ হতাম