পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে দেশটির টিলাবেরি রাজ্য। ফলে গত সপ্তাহেও এই রাজ্যেে অবস্থিত নাইজার সামরিক বাহিনী আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট প্রতিরোধ বাহিনী ‘জেএনআইএম’ এর বড় ধরনের একটি হামলার স্বাক্ষী হয়েছে।
আয-যাল্লাকা মিডিয়া থেকে প্রচারিত এক বিবৃতিতে প্রতিরোধ বাহিনী জেএনআইএম নিশ্চিত করেছেন যে, দলটির মুজাহিদগণ গত ২০ মে সন্ধ্যায়, বুরকিনা ফাসোর সীমান্ত থেকে ৭ কি.মি. ভিতরে নাইজারের টিলাবেরি রাজ্যে একটি বড়ধরণের সফল অভিযান পরিচালনা করছেন। আর সফল এই অভিযানের মাধ্যমে মুজাহিদগণ রাজ্যটির বনি অঞ্চলে অবস্থিত নাইজার সেনাবাহিনীর একটি গুরত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, মুজাহিদদের অতর্কিত এই অভিযানের সময় বনি সামরিক ঘাঁটিতে ৩০০ সেনা সদস্য অবস্থান করছিল। আর এই সেনাদের নির্মুল করতে ‘জেএনআইএম’ এর প্রায় ২৫০ জন যোদ্ধা কয়েক ডজন মোটরসাইকেল ও কয়েকটি সাঁজোয়া যানে করে অভিযানে অংশ নেন। মুজাহিদগণ প্রথমে ঘাঁটিটি বিভিন্ন দিক থেকে অবরোধ করেন এবং পরে হামলা চালানো শুরু করেন, যা টানা ৩ ঘন্টা ধরে চলতে থাকে।
ফলশ্রুতিতে ঘাঁটিতে অবস্থিত নাইজার সেনাবাহিনীর বড় সংখ্যক অংশই হতাহত হয়। অন্য সৈন্যরা জীবন নিয়ে পালানোর চেষ্টাকালে তাদের ২টি গাড়ি মুজাহিদদের বোমা বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে যায়। সেনাদের এই পলায়নের পর মুজাহিদগণ বনি সামরিক ঘাঁটি ও এর আশপাশের বিস্তৃত এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেন।
এদিকে সেনাবাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য গোপন করতে, গত ২৪মে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয় যে, মুজাহিদদের উক্ত অভিযানে মাত্র ৭ সেনা নিহত হয়েছে।
এই প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কিছুক্ষণ পরেই গণমাধ্যমে বনি ঘাঁটিতে ‘জেএনআইএম’ পরিচালিত অভিযানের একটি ভিডিও সম্প্রচার হয়। এতে দেখা যায়, অভিযানের ৪ দিন পরেও ঘাঁটির বিভিন্ন স্থানে নাইজার সেনাবাহিনীর পচনশীল ৪৩টি মৃত দেহ পড়ে আছে। সেই সাথে মুজাহিদদের হাতে ৬ সেনা বন্দী হয়ে আছে। আর ঘাঁটি থেকে মুজাহিদগণ গনিমত হিসাবে জব্দ করতে সক্ষম হয়েছেন ৮টি সামরিক যান, অসংখ্য অস্ত্র এবং প্রচুর গোলাবারুদ ভর্তি বাক্স।