মসজিদে বহিরাগতদের শুক্রবারের নামাজ পড়তে বাধা দিল উগ্রবাদী হিন্দুরা। গত ২৬ ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রের ডোম্বিভোলী এলাকার খনি গ্রামের মসজিদে এই ঘটনা ঘটে।
বাধাদানকারী উগ্রবাদী হিন্দুদের অভিযোগ, গ্রামে নারীদের যৌন হেনস্তা থেকে প্রতিরোধ করতেই তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের এই ধরণের উগ্রবাদী বৈষম্যমূলক কাজের জন্য তীব্র সমালোচনা করে এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অনেকে।
ডোম্বিভোলী গ্রামটি উলহাস নদীর তীরে অবস্থিত একটি উপশহর এবং মুম্বাই মেট্রোপলিটন এলাকার অংশ। এই এলাকাটি গাড়ী পার্কিং এর জন্য বিখ্যাত। এই এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের বসবাস। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে ডোম্বিভোলী এলাকার শতকরা ৬.৭৬% মানুষ মুসলিম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, মসজিদে যাওয়ার সবকটি রাস্তা বিশাল জনসমাগম করে বন্ধ করেছিল স্থানীয় উগ্রবাদী হিন্দুরা। পুলিশের উপস্থিতিতেই তারা অবৈধ ও অন্যায়ভাবে রাস্তাগুলো অবরোধ করেছিল।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর উদ্বেগ প্রকাশ করে ভুক্তভোগীরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, পুলিশ উগ্রবাদী হিন্দুদের কোনও বাধা প্রদান করেনি। তার মূর্তিমান পাথরের মতো দাড়িয়ে ছিল।
আয়োজক উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন শিব সেনার এক নেতা গণমাধ্যমকে বলে, এই এলাকায় বেশ কিছুদিন যাবত যৌন হয়রানির ঘটনা বেড়েই চলেছে তা রোধ করতেই আমাদের এই পদক্ষেপ।
সে বিশেষ করে মুসলিমদেরকে যৌন হেনস্তার জন্য দায়ী করে।
মুসলিমদের লক্ষ্য করে তার এই উগ্রবাদী বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন অনেকে। যৌন হেনস্তার জন্য শুধু মুসলিমদের দায়ী করে সাম্প্রদায়িক আগ্রাসনের অংশ।
বাহির থেকে আসা মুসলিমদের নামাজে আসতে বাধা দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছে স্থানীয় মুসলিমরা।
সবির আনসারী নামক এক মুসলিম গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ‘আমরা এখানে শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করতে এসেছিলাম। কোনও ব্যক্তির অপরাধের জন্য নিরপরাধ ব্যক্তিদের নামাজ পড়া থেকে বিরত রাখা উচিত নয়। এটি নিঃসন্দেহে নির্লজ্জ বৈষম্য ছাড়া কিছুই নয়।’
ইয়াসমিন শেখ নামক আরেকজন গণমাধ্যমকে জানান, ‘ মসজিদে যাওয়ার সময় কারো রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া শুধু অসাংবিধানিকই নয় বরং এটি আমাদের ধর্ম ও মর্যাদার উপর আঘাত করার শামিল।’
তথ্যসূত্র:
1 Maharashtra: Muslims Barred from Entering Village for Friday Prayers
– https://tinyurl.com/nummw2hf