সিরিয়া যুদ্ধে সক্রিয় আল-কায়েদা সশস্ত্র শাখা তানজিম হুররাস আদ-দ্বীন। আল-কায়েদা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে
আনুষ্ঠানিকভাবে সিরিয়ায় নিজেদের বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে দলটি। গত ২৮ জানুয়ারি, গ্রুপটির পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে সিরিয়ার সুন্নিদেরকে তাদের হাতে অস্ত্র ধরে রাখার এবং পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। আর আল-কায়েদা তার নীতিতে পরিবর্তন বা হ্রাস করা ছাড়াই সর্বত্র মুসলমানদের সমর্থন করে যাবে।
হুররাস আদ-দ্বীন থেকে প্রায় ২ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত ৩৫ তম এই বিবৃতিটি হামদ ও সানার মাধ্যমে শুরু করা হয়েছে। এরপর সিরিয়ার কসাই খ্যাত বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের জন্য সিরিয়ার জনগণকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। দোয়া বাক্যে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআ’লা যেন সিরিয়ার জনগণকে তাওহীদের পতাকাতলে একত্রিত করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, সিরিয়ার বিপ্লব মসজিদ থেকে শুরু হয়েছিল। মুসলমানরা এক অন্যায় ও নিষ্ঠুর শাসকের বিরুদ্ধে ইসলামী স্লোগান তুলেছিল। তবে, এই নিষ্ঠুর শাসকগোষ্ঠী তার সর্বশক্তি দিয়ে বিপ্লবের বিরোধিতা করেছিল এবং রাশিয়া ও ইরানের কাছে সাহায্য চেয়েছিল। তারা মুসলমানদেরকে হত্যা, ধর্ষণ এবং কারারুদ্ধ করেছিল। দামেস্কের পবিত্র ভূমিতে সুন্নি মুসলিমদেরকে হত্যা করে তাদের বাস্তুচ্যুত করা হয়েছিল।
এমন পরিস্থিতিতে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ওয়াজিব ছিল সিরিয়ার মুসলমানদের সাহায্য করা। আর সেই দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকেই বৈশ্বিক ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী আল-কায়েদার সন্তানরা সিরিয়ার নিপীড়িত জনগণকে সাহায্য করার জন্য এবং তাদের উপর থেকে অন্যায় দূর করার জন্য তাদের সমর্থনে সিরিয়ায় ছুটে যান। আর এই ধারাবাহিকতা ততক্ষণ পর্যন্ত অব্যাহত ছিলো যতক্ষণ না আল্লাহ্ তায়া’লা সুন্নি মুসলিম জনগণকে আধুনিক বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়ক তাগুতদের একজনের উপর মুসলমানদের বিজয় দান করেন। আর এইভাবে সিরিয়ায় সত্য ও মিথ্যার মধ্যে লড়াইয়ের একটি পর্যায় সম্পন্ন হয়েছে।
“আল কায়েদা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে হুররাস আদ-দ্বীনকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে”
বিবৃতিতে হুররাস আদ-দ্বীনের বিলুপ্তির ঘোষণা বিষয়ে বলা হয়: “দামেস্কের বর্তমান দৃশ্যপট এবং উন্নয়নের আলোকে এবং আল কায়েদা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের সাথে সাথে, আমরা আমাদের মুসলিম উম্মাহ এবং দামেস্কের সুন্নি জনগণের কাছে ঘোষণা করছি যে, সিরিয়ায় আল কায়েদা শাখা হুররাস আদ-দ্বীন বিলুপ্ত করা হয়েছে।
তবে এই পর্যায়ে, আমরা দামেস্কের আহলুস সুন্নাহ জনগণকে তাদের অস্ত্র সমর্পণ না করার এবং আসন্ন পর্যায়গুলির জন্য নিজেদের প্রস্তুত করার পরামর্শ দিচ্ছি, যা সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের অবহিত করেছেন। কারণ দামেস্কের ভূমি হলো মহান মালহামের ভূমি, তাগুত ও উপনিবেশবাদীদের সমাধিস্থল। এই ভূমি হচ্ছে ইহুদি এবং তাদের দোসরদের, যারা ইসলামের শত্রু, তাদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের জিহাদের একটি কেন্দ্র।”
বিবৃতিতে আরও যোগ করা হয়, “আমরা আমাদের উম্মাহকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, আমরা মুসলিম ভূখণ্ডের যেকোনো অংশে যেকোনো সাহায্যের আহ্বান এবং মুসলমানদের দুর্দশার আহ্বানে সাড়া দেওয়ার জন্য সর্বদা তাদের পাশে থাকব।
আমরা নিশ্চিত করছি যে, আল্লাহর অনুমতিক্রমে, আমরা শরিয়া নীতিগুলোতে কোনোরূপ পরিবর্তন বা হ্রাস করা ছাড়াই আমরা তা সংরক্ষণ করব। আর ইসলামি শরিয়াহ্ প্রতিষ্ঠা, নির্যাতিতদের সমর্থন এবং মুসলমানদের পবিত্র রক্ত রক্ষা করা আমাদের প্রধান নীতিগুলির মধ্যে একটি।”
বিবৃতিতে সিরিয়ার নেতাদের এবং নতুন প্রশাসনকে শরিয়া বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে:
“আমরা দামেস্কের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং আজ যারা নতুন প্রশাসনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের পরামর্শ দিচ্ছি, আপনারা ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করুন এবং আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন করুন, কারণ এটি করতে পারাই একটি স্পষ্ট বিজয়। আমরা তাদের আরও পরামর্শ দিচ্ছি: আহলে সুন্নাহদের হাতে অস্ত্র রাখুন। যাতে দামেস্কের জনগণ একটি সশস্ত্র জাতি হিসেবে থাকে, কোনো অত্যাচারী যেনো তাদের দাসত্ব করাতে না পারে এবং কোন আক্রমণকারী যেনো তাদের দিকে বক্র দৃষ্টি দিতে না পারে।”
হুররাস আদ-দ্বীন বিবৃতিটি এই শব্দ দিয়ে শেষ করেছিল যে, “আমরা আল কায়েদা সদস্যদের এবং সিরিয়ার সুন্নিদের তাদের প্রচেষ্টার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, যারা এই পথে অনেক বাধা এবং কষ্ট সহ্য করেছেন।”
তথ্যসূত্র:
١| حل تنظيم حراس الدين فرع تنظيم قاعدة الجهاد في سوريا
– https://tinyurl.com/3kuyjf75
আল্লাহু আকবার!! উম্মাহর কল্যাণকামীতা,শরীয়তের উপর অনুসরণ একেই বলে। ক্ষমতার লোভ থেকে মুক্ত এই জামাতকে আল্লাহ নিজ দয়ায় কবুল করে নিন ,আমিন।
আল্লাহু আকবার।