কয়েক মাস স্থবির সামরিক অপারেশনের পর গত সোমবার, কেন্দ্রীয় সোমালিয়ার হিরান রাজ্যে মোগাদিশু বাহিনী এবং প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাবের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ আবারও ছড়িয়ে পড়েছে।
মোগাদিশু সরকারের রাষ্ট্রপতি হাসান শেখের অন্যতম উপদেষ্টা আলী জেইতে এবং গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থা (এনআইএসএ) এর পরিচালক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সানবালোশ। কিছুদিন ধরেই পশ্চিমা সমর্থিত এই নেতারা হিরান রাজ্যে নতুন করে আশ-শাবাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সেনা ও মিলিশিয়াদের একত্রিত করছিল। তাদের এমন কর্মকাণ্ড শুরুর মাত্র কয়েকদিন পরেই আশ-শাবাব মুজাহিদিনরা পাল্টা জবাব হিসাবে অঞ্চলটিতে শত্রু বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করে আক্রমণ শুরু করেছেন।
গত সোমবার ২৭ জানুয়ারি ভোরে, হিরান রাজ্যের বুলুবার্দি শহরের উপকণ্ঠে শত্রু অবস্থান ভারী আঘাতের মাধ্যমে লড়াই শুরু করেন মুজাহিদিনরা। এলাকাটিতে মুজাহিদদের প্রথম দিনের অভিযানে ৩ অফিসার সহ মোগাদিশু বাহিনীর অন্তত ৪৪ সৈন্য হতাহত হয়।
মোগাদিশু বাহিনী এবং আশ-শাবাবের মধ্যে হিরান অঞ্চলের চলমান এই সংঘর্ষ মঙ্গলবার, দ্বিতীয় দিন আরও তীব্র আকার ধারণ করা। এদিন সকালে বুলুবার্দি জেলার উপকন্ঠে বিরা-ইয়াবাল এলাকায় শুরু হওয়া লড়াইয়ে আশ-শাবাব মুজাহিদিনরা বিভিন্ন ধরনের মাঝারি ও ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেন। ফলে মঙ্গলবার সকালে শহরের উপকণ্ঠে সংঘটিত যুদ্ধে শাবাবের হামলায় ৩ কমান্ডার সহ অন্তত ১০ সেনা নিহত হয়। এসময় আরও ৩ কমান্ডার সহ ২০ এরও অধিক সৈন্য আহত হয়েছে। অন্য সৈন্যরা আশ-শাবাবের হামলা থেকে বাঁচতে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায়। এসময় মুজাহিদিনরা শত্রু বাহিনীর একটি সামরিক গাড়ি এবং অন্যান্য বহু অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম গনিমত হিসাবে জব্দ করেন।
পশ্চিম হিরান অঞ্চল এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আশ-শাবাবের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বর্তমানে মোগাদিশু বাহিনী পূর্ব হিরান থেকে পশ্চিমে অগ্রসর হওয়ার চিন্তা করছে। কিন্তু এটি এমন এক অঞ্চল যেখানে বিভিন্ন স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর উপস্থিতি রয়েছে, যারা দীর্ঘদিন ধরে আশ-শাবাবের সাথে চুক্তিবদ্ধ, সেই সাথে মোগাদিশু সরকারের সাথে আছে দীর্ঘস্থায়ী প্রতিদ্বন্দ্বিতা। অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে, মোগাদিশু সরকারের এই ধরনের অভিযান স্থানীয় গোষ্ঠী এবং সম্প্রদায়গুলিকে আশ-শাবাবের সাথে ঐক্যবদ্ধ করবে, যা শাবাবের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।
এছাড়াও, পূর্ব হিরানের “মাউইসলি” সরকারি মিলিশিয়া বাহিনীর প্রধান সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, হিরান রাজ্যের পশ্চিম অংশের আশ-শাবাব নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বসবাসকারী জনগণকে শাবাব সদস্য হিসাবে বিবেচনা করা উচিত। এই বিতর্কিত বক্তব্য দেশটির বিশ্লেষক এবং সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। তাদের মতে, এধারণের কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য অসাবধানতাবশত আশ-শাবাবের জন্য স্থানীয় সমর্থনকে আরও মজবুত করবে, যা জনগণকে আশ-শাবাবের সাথে সম্পূর্ণভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে হাতে অস্ত্র তুলে নিতে বাধ্য করতে পারে।
তথ্যসূত্র:
– https://tinyurl.com/mxf8jdx3
