
মাদক পাচারের ট্রানজিট হিসেবে সীমান্তের গ্রামগুলোকে ব্যবহার করছে চোরাকারবারিরা। প্রতিবেশী ভারত থেকে গাঁজা, ফেনসিডিল ও ইয়াবার চালান সড়ক, রেল ও বিমানপথে ছড়িয়ে পড়ছে গোটা দেশে। মাঝেমধ্যে আটক হচ্ছে এসব মাদকের বাহকরা। তবে ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে মাদকের গডফাদাররা। সীমান্ত এলাকায় ঘাঁটি গেড়ে তারা মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে।
উত্তরের সীমান্ত জেলা লালমনিরহাটের পাড়া-মহল্লায় হাত বাড়ালেই মিলছে সব ধরনের মাদকদ্রব্য। ইয়াবায় ডুবে থাকছে উঠতি বয়সি যুবক, স্কুল-কলেজের ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। জেলায় মাদকাসক্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। উঠতি তরুণ ও যুবক ইয়াবাসেবীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বিগ্ন অভিভাবক মহল।
গত ৫ আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে মাদক কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে যে চক্রটি মাদক চোরাচালানে সক্রিয় ছিল, সে চক্রই ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
সূত্র জানায়, ভারতের সঙ্গে উত্তরের সীমান্ত জেলা লালমনিরহাটের প্রায় ২৪৮ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তের কমপক্ষে অর্ধশত স্পট দিয়ে প্রতিনিয়ত আসছে ফেনসিডিল, গাঁজা, মদসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য।
সীমান্ত গ্রামের মফিজুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন সীমান্তে বিভিন্ন এলাকা থেকে মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, থ্রি-হুইলারসহ নানা যানবাহনে চড়ে সুকৌশলে তরুণ, যুবক, কিশোর-কিশোরীরা ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবা, মদ সেবন করতে ছুটে আসে। রাত হলেই গোটা সীমান্তের নোম্যানসল্যান্ড চোরাকারবারিদের দখলে চলে যায়।
জেলার সীমান্ত গ্রাম কুলাঘাট, মোগলহাট, দুর্গাপুর, চলবলা, লোহাখুচি, বানিয়াটারী, জাওরানী, দৈখাওয়া, পানবাড়ি, সিন্দুর্না, জগৎবেড়, রসুলগঞ্জ, ঠ্যাংঝাড়া, আমঝোলসহ দেড় শতাধিক গ্রামের মানুষের প্রধান পেশা চোরাচালান।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, ভারত সীমান্তের (৫-১০) কিলোমিটারের মধ্যে থাকা তিন শতাধিক ফেনসিডিল কারখানায় প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার ফেনসিডিল তৈরি হয়। বছরে তারা বাংলাদেশে প্রায় ৬ কোটি বোতল ফেনসিডিল পাচার করে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশে হেরোইনের মূল যোগানদাতা ভারত। এ দেশের যুবসমাজ ভারতের মাদক আগ্রাসনে পর্যুদস্ত।
তথ্যসূত্র:
1.সীমান্তে ভারতীয় মাদকের ভয়াল থাবা, অধরা গডফাদাররা
– https://tinyurl.com/4e7wfuwh