
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আফগান শরণার্থীদের জন্য এক অমানবিক ও নৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত জারি করা হয়েছে। দেশটিতে অবস্থানরত হাজার হাজার আফগান শরণার্থীকে মাত্র ৭ দিনের মধ্যে দেশ ত্যাগের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে ওয়াশিংটন প্রশাসন। এই নির্দেশনা আফগানদের মধ্যে চরম উদ্বেগ তৈরি করেছে।
গত ১২ এপ্রিল এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আফগান গণমাধ্যম খামা প্রেস। প্রতিবেদনে জানা যায়, অস্থায়ী সুরক্ষিত মর্যাদা (টিপিএস) পাওয়া হাজারো আফগান নাগরিকসহ যারা মার্কিন সামরিক বা রাজনৈতিক সহায়তার অংশ হিসেবে দেশটিতে প্রবেশ করেছিল, তাদেরকে এই আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে।
‘আফগানইভ্যাক’ নামক শরণার্থী সহায়তাকারী সংস্থার প্রধান শন ভ্যানডাইভার এক্স-এ (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে জানান, আফগান শরণার্থীদের একটি বড় অংশকে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এই সব আফগানরা মূলত আমেরিকার হয়ে কাজ করেছিল এবং তাদের অনেকে আমেরিকার কথায় নিজের দেশ ও বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। এখন আমেরিকা সেই ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ আর আশ্রয় দিতে রাজি নয়।
ভ্যানডাইভার এই সিদ্ধান্তকে অগ্রহণযোগ্য বললেও, এটা তারাই করেছে যারা এই শরণার্থীদের স্বপ্ন বিক্রি করেছিল উন্নত জীবনের নামে। আজ যখন আমেরিকার স্বার্থ শেষ, তখন তাদেরকে আবার সেই আফগানিস্তানে পাঠানো হচ্ছে, যেখানে তাদের ওপর তালেবান প্রতিশোধ নিতে পারে বলে তারা দাবি করছে। অথচ ইমারতে ইসলামিয়ার পক্ষ থেকে বহুবার বলা হয়েছে- যারা অপরাধী নয়, তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সবাই নিজ ভূমিতে নিরাপদে ফিরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে।
অধিকাংশ মানবাধিকার সংগঠন এবং কিছু কংগ্রেস সদস্য মুখে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করলেও, বাস্তব পদক্ষেপ নেই বললেই চলে।
ইমারতে ইসলামিয়ার মুখপাত্র ও বিভিন্ন সূত্র বারবার বলেছেন, যেসব আফগান শরণার্থী আমেরিকার প্ররোচনায় দেশ ছেড়েছিলেন, তারা এখন চাইলে শান্তিপূর্ণভাবে ফিরে এসে দেশের পুনর্গঠনে অংশ নিতে পারেন। ইমারতে ইসলামিয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যে কেউ শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে দেশে বসবাস করতে পারবে। তাদের পূর্ব রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বিচার্য হবে না যদি তারা আর কোনো অপরাধে জড়িত না থাকেন।
এই ঘটনা আবারো প্রমাণ করে দিলো- যুক্তরাষ্ট্র কখনোই প্রকৃত বন্ধু নয়, তাদের স্বার্থের বাইরে কাউকে তারা মূল্যায়ন করে না।
তথ্যসূত্র:
1. US issues 7-Day Deadline for thousands of Afghan Refugees to leave
– https://tinyurl.com/4asts8bv