বাংলাদেশে জাতিসংঘের সমকামী দূত নিয়োগ; সমকামী পার্টনারসহ থাকার জন্য চাওয়া হয়েছে আ্যগ্রিমো

0
258

জাতিসংঘের মনোনীত নতুন দূতকে নিয়ে তৈরি হয়েছে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। বাংলাদেশে জাতিসংঘের পরবর্তী আবাসিক সমন্বয়ক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কূটনীতিক একজন সমকামী। বর্তমানে পাপুয়া নিউগিনিতে কর্মরত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক রিচার্ড এস হাওয়ার্ডকে বাংলাদেশে নতুন দূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

বিশ্বজুড়ে সমকামিতার প্রসারে এটিই জাতিসংগঘের গৃহীত প্রথম পদক্ষেপ নয়। আরো বহু জায়গায় সমকামিতার প্রসারে জাতিসংগঘের জড়িত থাকার অভিযোগ এবং প্রমাণ রয়েছে। ফিলিস্তিন, কাশ্মীরসহ বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে বর্বরতা থামাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে না পারলেও বিভিন্ন মুসলিম অঞ্চলে সমকামিতার মত জঘণ্য অপরাধের প্রসারে কখনো কসুর করেনি সংস্থাটি। এমনকি, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাযায় জাতিসংঘের UNRWA ( United Nations Relief and Works Agency) কতৃক পরিচালিত স্কুলগুলোর বিরুদ্ধে সমকামি মতবাদ প্রচারের অভিযোগ ওঠেছিল, জর্ডানে বসবাসরত ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত বিশিষ্ট চিকিৎসাবিজ্ঞানী ও এ্যক্টিভিস্ট ডাক্তার ইয়াদ কুনাইবী এসবের বিরুদ্ধে বহুদিন ধরে এ্যক্টিভিজম করে আসছেন।

এই নিয়োগের বিষয়টি ইতোমধ্যে জাতিসংঘ সদর দপ্তর থেকে বাংলাদেশকে জানিয়ে অ্যাগ্রিমো চাওয়া হয়েছে। রিচার্ড হাওয়ার্ড তার সমকামী পার্টনারকে নিয়েই বাংলাদেশে আসতে চায় বলে একাধিক কূটনৈতিক সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে। এই নিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তৈরি হয়েছে অস্বস্তি। একটি মুসলিমপ্রধান দেশে একজন সমকামীকে কীভাবে জাতিসংঘের মতো প্রতিষ্ঠান তার দূত হিসেবে নিয়োগ দেয়, তা নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে আলোচনা।

আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা জাতিসংঘের এই নিয়োগে রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, একজন সমকামীকে বাংলাদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্তের আগে এখানকার সামাজিক ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপট অবশ্যই বিবেচনায় নেওয়া উচিত ছিল। রিচার্ড হাওয়ার্ড যদি বাংলাদেশে জাতিসংঘের দূত হিসেবে আসেন, তাহলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. এম শহীদুজ্জামান এ ব্যাপারে গণমাধ্যমকে বলেছেন, জাতিসংঘ কীভাবে এ ধরনের বিতর্কিত ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়, তা আমার বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, জাতিসংঘের উচিত এই বিতর্কিত নিয়োগ বাতিল করা। জাতিসংঘ এটা না করলে বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে রিচার্ড হাওয়ার্ডের অ্যাগ্রিমো প্রত্যাখ্যান করা।

জাতিসংঘের এই বিতর্কিত নিয়োগ এবং রিচার্ড হাওয়ার্ডের অ্যাগ্রিমো অনুমোদনের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কূটনীতিক গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এটি নিয়ে অবশ্যই অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।

ড. এম শহীদুজ্জামান গণমাধ্যমকে আরও জানান, একজন সমকামী হিসেবে রিচার্ড হাওয়ার্ড তো বাংলাদেশে এলজিবিটি প্রমোট করার চেষ্টা করবে। এটা তো আমাদের জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর ইস্যু। আমাদের সামাজিক রীতিনীতি এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের চরম পরিপন্থী। বাংলাদেশে এই বিতর্কিত নিয়োগ নিশ্চিতভাবেই অস্থিরতা তৈরি করবে। আর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে সরকার। একবার ভেবে দেখুন, এটাকে ইস্যু করে যদি ইসলামি দলগুলো রাস্তায় নামে, তাহলে কী পরিস্থিতি তৈরি হবে।

উল্লেখ্য, রিচার্ড এস হাওয়ার্ড জুনিয়র একজন ফুলব্রাইট স্কলার এবং তিনি পিএইচডি ডিগ্রিধারী। তার গবেষণার অন্যতম মূল বিষয় লিঙ্গসমতা। ৩০ বছরের বেশি কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই সমকামী কূটনীতিক ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে পাপুয়া নিউগিনিতে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। এর আগে সে নেপালে আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর, থাইল্যান্ডে আইএলওর সিনিয়র আবাসিক বিশেষজ্ঞ, চীনে অভ্যন্তরীণ অভিবাসনের স্বাস্থ্য বিভাগে প্রধান কারিগরি উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে।


তথ্যসূত্র:
১. ঢাকায় জাতিসংঘ মনোনীত দূতকে নিয়ে অস্বস্তি
– https://tinyurl.com/mukn8zc5

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধমালি || ১৫০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আল-কায়েদার ব্যাপক আক্রমণ: লক্ষ্যবস্তু ১০টি শহর ও ৪টি শিল্প এলাকা
পরবর্তী নিবন্ধভিডিও || কেরালায় মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা, হিন্দুদের পাত্র থেকে পানি পান করাই ছিল অপরাধ