আমেরিকা নতুন করে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ইরানসহ সারা বিশ্ব যখন হিমশিম খাচ্ছে তখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে চিকিৎসা পরিসেবা মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে। পরিস্থিতিকে ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির সুযোগ হিসেবে নিয়েছে আমেরিকা।
সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি এবং দেশটির জাতীয় তেল কোম্পানিতে সহযোগিতার দায়ে ইরানের পাঁচ পরমাণু বিজ্ঞানী ও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানিয়েছে মার্কিন বাণিজ্য-কর্তৃপক্ষ। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও জানিয়েছেন, ইরানের পেট্রোক্যামিকেল খাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ লেনদেনে জড়িত থাকায় দেশটির তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ওয়াশিংটন কালো-তালিকাভুক্ত করেছে। ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি সামাজিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ও এর পরিচালকরাও কালো-তালিকার মধ্যে পড়েছে বলে পম্পেও জানান। খবর- পার্সটুডে
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির অংশ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন করে এ নিষেধাজ্ঞা দিল। পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে আমেরিকা একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়েই চলেছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীসহ মানবিক অতি গুরুত্বপূর্ণ বহু পণ্য এসব নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে। ফলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বহু মানুষ চিকিৎসা সংকটে ভুগছে এবং এ পর্যন্ত বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
একদিকে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ অন্যদিকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ইরানকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন করেছে।
স্পেনে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত হাসান কাশকাভি বলেছেন, ‘ইরান একমাত্র দেশ যাকে এ ধরনের কঠিন পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করতে হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘ব্যাংক ও অর্থলেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞার কারণে চিকিৎসা খাতে জরুরী পণ্য আনতে পারছে না ইরান।’ তবে আন্তর্জাতিক ব্যাপক চাপের মুখে মার্কিন কর্মকর্তারা সম্প্রতি এ ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার কথা বলছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান করোনা ভাইরাস মোকাবেলার বিষয়টিকে রাজনৈতিকীকরণের বিরোধিতা করেছেন।
এদিকে, আন্তর্জাতিক সমালোচনা সত্বেও সব দিক থেকে ইরানকে পঙ্গু করে ফেলার মার্কিন ষড়যন্ত্র থেমে নেই বরং তাদের নিষেধাজ্ঞার তালিকা ক্রমেই বাড়ছে। করোনা মোকাবেলাসহ চিকিৎসা খাতে ইরান যাতে কোনো সুবিধা করতে না পারে সেজন্য বিদেশ থেকে যে কোনো ওষুধ আমদানির পথে বাধা সৃষ্টি করছে আমেরিকা। তবে ইরানকে নতজানু করতে ব্যর্থ হওয়ায় ট্রাম্প প্রশাসন ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হচ্ছে। মার্কিন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ পল পিলার ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির মার্কিন নীতির ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, যারা ইরানের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টির পক্ষপাতী তারাও এ ক্ষেত্রে মার্কিন ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন।