বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এক দুর্ভেদ্য রহস্যের নাম। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষে বিশ্ব অনেক দূর এগিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত এ রহস্যের কিনারা করতে পারেনি কেউ। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা ও বাহামার মধ্যবর্তীতে অবস্থিত এই অঞ্চলটি। আর এখানে যেকোন কিছু গেলেই তা ‘গায়েব’ হয়ে যায়। এবার সেইখানেই ২০ জন যাত্রী নিয়ে মাকো কুদদি নামের একটি কেবিন জাহাজ নিখোঁজ হয়েছে। তিনদিনের অনুসন্ধান শেষে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড অনুসন্ধান স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে।
কোস্টগার্ড জানায়, জাহাজটি সর্বশেষ সোমবার বিমিনি দ্বীপ ত্যাগ করে, প্রায় ৮০ মাইল (১৩০ কিলোমিটার) দূরে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের লেক ওয়ার্থে পৌঁছানোর কথা ছিল জাহাজটির। তবে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে কোস্টগার্ড জানায় জাহাজটি বন্দরে ফিরে আসেনি। পরের তিন দিন প্রায় ৮৪ ঘন্টা উভয় দেশের যৌথ টিম সমুদ্রের ১৭ হাজার বর্গ মাইল (৪৪,০০০ কিলামিটার) এলাকায় আকাশ পথে এবং সমুদ্রে অনুসন্ধান চালায়। তবে জাহাজটির সন্ধান না পাওয়ায় শুক্রবার তারা অনুসন্ধান কার্যক্রম স্থগিত করে।
সপ্তম জেলা ক্যাপ্টেন স্টিফেন ভি বার্ডিয়ান এক বিবৃতিতে বলেছে, নিখোঁজদের পরিবারের প্রতি আমরা গভির সমবেদনা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি নিখোঁজদের জন্যও প্রার্থনা করছি। আমরা পার্শ্ববর্তী উপকূলের বাসিন্দাদের সাহায্য চেয়েছি। নিখোঁজদের যেকোনো তথ্য পেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তাদের অনুরোধ করা হয়েছে। মার্কিন কোস্টগার্ডের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অফিসার ফার্স্ট ক্লাস জোস হার্নান্দেজ জানায়, অনুসন্ধান এবং উদ্ধার অভিযানের সময় উত্তাল সমুদ্র এবং এই রুটে চলা জাহাজের সীমিত তথ্যের জন্য তাদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। কঠিন বিষয় হল কাউকে খুঁজতে যত বেশি সময় লাগে ততো বেশি জীবিত উদ্ধারের সম্ভাবনা কমে আসে বলেও জানান তিনি।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গল হলো আটলান্টিক মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমাংশে ত্রিভুজাকৃতির একটি বিশেষ অঞ্চল। সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে ১৯৪৫ সালের ৫ ডিসেম্বর পাঁচটি টিভিএম অ্যাভেঞ্জার উড়োজাহাজ এবং একটি উদ্ধারকারী উড়োজাহাজ রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যায়। এরপরও বেশ কিছু জাহাজ ও উড়োজাহাজ সেখানে নিখোঁজ হয়েছে।
উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের নাটক ‘দ্য টেম্পেস্ট’ সম্পর্কে অধিকাংশ পণ্ডিত বলেছেন যে, এটি বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে সংঘটিত একটি জাহাজডুবির ওপর ভিত্তি করে লিখা যা এটাকে নিয়ে প্রচলিত রহস্যে আরো নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিশ শতকের আগে এসব দূর্ঘটনার খবরে মানুষ খুব কমই আগ্রহী ছিলো। কিন্তু ১৯১৮ সালের বার্বাডোজ ও সেসাপিকে উপসাগরের মাঝখানে অজানা কোন এক জায়গায় যুক্তরাষ্টের ৫৪২ ফুট লম্বা কার্গো জাহাজ ডুবে যায়। জাহাজটিতে ৩০০ জন পুরুষ ও প্রায় দশ হাজার টন ম্যাঙ্গানিজ ছিলো। এই জাহাজটি নিঁখোজ হওয়ার আগে কোন সতর্কবার্তা বা সাহায্য চেয়ে কোন কল করেনি এবং অনেক খোঁজার পরও তার কোন অংশ বা নিঁখোজ হওয়ার কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন এ জাহাজ সম্পর্কে পরে বলেছে, “একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ও এই সমুদ্র জানে জাহাজটির সাথে কি ঘটেছিলো।
১৯৪১ সালে আবারো দুইটি সাইক্লোপ্স জাহাজ একই রুট বরাবর কোন কারণ ছাড়াই নিঁখোজ হয়ে যায়। এরপর সারা বিশ্ব জুড়ে মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করে যে, বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলকে অতিক্রমকারী জাহাজগুলি হয় অদৃশ্য হয়ে যাবে অথবা পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যাবে। পরে, ১৯৪৫ সালের ডিসেম্বর মাসে বারো জন মানুষ নিয়ে পাঁচটি বোমারু বিমান ফ্লোরিডার ফোর্ট লোডারডেল বিমানবন্দরের কাছে বোমা হামলার অনুশীলন করার জন্য যায়। ‘ফ্লাইট ১৯’ মিশনের কম্পাস হঠাৎ করে অপ্রত্যাশিতভাবে খারাপ হতে থাকে এবং মিশনের নেতা হঠাৎ করে হারিয়ে যায়।
পাঁচটি বিমানের সবগুলোই তখন সেখানে লক্ষ্যহীনভাবে উড়তে থাকে। এভাবে উড়তে উড়তে একসময় জ্বালানী শেষ হয়ে গিয়ে সমুদ্রে আছড়ে পরে। সেদিনই ঐ বিমানগুলোকে উদ্ধারকারী বিমানও তার ১৩ জন ক্রু নিয়ে সেখানে নিঁখোজ হয়। সপ্তাহব্যাপী অনুসন্ধানের পরও বিমানগুলোর হদিস না পেয়ে নৌবাহিনী থেকে অফিশিয়াল রিপোর্টে ঘোষণা করা হয় “বিমানগুলো মঙ্গলগ্রহে ভেসে গেছে।
কস্ট লাগলো কেউ কমেন্ট করে না
মিথ্যুক এর দলেরা চাঁদে চলে যায় আসমানের কথা কয়
আর কয়েক হাজার দূরের সংবাদ বলতে পারে না
তারপরও বিশ্বাঊ করে কিন্তু দু’চোখের সামনে শত নিয়ামত দেখেও আল্লাহ কে বিশ্বাস করে না