যখন অবরুদ্ধ গাজায় দখলদার ইসরাইলিরা দৈনিক ভিত্তিতে শতশত বিমান হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনি মুসলিমদের নির্বিচারে হত্যা করছে, তখন যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীরা ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ইসরাইলের পক্ষে সমর্থন দিয়েছে।
গণমাধ্যমগুলো জানায়, ব্রিটিশ সরকার গাজায় ইসরাইলের বিমান হামলার পক্ষে শক্তিশালী বক্তব্য দিয়ে বলে, দেশটির নিজেদের রক্ষায় বৈধ অধিকার রয়েছে।
গত ১৯, মে বুধবার ব্রিটিশ সংসদ “হাউজ অফ কমন্সে” বক্তব্য দানকালে যুক্তরাজ্যের মধ্য প্রাচ্য বিষয়ক পররাষ্ট্র মন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করে বলে, “ইসরাইলের সমস্ত হামলা সমানুপাতিক ভাবে বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়েই হচ্ছে!”
সে হামাসের প্রতিরোধ মূলক হামলাকে সন্ত্রাসবাদী কাজ আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়ে বলে,”হামাসের উস্কানিতে ইসরাইল শুধু প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।”
মিঃ ক্লিভারলি বলে,”যুক্তরাজ্য জেরুজালেম ও ইসরাইলের অন্যান্য শহরগুলোতে ফিলিস্তিনি রকেট হামলার দ্ব্যর্থহীন নিন্দা জানায়।”
সে আরো বলে, “আমরা হামাস ও অন্যান্য দলগুলির এসব সন্ত্রাসবাদের তীব্র নিন্দা জানাই। তাদের উস্কানি প্রদান ও ইসরাইলে রকেট নিক্ষেপ চিরতরে বন্ধ করা উচিত! তাদের বেসামরিক ইহুদিদেরকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর কোন যৌক্তিকতা নেই।”
“ইসরাইলের নিজেদের প্রতিরক্ষা ও তার নাগরিকদের উপর আক্রমণ প্রতিহত করার অধিকার আছে। এজন্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সামঞ্জস্যতা বজায় রেখে বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে ইসরাইলের সব ধরণের সমানুপাতিক আক্রমণ বৈধ।”
উল্লেখ্য, এক সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ গাজায় দখলদার ইসরাইলের ক্রমাগত বিমান হামলার সর্বশেষ তথ্যমতে কমপক্ষে ২৩১ জন ফিলিস্তিন মুসলিম নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬৫ জন শিশু। আহত হয়েছেন প্রায় ১৭১০ অধিক মুসলিম।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির বৈশ্বিক সম্পর্ক বিষয়ক মুখপাত্র লায়লা মুরান বলে,”আমার হৃদয় ভেঙে গিয়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।
সংসদে এক মন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে মিঃ ক্লিভারলি সর্বশেষ সংঘাতের ধারাবাহিকতা উল্লেখ করে বলে,”ইসরাইলের এই বিমান হামলা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী সংগঠনের নির্বিচারে রকেট হামলার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হিসেবে ছিল।”
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের পূর্ব জেরুজালেম থেকে মুসলিম বসতি উচ্ছেদের বিক্ষোভে ইহুদিদের দমন-পীড়ন ও রাজধানী জেরুজালেমে মসজিদুল আক্বসায় নামাজরত মুসল্লীদের উপর দখলদার ইসরাইলি সেনাদের বর্বরোচিত আক্রমণের জবাবে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা এই রকেট হামলা চালায়।
যুক্তরাজ্যের সংসদে সন্ত্রাসী ইসরাইলকে অস্ত্র রপ্তানির চ্যালেঞ্জ করা হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী মিঃ ক্লিভারলি বলে,”যুক্তরাজ্যের একটি শক্তিশালী অস্ত্র রফতানির লাইসেন্স রয়েছে এবং সমস্ত রফতানি সে লাইসেন্সের বিধিমালা মেনেই করে।”
অস্ত্র বানিজ্যে নীতিমালা লঙ্ঘন করে অস্ত্র রপ্তানির দাপ্তরিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৫ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের “কনজারভেটিভ পার্টি” ক্ষমতায় আসার পর থেকে ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ডের অধিক অস্ত্র যুক্তরাজ্য ইসরাইলকে রফতানি করেছে, যার মধ্যে অত্যাধুনিক জঙ্গি বিমান, প্রাণঘাতী বোমা, সাঁজোয়া যান ও গোলাবারুদ রয়েছে।
এভাবেই ক্রুসেডার রাষ্ট্রগুলো সবসময়ই মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসবাদের জন্মদাতা অভিশপ্ত ইহুদীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।