ইসলামের তারকাগণ ।। পর্ব-২১ ।। দাগিস্তানের সিংহ ইমাম শামিল রাহিমাহুল্লাহ (তৃতীয় কিস্তি)

1
1396

(সংক্ষিপ্ত পরিচিতি) ইমাম শামিল- একটি নাম নয়, একটি ইতিহাস। ১৮৩৪ সাল থেকে ১৮৫৯ সাল পর্যন্ত তৎকালীন পরাশক্তি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়ে যাওয়া এক লড়াকু যোদ্ধা ইমাম শামিল। আগ্রাসী রাশিয়ার অত্যাধুনিক সব মারণাস্ত্রও অকেজো হয়ে পড়েছিল যে মহান বীরের নগন্য ও আদিযুগের যুদ্ধাস্ত্রের সামনে, তিনিই হলেন ইমাম শামিল। রাশিয়ার রাজপ্রাসাদ থেকে শুরু করে অজপাড়া গাঁয়ের কুঁড়েঘর পর্যন্ত সবার কাছেই যিনি “শেরে দাগিস্তান” বা দাগিস্তানের সিংহ নামে পরিচিত, তিনিই ইমাম শামিল। ইতিহাসে আজও তিনি আযাদীর শ্রেষ্ঠ সিপাহসালার হিসেবেই প্রসিদ্ধ। আধুনিক গেরিলা যুদ্ধের জনক মনে করা হয় তাঁকে। যুগের অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র ও অভিনব রণকৌশল মুখ থুবড়ে পড়েছিল এই মহান বীরের সামনে। সন্ত্রাসী রাশিয়ার এমন কেউ ছিল না, যে ইমাম শামিলকে ভয় করত না। রাশিয়ার সৈনিকদের জন্য তিনি ছিলেন সাক্ষাৎ মৃত্যুদূত। রাশিয়ার মায়েরা নিজ সন্তানদের ঘুম পাড়াত ইমাম শামিলের নাম শুনিয়ে।

(পূর্বের পর্বের পর)

উখলগুর রণাঙ্গন:

১৮৩৪ সালে ইমাম নিযুক্ত হওয়ার পর বাহিনীকে বিন্যাস করা, নতুন মুজাহিদ রিক্রুট করা, দুশমনের উপর গেরিলা আক্রমণ পরিচালনা করা আর তাদের আক্রমণ প্রতিহত করার মধ্য দিয়েই পাঁচটি বছর চলে যায়। আসে ১৮৩৯ সাল । ইতোমধ্যে রুশদের দখলকৃত অধিকাংশ অঞ্চল ইমাম শামিল ফিরিয়ে এনে নিজ শাসনের অধীন করেছেন। রুশ বাহিনী ধীরে ধীরে পিছনে সরে যাচ্ছে। ১৮৩৯ সালে জার নিকোলাস কাফকাজে নিযুক্ত সেনাপতিকে বরখাস্ত করে গুলরোনকে নতুন সেনাপতি নির্বাচন করে। সে ইমাম শামিলের উপর বড় ধরনের আক্রমণ পরিচালনা করার সিন্ধান্ত গ্রহণ করে। সে জন্য জারের কাছে দু’লাখ সৈন্য, তোপ ও গোলাবারুদ চেয়ে পত্র প্রেরণ করে। সাহায্য আসতে কয়েক মাস সময় লেগে যায়। সাহায্য পেয়ে গুলরোন চূড়ান্ত আক্রমণে বেরিয়ে পড়ে। তার পরিকল্পনা হলো, ইমাম শামিলকে কোন একটা এলাকায় ঘেরাও করে হত্যা করা। প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ১৮৩৯ সালের ১৫-মে রুশ বাহিনী সামরিক মহড়া শুরু করে।

 ইমাম শামিল তাদের সব তথ্য যথাসময়েই পেয়ে যান। তিনি উখলগুতে থেকেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার সিন্ধান্ত গ্রহণ করেন। নিজের স্ত্রী-সন্তান মা-বোন সবাইকে উখলগুতে নিয়ে আসেন। তার অন্য নায়েবগণও স্ত্রী-সন্তানদের উখলগুতে নিয়ে আসেন। পুরা উখলগুকে তৈরী করা হয় একটি শক্তিশালী বাংকাররূপে। মোর্চা তৈরী করে সেখানে মুজাহিদরা অবস্থান নেন। পথে রুশসেনাদের উপর আক্রমণ হয় পদে পদে। এতে তাদের বিপুল ক্ষয়ক্ষতিও হয়। তবুও তারা এগিয়ে আসে।

১৮৩৯ সালের ২৯-এ জুন শুরু হয় মূল যুদ্ধ। পুরা উখলগুকে ঘেরাও করে ভারী গোলাবর্ষণ শুরু করে শত্রুবাহিনী। তাদের গোলাবর্ষণে সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। তারা সামনে অগ্রসর হয়। কিন্তু সব খালি। কোথাও কোন মানুষের সাড়াশব্দ নেই।   মুজাহিদরা আগেই নিজেদের গ্রাম খালি করে প্রাচীরের ভেতর আশ্রয় নিয়েছেন। রুশ বাহিনী ঘেরাও সংকীর্ণ করতে করতে মূল প্রাচীর পর্যন্ত চলে আসে। অফিসারের নির্দেশে একদল সেনা প্রাচীর বেয়ে উপরে উঠার চেষ্টা করে।  হঠাৎ উপর থেকে বড় বড় পাথর ও গাছের গুঁড়ি গড়িয়ে পড়তে শুরু করে। যারা প্রাচীরে উঠতে চেয়েছিল তারা সবাই পিষ্ট হয়ে মারা যায়। আসে আরেকদল। তাদেরও একই পরিণতি বরণ করতে  হয়। এভাবে চলতে থাকে সন্ধ্যা নাগাদ। এরপর চারদিন পর্যন্ত হামলা বন্ধ থাকে। চারদিন পর ৪-এ জুলাই বড় বড় দুটি তোপ বসানো হয় পাহাড়ের চূড়ায়। সেখান থেকে প্রাচীর লক্ষ করে গোলা নিক্ষিপ্ত হতে থাকে। ভারী গোলাবর্ষণের ফলে প্রাচীর ভেঙে যায়। রুশ বাহিনী ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাচীর অতিক্রম করে সামনে অগ্রসর হয়। হঠাৎ তাদের উপর গুলিবর্ষণ শুরু হয়। মুজাহিদরা পাতাল বাংকার থেকে আক্রমণ করেন। রুশ বাহিনী মুজাহিদদের নিশানা করতে পারে না। মাটির নিচে তোপ দিয়েও কোনো কাজ হয় না। একদল রুশ সেনা এগিয়ে আসে আর সবাই মুজাহিদদের আক্রমণের শিকার হয়ে মারা যায়। তারপর আরেকদল এগিয়ে আসে। তারাও মারা যায়। এগিয়ে আসে আরেকদল।  তাদের সৈন্যের অভাব নেই। এভাবে চলতে থাকতে ১২-এ জুলাই পর্যন্ত।

 ১৫-জুলাই সেনাপতি গ্রেব  ভয়ঙ্কর আক্রমণ শুরু করে। সে একটানা তিনদিন গোলাবর্ষণ করতে থাকে। এতে ইমাম শামিলের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়৷ অনেক মোর্চা ভেঙে যায়। অসংখ্য মুজাহিদ শহীদ হয়ে যান। তিনদিন পর তারা সামনে অগ্রসর হতে চায়। তারপরও তারা কঠিন প্রতিরোধের শিকার হয়। এভাবেই চলতে থাকে যুদ্ধ। কোনদিন তুমুল আকার ধারন করে কোনদিন আবার হালকা থাকে। জুলাই মাস শেষ হয়ে আগস্ট শুরু হয়ে যায়। যুদ্ধ তখনো চলছে। কেউ কারো কাছে নতি স্বীকার করছে না।

আগস্টের ২ তারিখ। রুশরা চূড়ান্ত আক্রমণ করতে চাচ্ছে। আড়াই হাজার রুশসেনা এগিয়ে আসে। এদের মোকাবিলায় এগিয়ে আসেন ১০০ জন মুজাহিদ। সবাই শহীদ হয়ে যান। রুশদের মাত্র কয়েকজনই প্রাণে বেঁচে ফিরতে পারে। এরপর এগিয়ে আসে আরেকদল। মুজাহিদরাও এগিয়ে আসেন। এই প্রক্রিয়ায় জিহাদ চলতে থাকে।  ৪ আগস্ট সন্ধ্যার পর, ইমাম তার নায়েবদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের জীবন-মরণ আল্লাহর জন্য। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। মনে হচ্ছে জার নিজের সব শক্তি এখানে এনে উপস্থিত করেছে। এ মুহূর্তে আপনাদের কোন পরামর্শ থাকলে বলুন!

নায়েব ইউনুস বলেন, আমাদের জীবন আল্লাহর জন্য উৎসর্গিত। তবে আমার মনে হয় একই স্থানে চূড়ান্ত লড়াই করা কৌশলগত দিক থেকে ঠিক হয়নি। আরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু কোন সিন্ধান্ত আসে না। সিন্ধান্ত একটাই, সেটা হলো শাহাদাত।

প্রতারণা:

৬ তারিখ ভোরবেলা রুশদের পক্ষ থেকে সন্ধির প্রস্তাব আসে ইমামের নিকট। ইমাম জানতে চান, সন্ধির জন্য রুশদের কোন শর্ত আছে কি না? উত্তর আসে হ্যাঁ আছে, তারা জামানত চায়। ইমাম জানতে চান,  কী জামানত? উত্তর আসে, আপনার ছেলে জামালুদ্দীন। জামালুদ্দীনকে জামানত রাখলে রুশ সেনাপতি সন্ধির জন্য আলোচনায় বসবে।  ইমাম রাজি হলেন না। আক্রমণের গতি বেড়ে গেল। তীব্র থেকে তীব্র হচ্ছে আক্রমণ। প্রতিরোধও হচ্ছে সমানতালে। আগস্টের ১৭ তারিখ চলে আসে। যুদ্ধের বয়স  ৫১ দিন। মুজাহিদদের মওজুদকৃত খাদ্য-পানি, সব শেষ। ক্ষুধার্ত অবস্থাতেই জিহাদ চলছে। শিশুরা কান্নাকাটি করছে। মায়েরাও অস্থির সময় যাপন করছে। ইমাম শামিল নিজ ছেলে জামালুদ্দীনকে জামানত রেখেই আলোচনায় বসতে রাজি হন।

১৭ তারিখ ভোরবেলা, ইমাম শামিল নিজের কলিজার টুকরা সন্তানকে তুলে দেন রাশিয়ানদের হাতে। এর দু’দিন পরেই তিনি বুঝতে পারেন, এটা রাশিয়ার একটা ষড়যন্ত্র ছিল। তিনি প্রতারিত হয়েছেন। রুশসেনাপতি সন্ধি করবে না। তারা আক্রমণের গতি বাড়িয়ে দিয়েছে। জামালুদ্দীনকে কৌশলে হস্তগত করার উদ্দেশ্য ছিল ইমাম শামিল যেনো অন্তত ছেলের মায়ায় ধরা দেয়। পলায়ন না করে। ইমাম শামিল রাগে-ক্ষোভে ফেটে পড়েন।  এর দৃষ্টান্তমূলক প্রতিশোধ নেয়ার দৃঢ় সংকল্প করেন। কিন্তু এরপূর্বে তাকে এই অবরোধ থেকে বের হতে হবে। সিন্ধান্ত হয় ইমাম শামিল তার কয়েকজন জানবাজ নায়েব, মা-বোন,স্ত্রী,পুত্র গাজী মুহাম্মাদ ও দুধের শিশু সাঈদকে নিয়ে অবরোধ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।

শত্রুর শক্তিশালী অবরোধ ভেদ করে বেরিয়ে যান দাগিস্তানের সিংহ:

২০ আগস্টের অন্ধকার রাত। মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। মাঝে মাঝে বিজলী চমকাচ্ছে। স্ত্রী ফাতেমা ও জাওহারাহ, গাজী মুহাম্মাদ, মা-বোন,  শিশুপুত্র সাঈদ ও বিশজন নায়েবকে নিয়ে ইমাম শামিল রশি বেয়ে নদীতে নেমে পড়েন। ফাতেমা অন্তঃসত্ত্বা। তৃতীয় সন্তানের মা হতে আর মাত্র এক মাস বাকি। রশি বেয়ে নামতে কষ্ট হয়েছে অনেক। চতুর্দিকে রুশবাহিনীর কঠোর প্রহরা।

দক্ষিণ দিকে কিছুটা দূরে নদীর মাঝখানে একটা চড়া। প্রাথমিকভাবে সেই চড়ায় গিয়ে আশ্রয় নিতে হবে। ঘাস আর কাপড় দিয়ে কয়েকটা কুশপুত্তলিকা তৈরী করা হয়েছে। একটা নৌকায় করে কুশপুত্তলিকাগুলো নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজলীর চমকে হঠাৎ রুশবাহিনী মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে যায়। এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। ইমামের বোন গুলিবিদ্ধ হন। সাথে সাথেই তার মুখ থেকে চিৎকার বেরিয়ে আসে। ইমাম তার বোনের মুখ চেপে ধরেন। অল্পক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। বোনের লাশ পানিতে ভাসিয়ে দেন ইমাম। নায়েবগণ কুশপুত্তলিকাগুলো একদিকে ভাসিয়ে রুশসেনাদের দৃষ্টি সেদিকে ফিরিয়ে নেন। এদিকে তারা নদীর মাঝখানের চড়ার দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যান। চলতে হচ্ছে স্রোতের বিপরীতে। কষ্ট হচ্ছে সবার। বিশেষত ফাতেমার। প্রচণ্ড ঢেওয়ে হঠাৎ কী যেন একটা ভারী বস্তু এসে ধাক্কা লাগে ইমামের মাথায়। প্রচণ্ড যন্ত্রণায় কোঁকিয়ে ওঠেন তিনি। কিন্তু তৎক্ষণাৎ নিজেকে সামলে নেন। একটু পর বস্তুটা পুনরায় এসে ধাক্কা লাগে ইমামের মায়ের মাথায়। সাথে সাথেই তিনি জ্ঞান হারান। ইমাম নিজ মাকে কাঁধে তুলে নেন। অনেক কষ্টে গিয়ে পৌঁছেন চড়ায়। চড়ায় পৌঁছে বুঝতে পারেন তার মা আর জীবিত নেই। মায়ের লাশটাও ভাসিয়ে দেন নদীতে।  অস্ফুটস্বরে ইমামের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে- “আল্লাহ! তোমার সন্তুষ্টিই আমার সন্তুষ্টি, ধৈর্যধারণের শক্তিটুকু দাও!”

পরের দিনটা এখানেই আত্মগোপন করে কাটান। এখান থেকে কয়েক মাইল দূরে স্রোতের বিপরীতে চলতে পারলে আরেকটা চড়া আছে। সেখানে নদীর স্রোত ও পানি অনেক কম। কিন্তু সে পর্যন্ত যাওয়া সহজ ব্যাপার না। ইমাম নিজে একটা রশি নিজের কোমরের সাথে বেঁধে স্রোতের বিপরীতে চলতে চলতে সেই চড়ায় গিয়ে পৌঁছেন। রশিটি একটা বড় পাথরের সাথে বেঁধে দেন। এবার এক একজন করে রশি বেয়ে বেয়ে এগিয়ে যায়। এখানে পানি কম। রাতেই তীরে উঠতে হবে এবং নিরপদ দূরত্বে চলে যেতে হবে।  হঠাৎ কী একটা জন্তু  ফাতেমার ঘাড়ে ঠোকর মারে। তার মুখ থেকে অনিচ্ছাকৃত কান্না বেরিয়ে আসে। নদীর পাশে পাহারারত রুশসেনা মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে আরম্ভ করে। ইমাম দ্রুত নদীর তীরে উঠে যান এবং তাদের সাথে তরবারি ও খঞ্জর দিয়ে যুদ্ধ শুরু করেন। নয়জন রুশসেনাকে হত্যা করে সকলকে নিয়ে দ্রুত একটা ঝোপের মধ্যে আশ্রয় নেন। রুশসেনাদের এলোপাথাড়ি গুলিতে স্ত্রী জাওহারাহ বেগম, ইমামের শিশু সন্তান সাঈদ ও দুজন নায়েব শহীদ হয়ে যান। গুরুতর আহত হন ফাতেমা। গুলিবিদ্ধ হন ইমাম নিজে ও তার ছেলে গাজী মুহাম্মাদ।

বিলম্ব না করে সেদিনই তারা নিরাপদ দূরত্বে চলে যান।

এদিকে উখলগুতে যারা ছিলেন সকলেই জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। সকলেই শহীদ হয়ে যান। ঐতিহাসিক উখলগুর যুদ্ধ শেষ হয়। সেনাপতি গ্রেব তন্নতন্ন করে ইমাম শামিলের লাশ খুঁজতে থাকে। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি। প্রত্যেকটা পাথরের নিচে তাকে খোঁজা হয়, একেকটা লাশ কয়েকবার করে উল্টেপাল্টে দেখা হয় কিন্তু কোন লাভ হয়নি।

চলবে ইনশাআল্লাহ।


নোট:

ইতিহাস এমন একটি বিদ্যালয় যেখান থেকে করণীয় ও বর্জনীয়, উভয় প্রকার শিক্ষাই পাওয়া যায়। গিমরীর রণাঙ্গন ও উখলগুর রণাঙ্গন, এই উভয় রণাঙ্গনে মুজাহিদদের কৌশলগত ভুল ছিল একস্থানে জমে প্রতিরোধ যুদ্ধ করা। গেরিলা যোদ্ধারা কখনোই একস্থানে জমে যুদ্ধ করবে না। তারা শত্রুর রগে রগে আর শিরায় শিরায় চরে বেড়াবে। তাদেরকে না দেখা যাবে না ধরা যাবে! আক্রমণ করে সরে পড়ার পরেই কেবল বোঝা যাবে যে, এখানে কোন গেরিলা যোদ্ধা এসেছিল। উখলগুর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বেই যদি অর্ধেক যোদ্ধাকে ঘেরাও-এর বাহিরে রাখা যেত তাহলে তারা শত্রুবাহিনীর পেছন থেকে গেরিলা আক্রমণের মাধ্যমে তাদেরকে নাজেহাল করে ছাড়তে পারত এবং তাদেরকে ঘেরাও তুলে নিতে বাধ্য করা যেত। কৌশলগত এই ভুলটি না হলে যুদ্ধের ইতিহাস হয়তো আজকে ভিন্নভাবে লেখা হত। বস্তুত আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছাই সবকিছু হয়ে থাকে।


লেখক : মুফতি আব্দুল্লাহ মুনতাসির

তথ্যসূত্র :

(১) https://tinyurl.com/ypuc473s

(২) https://tinyurl.com/bdf5net7

(৩) https://tinyurl.com/ycy5tmep

(৪)  যুলফিকার।


পড়ুন আগের পর্বগুলো-

প্রথম কিস্তি: https://alfirdaws.org/2022/06/12/57525/

দ্বিতীয় কিস্তি: https://alfirdaws.org/2022/07/08/57940/

১টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধজম্মু গণহত্যা : স্মৃতির আড়ালে চলে যাওয়া ইতিহাসের এক অন্ধকার পাঠ
পরবর্তী নিবন্ধমালিতে আল-কায়েদার হামলা বৃদ্ধি : মিশরীয় সেনাদের পলায়নের সিদ্ধান্ত