আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট পূর্ব আফ্রিকা ভিত্তিক জনপ্রিয় ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা ফের ইথিওপিয়ান বাহিনীর উপর হামলা চালিয়েছেন। এতে এখন পর্যন্ত ১০৩ সেনা নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিবরণ অনুযায়ী, আজ ২৯ জুলাই শুক্রবার ভোরে সোমালিয়ার আটো শহরে ফের হামলা চালিয়েছেন হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন। গত সপ্তাহে শহরটি বিজয় করলেও কৌশলগত কারণে এর একটা এলাকা ও একটি সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেন আশ-শাবাব। কিন্তু আজ ভোরে ঐ ঘাঁটিটিতেই পূণরায় হামলায় চালিয়েছেন আশ-শাবাব মুজাহিদিন।
প্রতিরোধ বাহিনীর মুখপাত্র শাইখ আবদুল আজিজ আবু মুস’আব (হা.) এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আশ-শাবাব যোদ্ধারা আজ ভোরে মাত্র ২ ঘন্টার লড়াইয়ে দখলদার বাহিনী থেকে উক্ত ঘাঁটিটি পূণরায় উদ্ধার করেছেন। এবং তাঁরা ১০৩ ইথিওপিয়ান শত্রুসৈন্যকে হত্যা করেছেন। একইসাথে আর ডজনে ডজনে দখলদার সেনা মুজাহিদদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে। অন্যদেরকে যুদ্ধবন্দী হিসাবে নিয়ে গেছেন মুজাহিদগণ।
দুর্দান্ত এই হামলার প্রথমিক ফলাফল ছিলো যে, এতে ১০৩ এরও বেশি ইথিওপিয়ান সৈন্য নিহত হয়েছে। আহত এবং বন্দী হয়েছে আরও বহু সংখ্যক ক্রুসেডার সৈন্য।
তবে হারাকাতুশ শাবাব রাতে এক বিবৃতি জারি করে নিশ্চিত করেছে যে, মুজাহিদদের পরিচালিত বরকতময় উক্ত হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫০ এ দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৯৫ ইথিওপিয়ান সৈন্য। এছাড়াও এই অভিযানে মুজাহিদগণ কয়েক ডজন ইথিওপিয়ান সৈন্যকে যুদ্ধবন্দী হিসাবে আটক করেছেন।
শাহাদাহ এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, হারাকাতুশ শাবাব আল মুজাহিদিন প্রথমে একটি শহিদী হামলার মাধ্যমে এই অভিযানটি শুরু করেছেন। এরপর তাঁরা ঘাঁটি লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু রকেট ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকেন। এতে হতভম্ব হয়ে পড়ে ইথিওপিয়ান সৈন্যরা। আর সেই সুযোগেই ঘাঁটিতে অনুপ্রবেশ করেন অন্য মুজাহিদরা। যারা ঘাঁটিতে ঢুকেই ক্রুসেডার সৈন্যদের হত্যা এবং বন্দী করতে থাকেন। ২ ঘন্টার তীব্র লড়াই শেষে মুজাহিদগণ সামরিক ঘাঁটির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হন।
এদিকে আক্রমণ চলাকালীন সময়ে ইথিওপিয়ান মিগ যুদ্ধবিমানগুলো তাদের কাপুরুষ সেনাদের সহায়তা ও মুজাহিদদের লক্ষ্য করে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু হারাকাতুশ শাবাব যোদ্ধারাও এসময় থেমে থাকেন নি। তাঁরাও বিমানবিধ্বংসী অস্ত্র দ্বারা বিমানগুলো টার্গেট করে হামলা চালাতে শুরু করেন। যার ফলশ্রুতিতে ক্রুসেডারদের মিগ যুদ্ধবিমানগুলোও পালাতে বাধ্য হয়, আলহামদুলিল্লাহ্।
অপরদিকে আশ-শাবাবের দুর্দান্ত এই অভিযানকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, আশ-শাবাব কর্তৃক ইথিওপিয়ান বাহিনী থেকে এলাকা বিজয়, এরপর তা ছেড়ে দেওয়া এবং এক সপ্তাহের মধ্যে পূণরায় এটি দখল কারার পুরো পক্রিয়াটিই ছিলো আশ-শাবাবের একটি সাজানো যুদ্ধ-কৌশল। তাঁরা এই পক্রিয়ায় ইথিওপীয় বাহিনীকে বিক্ষিপ্ত, বিধ্বস্ত ও মনোবলশূণ্য করে দিয়েছেন।
এতে করে ইথিওপীয় বাহিনী একই সীমান্তে ৩টি ফ্রন্টে বিক্ষিপ্তভাবে যুদ্ধ করেছে। ফলে সেনারা এসব ফ্রন্টে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। অপরদিকে আশ-শাবাবের হামলায় একের পর এক শহরের পতন ও শত শত সেনা নিহত হওয়ায় মনোবল ভেঙে যায় ইথিওপিয় সেনাদের। যার বাস্তব উদাহরণ হচ্ছে আটো শহরে দ্বিতীয় বারের মতো আশ-শাবাবের অভিযান, যেখানে আশ-শাবাব যোদ্ধারা শত শত ইথিওপিয় সৈন্যকে হত্যা, আহত ও বন্দী করেছেন। অতঃপর এর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন।
আরও আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, আজ সকালে ইথিওপিয় পদাতিক ও বিমান বাহিনী যখন আটোতে আশ-শাবাবের সাথে জীবন বাঁচানোর লড়াই করছে, ঠিক সেই মূহুর্তে আশ-শাবাবের ১০০০ (এক হাজার) যোদ্ধা সোমালিয়ার সীমান্ত হয়ে কোন প্রতিরোধ ছাড়াই ইথিওপিয়ার মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে। যাদের অধিকাংশই আবার ইথিওপিয়ান নাগরিক। সব মিলিয়ে গত এক সপ্তাহে কয়েক হাজার আশ-শাবাব যোদ্ধা ইথিওপিয়ার মূল ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছেন।
এদিকে আফ্রিকায় নিয়োজিত ক্রুসেডার আমেরিকান সেনা কমান্ডার স্টিফেন টাউনসেন্ড সম্প্রতি ইথিওপিয়ায় আশ-শাবাবের হামলা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে স্বীকার করে যে, “আশ-শাবাব যোদ্ধারা ইথিওপিয়ার মূল ভূখণ্ডের ১৫০ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করেছে। গত ১৮ মাসে এই অঞ্চলে আমেরিকান সেনাদের তৎপরতার পরও সামরিক দিক দিয়ে আশ-শাবাব বৃহৎ, শক্তিশালী এবং দুঃসাহসি হয়ে উঠেছে।”
প্রতিবেদক : ত্বহা আলী আদনান
আলহামদুলিল্লাহ
আমাদের ভাইদের বিজয় মুসলিমদের অন্তরকে প্রশান্ত করেছে। হে আল্লাহ্ আপনি ভাইদের বিজয়কে দ্রুত ত্বরান্বিত করুন এবং তাদেরকে সাহায্য করুন (আমিন)।