মধ্যপ্রদেশে মসজিদ ভাঙচুর, মুসলিমদের কেটে ফেলার প্রকাশ্য স্লোগান

উসামা মাহমুদ

0
492

ভারতে হিন্দুত্ববাদীরা একেরপর এক মুসলিমদের মসজিদ, মাদ্রাসা ভেঙ্গে চলেছে। যে মসজিদ গুলো অনেক ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক, সেগুলোকে হিন্দুত্ববাদী আইন আদালতের মাধ্যমে চক্রান্ত করে ভাঙার ষড়যন্ত্র করছে। এবং তুচ্ছ থেকে তুচ্ছ অজুহাতেই মুুসলিমদের পবিত্র স্থানগুলোকে ভাঙচুর করছে।

এবার ভারতের মধ্যপ্রদেশের উদয়নগরে সামান্য বিষয়কে পুঁজি করে উগ্র হিন্দুরা মুসলিমদের বাড়িঘর দোকানপাটে হামলা চালিয়েছে। মসজিদ ভাঙচুর করেছে। মসজিদের মিনারা ভেঙ্গে দিয়েছে, কোরআন শরীফগুলোও মাটিতে ফেলে দিয়েছে উগ্র হিন্দুরা। মসজিদ ভাঙচুরের সময় তারা স্লোগান দিয়েছে- “মুসলিমদেরকে কাটা হবে এবং অন্যান্য মসজিদগুলোকে ভাঙ্গা হবে।”

একজন প্রত্যক্ষদর্শী মুসলিম ব্যক্তি মসজিদ ভাঙচুরের এবং হামলার বিবরণ দিয়েছেন যে, ২৭ আগস্ট শনিবার উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সমাবেশ করে এবং মুসলিম বিদ্বেষী স্লোগান দিতে শুরু করে। পরে উত্তেজিত হিন্দুরা আমাদের জামে মসজিদ ভাঙচুর করে, মসজিদের জানালা, পাইপ, পাখা ভাঙচুর করে। এমনকি কোরআন শরীফ গুলো মাটিতে ফেলে দেয়। মসজিদের আশেপাশে মুসলিমদের দোকান, বাড়িঘর গুলোতে হামলা চালায়। মুসলিমদের একটি গাড়ি, দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। মসজিদের স্পিকার গুলোকে মাটিতে ফেলে দেয়।

উদয়নগরের বাসিন্দা জনাব শেখ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, হামলাকারীদের মধ্যে স্থানীয় হিন্দুদের সাথে সন্ত্রাসী বজরং দল এবং আরএসএসসহ অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধি গুণ্ডারাও উপস্থিত ছিল। হিন্দুত্ববাদী সেরা যাদব এবং শুভমের মত নেতৃত্বদানকারী সন্ত্রাসীরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা সামনে থেকে মসজিদসহ মুসলিমদের বাড়িঘরে হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিল। হিন্দুত্ববাদী পুলিশ কোন অপরাধীকেই এখনো গ্রেপ্তার করেনি।

তাই মুসলিমরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে আছে, কারণ যেকোনো সময় এই হিন্দুত্ববাদীরা অন্যান্য মুসলিমদের ওপর ও হামলা চালাতে পারে। এই ভয়ে অনেক মুসলিম সাময়িকভাবে এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে।

এভাবেই হিন্দুত্ববাদীরা দিনের পর দিন মুসলিমদের উপর অন্যায় জুলুম ও হামলা চালিয়ে মুসলিমদের বাড়িঘর মসজিদ ভেঙে দিচ্ছে। মুসলিম নারীদের অপহরণ করে ধর্ষণ করছে, খুন করছে। তুচ্ছ থেকে তুচ্ছ অজুহাতে মুসলিমদেরকে হতাহত করছে। এ নিয়ে কথিত কোন মানবাধিকার সংস্থা কিংবা অমুসলিম জাতিসংঘ কখনোই হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীদের লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করেনি। কথিত বুদ্ধিজীবিরাও নিশ্চুপ।

আর মসজিদ ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে কোন মিডিয়া বা কথিত ‘অসাম্প্রদায়িক’ বুদ্ধিজীবী কথা বলবেও না। কারণ এখানে মুসলিমদের ইবাদতখানা ভাঙ্গা হয়েছে। পক্ষান্তরে যদি কোন মন্দির ভাঙতো, যদিও তা হিন্দুত্ববাদীদের নিজেদের কোন্দলের কারণেই হোক না কেন, তবুও হিন্দুত্ববাদী ও তাদের দালাল মিডিয়া-বুদ্ধিজীবীরা হাইলাইট করে প্রচার করত। পার্শ্ববর্তী মুসলিম দেশগুলো দখল করে নেওয়ার হুমকিও আমরা শুনতে পেতাম।

এটা প্রমাণিত সত্য যে, মুসলিমদের জান মাল ও ইবাদতখানাগুলো হেফাজতের জন্য যা কিছু করার, তা মুসলিমদেরকেই করতে হবে। কেননা মুসলিমদের বিপদ-আপদে কখনোই অন্যরা এগিয়ে আসবে না। আর গাদ্দার শাসকেরা তো অনেক আগেই নিজেদের ও মুসলিমদের ভবিষ্যৎ শত্রুদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। তাই এ সমস্ত মিডিয়া-বুদ্ধিজীবী শ্রেণি ও কথিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বর্জন করে, মুসলিমদের উচিত অমুসলিমদের এঁকে দেওয়া সীমান ভুলে নিজেদের মাঝে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তোলা, এবং হক্কানি উলামাদের আহব্বানে সারা দিয়ে অনাগত অনিবার্য সংঘাত মোকাবেলায় প্রস্তুত হওয়া।



তথ্যসূত্র:
——–
1. MP: Tensions High After Mosque Vandalised in Dewas District
https://tinyurl.com/yc7mxs9v
https://tinyurl.com/2p93webr

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্যাপক সামরিক মহড়া চলার মধ্যেই ভিক্টোরি-কমান্ডোদের নতুন ভিডিও প্রকাশ করলো তালিবান
পরবর্তী নিবন্ধএক মাসে তিনটি মাদ্রাসা গুঁড়িয়ে দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী আসাম সরকার