জীবন্ত পুড়িয়ে দুই মুসলিমকে নৃশংস কায়দায় খুন করলো কথিত গো-রক্ষকরা

উসামা মাহমুদ

0
656

হিন্দুত্ববাদী ভারত সরকারের ছত্রছায়ায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন ও গণহত্যার নীতি পূর্ণ গতিতে চালাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসী দলগুলো। সেই ধারাবাহিকতায় কথিত গো-হত্যার অভিযোগে উগ্র হিন্দু সন্ত্রাসীরা দুইজন মুসলিমকে অপহরণের পর পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এরপর আহত মুসলিমদের আগুনে পুড়িয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে উগ্র হিন্দু সন্ত্রাসীরা। নিহত মুসলিমরা হলেন রাজস্থানের গোপালগড় গ্রামের বাসিন্দা জুনায়েদ ও নাসির।

গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার হরিয়ানায় ভিওয়ানি জেলায় পাষাণ্ডু হিন্দুত্ববাদীরা এমন নৃশংস ঘটনা ঘটায়।

স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, নিহতদেরকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আপহরন করে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বজরং দলের সদস্যরা। অপহরনের বিষয়টি জানতে পেরে পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় গোপালগড় থানায় এফআইআর দায়ের কারার চেষ্টা ক। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন এফআইআর দায়ের করে নি, বরং তাদেরকে থানা থেকে বের করে দেয়।

ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষবসত ভারতীয় প্রশাসন অপহরণের পর দ্রুত ও কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয় নি। এরপর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি অপহরণের শিকার দুই মুসলিম যুবককে খুঁজে পাওয়া যায় একটি গাড়িতে। তবে জীবিত অবস্থায় নয়, বরং তাদের গ্রাম থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরের একটি বনের মধ্যে একটি গাড়িতে তাদেরকে মৃত ঝলসানো অবস্থায় পাওয়া যায়।

স্থানীয়রা জানান, অপহরনের শিকার জুনায়েদ ও নাছিরকে উগ্র হিন্দুরা নৃশংসভাবে পিটিয়ে প্রথমে মারাত্মকভাবে আহত করে, এবং পরে তাদেরকে গাড়িতে ঢুকিয়ে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, অপহরণ ও এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পিছনে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বজরং দলের স্থানীয় নেতারা রয়েছে। তাই পরিবারের সদস্যরা বজরং দলের নেতা মনু মানেশর, লোকেশ, রিংকু সাইনি এবং শ্রীকান্তের নামে থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেন।

বজরং দলের নেতা মনু মানেসার এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাস্টার মাইন্ট ছিল।

এদিকে রাজ্য পুলিশের আইজি গৌরব শ্রীবাস্তব এই হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দিতে মিডিয়ার সামনে বলেছে, হরিয়ানার ভিওয়ানি জেলায় একটি গাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, গাড়িটিতে তখন দুই গরু পাচারকারীর মৃতদেহ ছিলো।

অথচ, নিহতের পরিবারের এক সদস্য মাকতুব মিডিয়াকে জানিয়েছেন যে, উগ্র মনু মানেসার এবং তার সন্ত্রাসী দল, জুনায়েদ এবং নাসিরকে পিরুকার জঙ্গল থেকে অপহরণ করে ভিওয়ানির বারওয়াস গ্রামে নিয়ে গিয়েছিল, যেখানে তাদের পিটিয়ে আহত করে জীবন্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

ঘটনা জানাজানি হয়ে গেলে মুসলিদের চাপের মুখে বজরং দলের নেতা মনু মানেশর, লোকেশ, রিংকু সাইনি এবং শ্রীকান্তের নাম উল্লেখ করে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়।

তবে অভিযোগ হিসেবে শুধু জুনায়েদ ও নাসিরকে অপহরণ ও মারধরের কথা উল্লেখ করেছে। খুনের কোন ধারা উল্লেখ করেনি। ফলে দেখা যাবে হয়ত তাদের আটকই করা হবে না। কিংবা আটক করলেও সহজেই জামিনে বের হয়ে যাবে। কোন বিচারই হবে না।

ভুক্তভোগি মুসলিমদের সাথে এমনটাই করা হচ্ছে অহরহ। বিচারের নামে যেন প্রহসন করা হচ্ছে মুসলিমদের প্রতি। মুসলিমদের নিজেদেরকেই তাই ন্যায়বিচার ও নিজেদের অধিকার আদায়ের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করাটা এখন বাস্তবতার দাবি বলে প্রতীয়মান হয়।



 

তথ্যসূত্র:
——-
1. Two Muslim men burnt to death in Haryana, “Bajrang Dal killed them,” says family ( Maktoob Media )
https://tinyurl.com/4ddfatr5
2. video link:
https://tinyurl.com/2netfuya

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধGDI’এর অভিযানে ৩ দায়েশ সন্ত্রাসী নিহত, ইমারার সামরিক প্রস্তুতিতেও জোর হাওয়া
পরবর্তী নিবন্ধশাবাব মুজাহিদদের তীব্র হামলায় শতাধিক মুরতাদ সৈন্য হতাহত