ভারতীয় পুলিশের ছোড়া টিয়ার গ্যাসে আক্রান্ত হয়ে এক রোহিঙ্গা শিশুর নির্মম মৃত্যু হয়েছে। গত ১৮ জুলাই ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের কাতুয়া জেলার হিরানগরে অবস্থিত একটি শরনার্থী ক্যাম্পে এই ঘটনাটি ঘটে। মূলত এটি কোন ক্যাম্প নয়, এটি ছিল একটি পুরোনো কয়েদখানা। চীনা নীতির আদলে এ কয়েদখানায় অন্তত ২৭০ জন রোহিঙ্গা মুসলিমকে আটকে রাখে ভারতীয় পুলিশ।
রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভের (আরএইচআরআই) বিবরণ অনুসারে, গত ৬ মার্চ ২০২১ তারিখে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ জম্মুর মৌলানা আজাদ স্টেডিয়ামে বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের কথা বলে ১৬৮ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বেআইনিভাবে আটক করে। অথচ এদের প্রায় সবার কাছেই জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) কর্তৃক ইস্যুকৃত পরিচয়পত্র ছিল। এরপর আরও বেশ কিছু রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে একইভাবে আটক করে কয়েদখানায় আটকে রাখে পুলিশ। গত দুই বছর ধরে তাদের এভাবে রাখা হয়েছে।
এর প্রতিবাদে গত ঈদুল আজহার পর থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল নিপীড়িত রোহিঙ্গারা। কিন্তু এই বন্দী দশা থেকে মুক্ত হবার কোন উপায়ান্ত দেখছিল না তারা। তাই বাধ্য হয়ে নিজেরাই মুক্ত হবার জন্য জেল-পালানোর চেষ্টা করেছিলেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। এ সময় পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। ফলে বেশ কিছু রোহিঙ্গা মুসলিম আহত হয়। আহতদের মধ্যে পাঁচ মাসের এক শিশুও ছিল।
শিশুটি কাঁদানে গ্যাসে গুরুতর আহত হয়েছিল। জরুরী চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন ছিল, কিন্তু কোন চিকিৎসা সেবা মেলেনি। ফলে গত এক সপ্তাহ ধরে অসুস্থ থাকার পর নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে নির্মম মৃত্যু হয় তার।
https://twitter.com/Unofficialibbo/status/1683054145207668736
ভারতে ক্রমাগত মুসলিম বিদ্বেষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গণহত্যা থেকে রেহাই পেতে ভারত ও কাশ্মীরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারাও এ বিদ্বেষের শিকার হচ্ছে। প্রতিনিয়ত হয়রানি ও জেল-জুলুমের শিকার হচ্ছেন তারা। গত এক সপ্তাহে নতুন করে আরও ৭৪ রোহিঙ্গা মুসলিমকে বন্দী করেছে ভারতীয় পুলিশ।
তথ্যসূত্র:
——-
1. Baby dies after teargas fired at Rohingya trying to escape Indian detention centre
– https://tinyurl.com/4983eszs
2. India police arrest 74 Rohingya refugees in latest crackdown
– https://tinyurl.com/4zj9ra4z