ভারতের জনপ্রিয় বক্তা ও আলেম মুফতি সালমান আজহারিকে কথিত ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন।
মুফতি সালমান আজহারী মুম্বাইয়ের একজন সুন্নি আলেম ও সুন্নী ঘরানার জনপ্রিয় বক্তা। একই সাথে তিনি জামিয়া রিয়াজ-উল-জান্নাহ, আল-আমান শিক্ষা ও কল্যাণ ট্রাস্ট এবং দারুল আমানেরও প্রতিষ্ঠাতা। তিনি মিশরের জামিয়া আল-আজহার (আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। মুফতি সাহেবের বক্তৃতা মূলত মুসলিম তরুণদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এছাড়া তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকান্ডের সাথেও জড়িত।
গত ৩১ জানুয়ারি রাতে গুজরাটের জুনাগড় শহরের ‘বি’ ডিভিশন পুলিশ স্টেশনের কাছে একটি ওয়াজ মাহফিলে দেয়া মুফতি সালমান আজহারি সাহেবের কাটছাট করা একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
মুফতি সাহেব ছাড়াও মাহফিলের আয়োজক মুহাম্মাদ ইউসুফ মালেক ও আজিম হাবিব ওদেদারার বিরুদ্ধেও ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩বি (বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা প্রচার করা) এবং ৫০৫ (২) (জনসাধারণের মধ্যে বিশৃঙ্খলার জন্য সহায়ক বিবৃতি দেওয়া) ধারায় এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) দায়ের করেছে হিন্দুত্ববাদীরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে মুফতি সাহেবের বক্তৃতার সেই অংশ ভাইরাল হয় যেখানে তিনি বলেছিলেন, এখনো কারবালার শেষ ময়দান বাকি আছে, কিছু সময়ের অপেক্ষা মাত্র। এখন কুকুরদের সময় চলছে, সামনে আমাদের সময় আসবে। এরই প্রেক্ষিতে হিন্দুত্ববাদীরা তার উপর ‘হিন্দুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক ভাষণ’ দেওয়ার অভিযোগ আনে। তবে ইন্টারনেটের বিভিন্ন ফ্যাক্ট চেকাররা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উনার মূল বক্তব্যটি তুলে ধরার পর দেখা যায়, সেখানে তিনি মূলত চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত ও বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের উপর নির্যাতনের ব্যাপারেই বলেছেন।
এদিকে মুফতি সাহেবকে মুম্বাইয়ে তার ভিখরোলির বাসভবন থেকে ঘাটপোকার থানায় গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসা হয়। পরে তার মুক্তির দাবিতে থানার সামনে উনার সমর্থকরা জড়ো হয়। সেসময় হিন্দুত্ববাদী প্রশাসন মুফতি সাহেবের সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। উত্তেজনা বাড়তে থাকলে মুফতি সাহেব লাউড স্পিকারের মাধ্যমে তার সমর্থকদের বলেন, “আমি অপরাধী নই এবং এর জন্য আমাকে এখানে আনা হয়নি। তারা প্রয়োজনীয় তদন্ত করছে এবং আমিও তাদের সহায়তা করছি। আমার ভাগ্যে থাকলে আমি গ্রেপ্তার হতে প্রস্তুত। আপনারা যদি আমাকে ভালোবেসে থাকেন তাহলে দয়া করে রাস্তা খালি করে দিন।”