নেত্রকোনায় বহুল কাঙ্ক্ষিত বাইপাস সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। যে কারণে তিনভাগের একভাগ সড়ক নির্মাণেই শেষ হচ্ছে প্রকল্পের মেয়াদ। আর জমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা পাচ্ছেন না ক্ষতিপূরণ।
নেত্রকোনার উন্নয়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় শহরকে নিরাপদ রাখতে প্রায় এক যুগ ধরে বাইপাস সড়ক নির্মাণের দাবি ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সড়ক ও জনপদ বিভাগের উদ্যোগে বাইপাস সড়ক নির্মাণ কাজের প্রস্তাবনা পাস করালেও কোন দিক দিয়ে সড়ক যাবে, এ সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকার পর অবশেষে নেত্রকোনা ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের সদর উপজেলার চল্লিশা-বাগড়া-কোনিয়া-মেদনি-রাজুরবাজার পর্যন্ত বাইপাস সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করে।
স্থান নিয়ে টানা হেঁচড়া শেষে অবশেষে ২০২০ সালে তিনটি প্যাকেজে ২৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয় ১৩ দশমিক ২ কিলোমিটার সড়কের কাজ। কিন্তু এটিও যেন কচ্ছপ গতিতে চলছে। এর মধ্যে রয়েছে ৪ টি ব্রিজ ও ২২ টি কালভার্ট। ৬৫ এবং ৩৫ কোটি টাকায় তাহের ব্রাদার্স ও ৫৫ কোটি টাকায় জামিল ইকবাল কনস্ট্রাকশন কাজ পায়। এরমধ্যে রয়েছে ১০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৩ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, কাজ চালিয়ে গেলেও জমির টাকা দেয়নি সরকার। সেইসঙ্গে সড়কের কাজে মাটি ব্যবহার এবং কাজের নানা সরঞ্জামসহ ব্রিজ কালভার্টের ডাইভার্সনের কারণে কৃষিজমি নষ্ট হচ্ছে।
কুমড়ি এলাকার আব্দুল সমেদ বলেন, ‘জমিতো নিয়েছেই। চার কাঠা জমির ওপর ব্রিজ হইছে। টাকা একটাও পাই নাই। কিন্তু ওই সব জমি ছাড়াও কাজের ব্লক বালু ডাইভারশন করে রাখায় ধানের জমিতে চাষ করতে পারছে না কয়েক বছর ধরে। পুকুর জলাশয়ও বন্ধের পথে। ক্ষতিপূরণ দেবে বলেও দেয়নি। এরপর জমির পাশ থেকে কাটছে মাটি।’
কামরুন্নার নামে এক নারী বলেন, ‘জায়গা তো নিয়েছেই; একশর মতো গাছ কেটেছে, একটা পাই কড়িও দেয় নাই। পাশের পুকুরে মাছও চাষ করতে পারছি না।’
ব্লকের সাব-কন্ট্রাক্টর মোক্তার মিয়া জানায়, তারা যে জমি ব্যবহার করছে সেটির টাকা অগ্রিম দিয়েই করছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মো. আলাল হোসেন ও মো. বিপ্লব হোসাইন সমস্যার কথা স্বীকার করে কৃষকদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে জমি অধিগ্রহণের জটিলতাকেই কাজের ধীরগতির কারণ বলে উল্লেখ করেন।
তথ্যসূত্র:
১. এক-তৃতীয়াংশ কাজ হতেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ!
– https://tinyurl.com/5e8ahtkz