ইকরামাকে দেয়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভেচ্ছা বাণী-
‘শুভেচ্ছা স্বাগতম মুহাজির অশ্বারোহীর আগমন।’
কুরাইশ গোত্রের নেতৃস্থানীয় যে দু-তিনটি উপগোত্র ছিলো, ইকরামা ছিলেন তেমনই একটি গোত্রের সন্তান। পৈত্রিক ঐতিহ্যে ছিলেন অত্যন্ত সম্মানিত। একইভাবে ধন-সম্পদের দিক থেকেও ইকরিমার পরিবার ছিল বিখ্যাত। তিনি উম্মে হাকিম বিনতে হারিস বিন হিশাম বিন মুগীরাহকে বিবাহ করেছিলেন। তারা ছিলেন তিন ভাই- ইব্রাহিম, কাবির এবং নামার।
ইকরামা সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে মক্কায় মুগীরার গৃহে লালিত-পালিত হয়েছেন। তিহামার সর্বোত্তম শিক্ষকদের কাছে লেখাপড়া শিখেছেন। পাশাপাশি ঘোড়া চালানো, কুস্তি, রণবিদ্যায় পারদর্শিতা অর্জন করেন। এমনকি সমসাময়িকদের মাঝে তীরের সঠিক নিশানা লক্ষ্যভেদ করার ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্য অর্জন করেন।
**
ইসলাম ও মুসলিমদের সাথে শত্রুতায় অন্য সকলের চেয়ে বাবার মতোই অগ্রগামী ছিলেন ইকরামা।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে শত্রুতায় বদরের যুদ্ধে আবুল হিকাম বিন হিশামের কুফরের পতাকাতলে কুরাইশ বাহিনীতে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। বাহিনীটি আবু সুফিয়ান বিন হারবের বাণিজ্যিক কাফেলাকে রক্ষা করতে এসেছিল। কেননা, আবু সুফিয়ানের বাণিজ্যিক কাফেলাকে আক্রমণ করতে মুসলিম বাহিনী অগ্রসর হচ্ছিলেন। আর, আবু সুফিয়ান মক্কায় এ সংবাদ পাঠিয়ে মক্কার মুশরিকদের সাহায্য কামনা করেন। যদিও পরবর্তীতে আবু সুফিয়ান বিকল্প পথ তথা সমুদ্রতীর ঘেঁষে চলে যাওয়ায় মুসলিমদের হাত থেকে রক্ষা পেয়ে গিয়েছিলেন।
এদিকে আবু জাহেলের নেতৃত্বে মুশরিক বাহিনী বদরে উপস্থিত হল। সে লাত ও উজ্জার কসম খেয়ে বলল, মুহাম্মদকে পরাজিত না করে মক্কায় ফিরে যাবে না। বদর প্রান্তরে কুফফার বাহিনীর নেতৃত্ব দানকারী আবু জাহেলের ডানহাত ছিলো তার ছেলে ইকরামা। ইকরামার উপরই ভরসা করতো সে। কিন্তু আবু জাহেলের মৃত্যু ঐ বদর প্রান্তরেই নির্ধারিত ছিল!
বদর যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলো। আবু জাহেল কিছুক্ষণের মধ্যেই মুয়াজ ও মুয়াওয়াজ নামের অল্পবয়স্ক দু’জন আনসারী মুসলিম বালকের হাতে ধরাশায়ী হল। ইকরিমা দূর থেকে বাবার এ করুণ পরিণতি দেখছিলেন। মৃত্যুকালে বাবার শেষ চিৎকার তাঁর অন্তরকে বিদ্ধ করলো, যদিও প্রচণ্ড যুদ্ধের মধ্যে কিছুই করার ছিল না তাঁর। এমনকি ইকরামা স্বচক্ষে তাঁর পিতার বুকের উপর হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বসে হত্যা করতে দেখেছেন। কিন্তু পরাজয়বরণ করার কারণে আবু জাহেলের লাশ মক্কায় এনে দাফনও করতে পারেননি। তাকে ফেলে মক্কায় পালিয়ে আসতে বাধ্য হন। তখন মুসলিমরা অন্যান্য নিহত মুশরিকদের সাথে ইসলামের চরম দুশমন আবু জাহেলকেও বদরের কূপে নিক্ষেপ করেছেন।
**
পরাজয় আর পিতা হারানোর বেদনায় জ্বলছিলেন ইকরামা। ইকরিমার মত আরো যারা পিতা বা নিকটাত্বীয়কে হারিয়েছিল, তারাও রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগলো। এভাবেই একদিন মুসলিমদের সাথে কাফিরদের দ্বিতীয় যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠল এবং অবশেষে দু’পক্ষ মুখোমুখি হলো উহুদ প্রান্তরে।
উহুদের যুদ্ধে ইকরিমা একটি বিরাট অশ্বারোহী দলের নেতৃত্বে ছিলেন। এ যুদ্ধে ইকরিমাকে সঙ্গ দেবার জন্য সাথে ছিলেন তাঁর স্ত্রী উম্মে হাকীম এবং অন্যান্য মহিলারা। সেনাদলের পিছনের দিকে বাদ্য বাজিয়ে, চিৎকার করে মুশরিক সেনাদের উত্তেজিত করার জন্য তাদের রাখা হয়েছিল। এসকল মহিলাদের আরেকটি কাজ ছিল, কোন মুশরিক সেনা যদি পালাতে চায়, তবে তাকে তিরস্কার করে যুদ্ধে অবিচল রাখা।
উহুদের যুদ্ধে কুরাইশ বাহিনীর ডান দিকের নেতৃত্বে ছিলেন খালিদ বিন ওয়ালিদ এবং বাম দিকের একটি বিরাট অশ্বারোহী দলের নেতৃত্বে ছিলেন ইকরিমা। যুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে মুসলিমদের প্রবল আক্রমণের মুখে কুরাইশ বাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে পিছু হটতে বাধ্য হয়। মুসলিমদের একটি দলকে রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনড় থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পাহাড়ের গিরিপথ পাহারা দেওয়ার জন্য নিয়োজিত করেছিলেন এবং কোন অবস্থাতেই উক্ত স্থান ত্যাগ না করার আদেশ করেছিলেন। কুরাইশ বাহিনী পিছু হটে যাবার পর যুদ্ধলব্ধ সম্পদ লাভের আশায় এ দলটির অধিকাংশ সদস্য রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ ভুলে গিয়ে স্থান ত্যাগ করলেন। আরবের বিখ্যাত সমর কুশলী এবং ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধু ইকরিমা ও খালিদ মুসলিমদের এ স্থানচ্যুতির সুযোগে পেছন থেকে অশ্বারোহী বাহিনী নিয়ে আক্রমণ করে বসলেন এবং মুষ্টিমেয় যে কজন মুসলিম রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ মেনে সে স্থানটি পাহারা দিচ্ছিলেন তাঁদের হত্যা করে ফেলেন। অপ্রত্যাশিত এ আক্রমণে মুসলিম বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে যায়। এসময় বিপুল সংখ্যক অকুতোভয় সাহাবী দৃঢ়পদ থেকে যুদ্ধ করতে করতে শাহাদাতবরণ করেন। মুসলিমদের এ পরাজয় বদর যুদ্ধের প্রতিশোধ হিসাবে ধরে নিয়ে কুরাইশ বাহিনী মক্কায় ফিরে গেলো।
[এটা হযরত ইকরামা ইবনে আবু জাহেল রাদিয়াল্লাহু আনহুর জীবনীর ১ম অংশ, ইনশাআল্লাহ বাকি অংশগুলো পেতে চোখ রাখুন আল-ফিরদাউস নিউজে]
May allah open your eyes, heart & enter Paradise.
আমর ইবনে মাদীকারব (রাঃ) এ-র জীবনী আমরা শুনতে চাই।
vai eta ///…….eta 9 /11 nieye kor post er amer comment
vai…bishoita bujhlam na….islam to zihad er shomoi niroporad nari r shishu k hotta korte nished kore…r amader shahbi der juddho nitio tai chilo…r 9/11 er ghotonai to onek nari/shishu o mara gelo…tahole eta ki diner bepare barabari holo na???doya kore uttor diben…!!!