রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করার পর ‘ক্রসফায়ারে’র ভয় দেখিয়ে ৪ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ৬ সদস্যের ব্যাপারে। এমন একটি সংবাদ প্রচার কনে গত ৩১ জানুয়ারি “সময়ের কন্ঠস্বর”
উক্ত ৬ অপহরণকারী গোয়ন্দা সদস্যের মধ্যে একজন উপপরিদর্শক (এসআই), একজন সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই), একজন ড্রাইভার (কনস্টেবল) ও তিন জন কনস্টেবল।
গত শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে সামাজিক নিরাপত্তার অযুহাত দেখিয়ে বিভাগীয় তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত উক্ত ৬ ডিবি সদস্যদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হয়নি এসপি।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর নাম মো. সোহেল। তিনি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের নাজিরাবাগ হাসেম মিয়ার বাড়ি এলাকার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবারই ঢাকা জেলা পুলিশ পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেছেন তিনি।
অভিযোগপত্রে সোহেল উল্লেখ করেন, গত ২৯ জানুয়ারি (বুধবার) আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদরঘাট থেকে ব্যবহারের জন্য দুটি লুঙ্গি কিনে বাসায় ফিরছিলেন তিনি। সুত্রাপুর থানাধীন লালকুঠির নৌকাঘাটে পৌঁছানো মাত্র হঠাৎ করে পাঁচ-ছয়জন তাকে চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলে। তারা কেরাণীগঞ্জের ডিবির পরিচয় দিয়ে সোহেলকে হাতকড়া পরিয়ে নৌকায় তুলে বুড়িগঙ্গা নদীর ওপারে নিয়ে যায়।
এরপর কেরানীগঞ্জ আলম মার্কেটের সম্মুখে রাস্তার ওপরে নিয়ে নম্বরপ্লেটবিহীন সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তোলে সোহেলকে। একটি কালো রঙের কাপড় দিয়ে সোহেলের চোখ বেঁধে তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় তারা। সেখানে নিয়ে কাটার-প্লাস দিয়ে চেপে সোহেলের হাতের আঙুল ও নখ জখম করা হয় এবং লাঠি দিয়ে বেদম পেটানো হয় তাকে।
এক পর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্র মাথায় ঠেকিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে সোহেলের কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে তারা। টাকা না দিলে মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পাঠানোর, এমনকি ক্রসফায়ারে ফেলে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয়। এরপর ভুক্তভোগী সোহেলের ব্যবহৃত সিম নং-০১৩০৯৯২১৫০৬ ও ০১৭৭০৫৪৬৫৩৩ থেকে তার পরিবারের দুটি মোবাইল নম্বরে কল করে তারা। কখনো তারা নিজেরা কথা বলে, কখনো সোহেলকে দিয়ে পরিবারের কাছে মুক্তিপণের টাকা চায়। টাকা দিলে সোহেলকে ছেড়ে দেবে, নইলে ক্রসফায়ারে দেবে বলে শাসানো হয় তার পরিবারের সদস্যদের।
এক পর্যায়ে সোহেলের স্ত্রী-বোনসহ পরিবারের সদস্যরা মুক্তিপণ দিতে রাজি হন। অপহরণকারীদের কথামতো ওই রাতেই টাকা নিয়ে সোহেলের পরিবার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ মোড়ে যায়।
তবে সেখানে তারা দেখা না করে আবার বছিলা ব্রিজে যেতে বলে সোহেলের স্বজনদের। বছিলা ব্রিজে যাওয়ার পর সোহেলের পরিবারের তিন সদস্যকে সাড়ে চার লাখ টাকাসহ মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। টাকা নিয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তারা বিভিন্ন কাগজে সই নিয়ে সোহেলকে শিখিয়ে দেয়া কথাবার্তা মোবাইলফোনে ভিডিও আকারে ধারণ করে।
অভিযোগপত্রে সোহেল বলেন, বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং হুমকি দিয়ে তারা বলে- এসব বিষয় ভবিষ্যতে যদি কারও কাছে প্রকাশ হয়, তাহলে আমাকে ও পরিবারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হবে। নয়তো ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হবে।
অভিযোগপত্রে সোহেল আরও বলেন, ডিবি পুলিশ পরিচয়দাতাদের আমি দেখলে চিনতে পারব, তাদের ভেতরে ডাকাডাকির কারণে আমি একজনের নাম রাজিব বলে জানতে পারি।
এভাবেই এই ত্বাগুতী প্রশাসন জিম্মি করে রেখেছে পুরো জনগণকে, এধরণের ঘটনাকে তারা ধামাচাপা দিতে কখনো কখনো সন্ত্রাসী বিরুধী অভিযানের আড়ালে হত্যা করা হয় নিরাপরাধ সাধারণ মানুষকে। এই দলগুলোর সদস্যরা যতটানা মানুষের কল্যানে কাজ করেছে এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সাধারণ জনগণকে হয়রানীর মাধ্যমে লুটেপুটে খেয়েছে, আর এতে যখনই তারা ব্যার্থ হয়েছে তখনই তাদের উপর চালানো হয় ক্রসফায়ার। সাধারণ মানুষকে বুঝ দিতে চালিয়ে দেওয়া হয় কথিত বন্দুক যুদ্ধের নাটক