‘লকডাউন’ যে সংস্থাগুলো প্রয়োগ করবে, তাদের মধ্যে না আছে আলোচনা, না কোনো প্রস্তুতি, না পরিকল্পনা। তারা তাকিয়ে আছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনার দিকে। অধিদপ্তর যেভাবে বলবে, সেভাবে কাজ করবে, এমনই ইচ্ছা তাদের। গতকাল সোমবার সকালে সংস্থাগুলোর কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানিয়েছে প্রথম আলো।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে রোগটির উৎপত্তিস্থল চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম কঠোরভাবে ‘লকডাউন’ ব্যবস্থা জারি করে কর্তৃপক্ষ। সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে উহানে লকডাউন ঘোষণার পর শহর ঢোকা ও বেরোনো বন্ধ হয়ে যায়, অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় বের করাও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। খোলা রাখা হয় শুধু খাবার ও ওষুধের দোকান। শুরুর দিকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা না হলেও পরে এক পরিবারের একজনকে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আগেই ছুটিতে ছিল, সেই ছুটি বাড়িয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করে। দিন চারেক আগে, যুক্তরাজ্যের ঐতিহ্যবাহী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে লিখেছে, লকডাউনের প্রভাব কতটা কী হবে, তা নিয়ে সংশয় থাকলেও এর সুফল পায় চীন। একই পদ্ধতি অনুসরণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে তাইওয়ান ও সিঙ্গাপুর।
বাংলাদেশ কী করছে? রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ও এপিডেমিওলোজিস্ট মুশতাক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নির্দেশনা জারি করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
আজ সোমবার ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লকডাউন–সম্পর্কিত কোনো নির্দেশনা এখনো পাননি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল হাই প্রথম আলোকে বলেন, কোথাও লকডাউন করা হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত আসবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে। অধিদপ্তর এখনো কিছু জানায়নি। সিদ্ধান্ত এলে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইনে যেভাবে বলা আছে, সেভাবে কাজ করবেন তাঁরা। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ ইমদাদুল হক বলেন, এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
লকডাউন বাস্তবায়নের কাজে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিটি করপোরেশনকে প্রশাসনের সহযোগিতা করার কথা। লকডাউন হলে এর আওতায় থাকা মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণের কাজগগুলো কীভাবে হবে, তা জানতে চাইলে গতকাল দুপুরের দিকে প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত লকডাউনের নির্দেশনা এলে কী করতে হবে, সে ব্যাপারে কোনো চিঠিপত্র আসেনি। কোনো সমন্বয় সভা হয়েছে কি না, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁর জানা নেই। তাঁর টেবিলে কোনো চিঠিপত্র আসেনি। ঢাকার জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খানও বলেছেন, একই কথা। নির্দেশনা পেলে তবেই ব্যবস্থা।
Right talk