সরকারের দায়িত্ব অবহেলায় মারাত্মক মৃত্যু ঝুঁকিতে দেশবাসী

    0
    929
    সরকারের দায়িত্ব অবহেলায় মারাত্মক মৃত্যু ঝুঁকিতে দেশবাসী

    করোনা ভাইরাসের কারণে সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রাও স্থবির হয়ে পড়েছে । সারাদেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন । ব্যাপক দুর্নীতিগ্রস্ত বাংলাদেশ সরকারের প্রথম থেকেই অদায়িত্বশীল আচরণের কারণে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণকে । স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এ পর্যন্ত ছয় ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন । কিন্তু অনেকের আশংকা পর্যাপ্ত পরীক্ষার কারণে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের ও আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে না ।

    গত ২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দৈনিক যুগান্তরের রিপোর্টে বলা হয়েছে ,
    “ঢাকাসহ দেশের ১৪ জেলায় মঙ্গলবার বিকাল থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনাভাইরাসে তাদের মৃত্যু হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হতে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বাড়ি লকডাউন করে পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।”

    এভাবে নিয়মিত গতিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে । করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে পরিস্থিতি উন্নয়নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গুলোর

    একটি হচ্ছে পর্যাপ্ত টেস্টের ব্যবস্থা করা এবং আক্রান্তদের আইসোলেশনে রেখে নিবিঢ় চিকিৎসার সুযোগ নিশ্চিত করা । কিন্তু জনগণের সম্পদ আত্মসাৎকারী সরকারের নূন্যতম চিকিৎসা তো দূরে থাক টেস্টের ব্যবস্থা করতেও ব্যর্থ হচ্ছে । টেস্টের জন্য পর্যাপ্ত কিটও সংগ্রহ করতে পারেনি এই দুর্নীতিবাজ সরকার ।

    করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে পরিত্রাণ পেতে বেশি বেশি নমুনা পরীক্ষা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কারণ যত বেশি টেস্ট করা হবে ততই উঠে আসবে আসল চিত্র। কিন্তু বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ জনগোষ্ঠীর বিপরীতে পরীক্ষা করার হার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম।

    আইইডিসিআরের তথ্য অনুযায়ী, ১৬ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার এই দেশে গতকাল পর্যন্ত প্রতি ১০ লাখে পরীক্ষা হয়েছে ১০ জনের। পৃথিবীর মধ্যে নমুনা পরীক্ষার হার এটাই সর্বনিম্ন।

    বাংলাদেশে যেখানে করোনা আক্রান্তের লক্ষণ দেখা গেলে টেস্ট না করে ঘরে থাকতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বিশ্বের অপরাপর সচেতন দেশসমূহ একজন ব্যক্তিকে দুইবার টেস্ট করছে । অপরদিকে দিকে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার জন্য চিকিৎসকদের পিপিই দিতে ব্যর্থ হলেও দূর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তারা ঠিকই পিপিই দখল করে নিয়েছে । এদিকে চিকিৎসকরা কেউ কেউ মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা দিলেও অনেক হোম করেনটাইনে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন । যার ফলে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ ।

    নানা জরিপে উঠে আসছে দেশে করোনা ভাইরাস ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ার কথা । তাই ইতিমধ্যে দেশছাড়া শুরু করেছেন কূটনীতিকরা । যৌক্তিক কারণে ধারণা করা হয় এ দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে প্রবাসীদের মাধ্যমে । করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত দেশগুলো থেকে আগত প্রবাসীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সরকার । কমিউনিটি পর্যায়ে ভাইরাস ছড়ানোর সুযোগ করে দেবার পর তড়িঘড়ি করে সারাদেশ লকডাইন করে। মুজিববর্ষের শিরকী আয়োজনে শত শত কোটি টাকার বাজেট ও আয়োজনে কোনো ঘাটতি না থাকলেও চিকিৎসা ব্যবস্থার সব কিছুতেই ঘটতি ও ত্রুটি দেখা যাচ্ছে । যা জনগনের কষ্টের টাকার নিয়ে জনগণের সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছু নয় ।
    এভাবে অদক্ষতার পরিচয় দিতে থাকলে বিশ্লেষকরা মনে করেন মৃতের সংখ্যা অনেক বাড়তে পারে । যা দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য বিপদজনক ।


    লেখক: রেদোয়ান সায়িদ, ইসলামী চিন্তাবিদ।

    মন্তব্য করুন

    দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
    দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

    পূর্ববর্তী নিবন্ধভারতে করোনা হেল্পলাইন নম্বরে বারবার ফোন করেও উত্তর মিলছে না, বাড়ছে ক্ষোভ
    পরবর্তী নিবন্ধআল্লাহর ক্ষমা পাওয়ার ৪টি শর্ত