সরকারের অব্যবস্থাপনায় ঢাকায় ফিরতে পথে-ঘাটে পোশাকশ্রমিকদের ঢল

0
815
সরকারের অব্যবস্থাপনায় ঢাকায় ফিরতে পথে-ঘাটে পোশাকশ্রমিকদের ঢল

বেসরকারি ও গার্মেন্টসকর্মীদের ঢাকায় ফিরতে দৌলতদিয়া ঘাটে প্রচণ্ড ভিড় চলছে আজ শনিবার দুপুর থেকেই। এতে সামাজিক দূরত্ব মানতে পারছে না তারা। ফলে করোনাভাইরাস ঝুঁকি মাথায় নিয়ে অসংখ্য মানুষ শনিবার দৌলতদিয়া ফেলি ঘাটে এসে ভিড় করেছে পদ্মা পাড়ি দেয়ার জন্য। লঞ্চ ও অন্য ট্রলার পারাপার বন্ধ থাকায় শত শত মানুষ গাদাগাদি করে ফেরিতে পার হচ্ছে।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার কর্মমুখী মানুষ দৌলতদিয়া- পাটুরিয়া নৌ-পথ পাড়ি দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছুটছেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ফরিদপুর-দৌলতদিয়া মহাসড়কে পায়ে হেঁটে, ভ্যান-ট্রলি এবং পিকআপ ভ্যানে করে নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটছেন পোশাকশ্রমিকরা। শনিবার সকাল ১০টার দিকে এমন চিত্র দেখা যায় খুলনা-দৌলতদিয়া মহাসড়কে।

বিআইডব্লিউটিসি’র দৌলতদিয়া ঘাট ম্যানেজার আব্দুল্লা রনি জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে এখন ১৩টি ফেরি চলাচল করছে। তবে আজ শনিবার থেকে গাড়ির চেয়ে মানুষই বেশি পার হচ্ছে। ফেরির সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকায় একটা ফেরিঘাটে ভিড়ার সাথে সাথেই তাতে ওঠার জন্য মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। করোনা ছুটি শেষ হওযায় বেসরকারি চাকরিজীবি ও গার্মেন্টসকর্মী নারী-পুরুষ এক সাথে প্রত্যেক ফেরিতেই ভিড় করে পার হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, খুলনা,ফরিদপুর-দৌলতদিয়া মহাসড়কের বিভিন্ন বাসট্যান্ডে ঢাকামুখী যাত্রীরা কেউ হেঁটে যাচ্ছেন আবার যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা কিছুটা ভালো তারা ভ্যান বা পিকআপে করে ছুটে চলছেন ঢাকার দিকে। অতি কষ্ট করে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত আসতে এলাকা ভিত্তিক প্রতিজনের ভাড়া ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা লেগেছে। ভাড়া যেখানে ২ শ’ থেকে আড়াই শ’ টাকা আর সেখানে এক স্টপেজ থেকে অন্য স্টপেজে যাওয়ার জন্য ভাড়া গুণতে হচ্ছে এক শ’ টাকা। তবুও অতিরিক্ত টাকা দিয়েই যাচ্ছেন পোশাকশ্রমিকরা।

ঢাকার মহাখালির পোশাক কারখানার শ্রমিক গোলেজান বিবি জানান, কারখানা খুলে গেছে তাই যাচ্ছি। আজ কারখানায় উপস্থিত না হতে পারলে যে কয়েক দিন ছুটি পাইছি সে কয়েক দিন অনুপস্থিত দেখাবে কর্তৃপক্ষ। যার কারণে অতিরিক্ত টাকা দিয়েই কারখানায় যাচ্ছি। মহাসড়কে মানুষের ঢল হলেও ওই ঢলেই তাদেরও ভেসে গেলেও কারখানায় শনিবারের মধ্যে যেতেই হবে। সাইদুল নামে আরো এক পোশাক শ্রমিক বলেন, আমি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করি, কুষ্টিয়া থেকে দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত আসতে তার লেগেছে সাড়ে তিন শ’ টাকা পথে যে ভাড়া তার চেয়ে পাঁচ-সাত গুণ ভাড়া চাচ্ছে পিক-আপ ভ্যানের চালকরা, আমার কাছে এত টাকা নাই তাই বাধ্য হয়েই মোবাইল কম দামে বিক্রি করে দিয়ে যাচ্ছি।

গোয়ালন্দ ঘাট থারার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আশিকুর রহমান বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের সব মহাসড়কে আঞ্চলিক গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এছাড়া কাটা গাড়িও বন্ধ আছে এবং এই মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। গতকাল থেকে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-পথ পারি দিয়ে তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধআল্লাহর ক্ষমা পাওয়ার ৪টি শর্ত
পরবর্তী নিবন্ধজোর করে মুসলিমদের মৃতদেহ পুড়িয়ে দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা