উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়ল সিটি ব্লক

1
510
উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়ল সিটি ব্লক

কক্সবাজারের টেকনাফে শাহপরীর দ্বীপে ১৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিরক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। এরই মধ্যে অন্তত ১০টি স্থানে জোয়ারের পানির আঘাতে সিসি ব্লক ধসে পড়েছে। এতে নির্মাণাধীন এ বেড়িবাঁধের টেকসই ও স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আর উদ্বোধনের আগেই বেড়িবাঁধে ধস দেখে হতাশ ওই এলাকার প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। স্বস্তির বদলে তাদের মাঝে আবারও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) দাবি, নকশার কিছুটা ত্রুটি থাকার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নকশা পরিবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তবে বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।

অন্যদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, বাঁধ নির্মাণকাজে তড়িঘড়ি করায় জোয়ারের পানিতে সিসি ব্লকগুলো সরিয়ে মাটি সাগরে তলিয়ে যাচ্ছে। বাঁধ নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। এর মধ্যেই ১০টির বেশি স্থানে সিসি ব্লকগুলো ধসে পড়ছে। ১৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন বাঁধের দক্ষিণ পাশের মাঝের পাড়া, দক্ষিণপাড়ার আধা কিলোমিটার অংশে ডাম্পিং ব্লক কম দেওয়ায় জোয়ারের পানির আঘাতে সিসি ব্লক উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়ছে।

পাউবো সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ২২ জুলাই শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়ার বেড়িবাঁধের ৬৮ নং ফোল্ডারের একাংশ সাগরের জোয়ারের পানির তোড়ে বিলীন হয়ে যায়। সংস্কারের অভাবে প্রায় তিন কিলোমিটার পর্যন্ত বেড়িবাঁধ অরক্ষিত হয়ে শত শত পরিবার বসতঘর-দোকানপাট-মসজিদ-মাদ্রাসা ও রাস্তাঘাট সাগরে বিলীন হয়ে যায়। দীর্ঘ ভোগান্তির পর অবশেষে ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় ২ দশমিক ৬৪৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কারে ১০৬ কোটির টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে এ প্রকল্পে আরও ৪০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়।

গত ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ শুরু করেন নারায়ণগঞ্জের সেনাকান্দায় নৌবাহিনীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়াকর্স লিমিটেড। এর পর তারা কাজটি সহযোগী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসটিএ গ্রুপে বরাদ্দ দেন। চলতি ২০২০ অর্থবছরের জুন মাসে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ রক্ষার বেড়িবাঁধটি বঙ্গোপসাগরের তীরঘেঁষা। জোয়ারের সময় ঢেউয়ের পানি নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধে আছড়ে পড়ছে। পশ্চিমপাড়া, মাঝেরপাড়া থেকে দক্ষিণপাড়া পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধের সাগরের অংশে দুই রকমের সিসি ব্লক বসানো হয়।

স্থানীয় ফজল আহমদ বলেন, গত বছর বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হলে এলাকার শত শত মানুষ আশার আলো দেখতে পেলেও বাঁধে ধসের খবরে আবারও স্থানীয়রা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

সাবরাং ইউপির সদস্য নুরুল আমিন বলেন, সাত বছর অরক্ষিত থাকার পর বাঁধ নির্মাণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিয়েছিল। কিন্তু বাঁধের কাজ শেষ না হতেই জোয়ারের পানিতে যেভাবে সিসি ব্লকগুলো ধসে যাচ্ছে, তাতে পুরো দ্বীপের মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ভাঙন থেকে রক্ষা করতে হলে এখনই জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

স্থানীয় প্রবীণ শিক্ষক জাহেদ হোসেন বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রথম দিকে কাজগুলো করতে দেখেছি। কিন্তু দক্ষিণপাড়া অংশে যেখানে সাগরের আগ্রাসন বেশি, সেখানে এসে কাজে তাড়াহুড়া করতে দেখা গেছে। প্রতিরক্ষা ব্লক বসানোর আগে বিছানো বালু পর্যন্ত রোলার গাড়ি দিয়ে ভালোভাবে চেপে দেওয়া হয়নি। তাই জোয়ারের আঘাতে ব্লকগুলো ধসে পড়ছে। নিয়মিত দেখভালের অভাবেই এমন হয়েছে। আমাদের সময়

১টি মন্তব্য

Leave a Reply to Save The Muslim প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধসোমালিয়া | মুজাহিদদের সফল হামলায় ৫ মুরতাদ সৈন্য নিহত ও আহত
পরবর্তী নিবন্ধসিরিজ নৃশংস ঘটনায় আতঙ্কিত মানুষ