শেরপুরে শাহবন্দেগী ইউনিয়নের শেরুয়া বটতলা-ভবানীপুর ও শেরুয়া-ধুনটমোড় বাইপাস রাস্তাটির বেহাল অবস্থা। আর এই রাস্তাটি দিয়ে উপজেলার শাহবন্দেগী, মির্জাপুর, ভবানীপুর, বিশালপুর ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের শহরের সাথে সংযোগ এবং চলাচলের রাস্তা। কিন্তু এখন এই রাস্তার এতই বেহাল অবস্থা যে, দূর থেকে তাকালে মনে হবে রাস্তা নয়, যেন একটি মরা খাল, অবস্থা এমন যে কোথাও মনে হয় ধান রোপনের জন্য চাষ করা জমি। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী রাস্তাটি মেরামতের দাবি জানালেও তা পূরণ হয়নি বরং পথচারীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেরপুর উপজেলার ১০নং শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের শেরুয়া বটতলা বাজার থেকে শুরু করে এক কিলোমিটার পাকা রাস্তা ও শেরুয়া বটতলা থেকে ফরেস্ট রোড পৌর মেয়রের বাড়ি হয়ে ধুনটমোড় তালতলা পৌঁছানোর রাস্তাটির অবস্থা নাজুক। এই রাস্তা দিয়ে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত। গত দুই বছরেও সংস্কার বা মেরামত না হওয়ায় বড় বড় খানাখন্দ ও গর্তে পরিনত হয়েছে রাস্তাটি। সামান্য বৃষ্টিতেই কাঁদামাটিতে একাকার রাস্তাটি। পানি নিষ্কাশনের কোন সুব্যাবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই দীর্ঘদিন যাবৎ নানা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে মৎস্য খামার, বাছাই মিল, চাতাল ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও এলাকার বাসিন্দাদের।
ব্যস্ততম এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন কৃষক তার পণ্য নিয়ে হাট বাজারে আসে। এই রাস্তাটিতে প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি ছোট বড় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কেউ অসুস্থ হলে এই রাস্তা দিয়েই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে হয়। এছাড়ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লাখ লাখ মানুষকে প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। এই রাস্তা দিয়েই এসব মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম।
কিন্তু মেরামতের অভাবে রাস্তাটি এখন চলাচল অযোগ্য। ফলে বাজারে মালামাল বহনে ও গাড়ি চলাচলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। যানবাহন দূরের কথা, পায়ে হেঁটেও এখন এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা কষ্টকর। ফলে ব্যবসায়ীরা তাদের মালামাল নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে যেতে পারছে না। কৃষক মাঠে উৎপাদিত তাদের পণ্য হাটবাজারে নিতে পারেছ না। পথচারীদের চরম কষ্টে যাতায়াত করতে হচ্ছে। সকলের একই প্রশ্ন এ ভোগান্তির শেষ কোথায়?
সিএনজি চালক মশিউর রহমান, রাজু আহম্মেদ, আরিফ বলেন, আমরা হাইওয়ে দিয়ে সিএনজি চালাতে পারি না এই বাইপাস দিয়ে ভবানীপুর পর্যন্ত চলতে হয়। কিন্তু এই রাস্তার বেহাল অবস্থা হওয়ায় যাত্রি নামিয়ে দিয়ে কষ্ট করে পার হতে হয়। অনেক সময় সিএনজি উল্টে যায়। অটোভ্যান, ভটভটি চালকরা বলেন, অবস্থা এতই খারাপ যে, এই রাস্তা দিয়ে যাত্রি ও মালামাল নামিয়ে দিয়ে পার হতে হয় আমাদের।
এলাকার ব্যবসায়ী নুরু, শামিম, রায়হান, পারভেজ জানান, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছে এলাকাবাসী। আমরা সরকারের বিভিন্ন দফতরে বহুবার অভিযোগ করেছি। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি।
১০নং শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড সদস্য ছানোয়ার হোসেন জানান, রাস্তাটি দ্রুত মেরামতের দাবিতে গত জুন ২০১৯ সালে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে ২ জুন ২০১৯ সালে ‘বগুড়ার শেরপুরের শেরুয়া এলাকায় পানি নিষ্কাশনে ড্রেন নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর’ শিরোনামে বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু তাতে কোনো কাজে আসেনি। এ ব্যাপারে সরকারি বিভিন্ন দফতরে বলা হলেও তা আজ পর্যন্ত সংস্কার করা হয়নি। নয়া দিগন্ত