ক্রমেই যেন ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে মাদক। ঢাকাসহ সারা দেশে মাদকের ব্যবহার বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। দেশের পুরো সীমান্ত সিল থাকার পরও ঠিক আগের মতোই দেশে ঢুকছে মাদক।
তবে মাদকের সহজলভ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদক দেদার ঢুকছে দেশের অভ্যন্তরে। অলিগলিতেই মিলছে ক্রেজি ড্রাগস ইয়াবা কিংবা হেরোইন-ফেনসিডিল। এমনকি ভার্চুয়াল হাটে অর্ডার দিয়েও মিলছে মাদক। তবে সবচেয়ে উদ্বেগের খবর হলো, দেশের রুট ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে মাদক। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (ডিএনসি) মহাপরিচালক মুহাম্মদ আহসানুল জব্বার বলেন, ‘ আগে বেসরকারি কুরিয়ার সার্ভিস দিয়ে মাদক পাচার করা হলেও এখন সরকারি ডাকব্যবস্থাকে ব্যবহার করছে পাচারকারীরা এমন খবর আমাদের কাছে আসছে।
এসব মাদক অল্প সময়ের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে মাদকের রুট প্রতিনিয়ত বদল হচ্ছে। ইয়াবার নতুন রুট এখন উপকূলীয় অঞ্চলের নৌপথ। টেকনাফ থেকে কুয়াকাটা, পাথরঘাটা, পিরোজপুরের তেলিখালী হয়ে মোংলা পোর্টে যায় ইয়াবার বড় বড় চালান। আবার কুয়াকাটা-পাথরঘাটা থেকে বরিশাল হয়ে ঢাকায় আসার আরেকটি রুট আছে। এসব নৌপথের প্রতিটিতেই ইয়াবার চালান খালাস করা হয়।
পরে তা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জে যায় নৌপথে। একপর্যায়ে ঢাকা শহরের পাশাপাশি সব বিভাগীয় শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে সারা দেশের আনাচ-কানাচে পৌঁছে যায় ইয়াবা।
জানা গেছে, নিরাপত্তার কথা ভেবে বর্তমানে অনেকে আবার ভার্চুয়াল হাটে অর্ডার করে মাদক সংগ্রহ করছেন। যদিও হোম ডেলিভারিতে দাম একটু বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাদক উদ্ধার হয় মাত্র ১০ শতাংশ। দেশে প্রতিবছর মাদকের জন্য কমপক্ষে ব্যয় হয় ১০ হাজার কোটি টাকা। আর মাদকসেবীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি। তবে মাদকের সহজলভ্যের কারণে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। নেশার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়াচ্ছে। আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে কিশোর অপরাধীর সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খুন, ছিনতাই, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, চাঁদাবাজি, ইভ টিজিংয়ের মতো অপরাধ। পুলিশ বলছে, যারা ধরা পড়ছে তারা মূলত মাদক বহনকারী। তবে মূল ব্যবসায়ীরা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সূত্র বলছে, গাড়ির ফুয়েল ট্যাঙ্ক থেকে সবজিভর্তি পিকআপ, কিছুই বাদ দিচ্ছে না মাদক কারবারিরা। চোরাকারবারিরা অভিনব সব কায়দায় ঢাকাসহ সারা দেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে মাদক। প্রাইভেট কারের মবিলের চেম্বারে প্লাস্টিকের প্যাকেটে পুরে রাখা হচ্ছে ইয়াবা। সাইলেন্সার কেটে গুঁজে রাখা হচ্ছে গাঁজার প্যাকেট। কাঁচামালের সঙ্গেও ইদানীং ঢাকায় আসছে মাদকের চালান। কাভার্ড ভ্যানের ভিতর আলাদা চেম্বারও বানিয়েছে অনেকে, যা নিয়ন্ত্রণ করা যায় চালকের সামনে থাকা বিশেষ সুইচের মাধ্যমে। প্রতিটি চালান ডেলিভারিতে চালক ও হেলপার ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে পাচ্ছে। মাদক পাচারে জড়িয়ে পড়ছে নারী ও শিশুরাও। ঢাকায় বেড়েছে গাঁজার সরবরাহ। বিডি প্রতিদিন
পোস্টটিতে যেই ছবিটি দেওয়া হয়েছে, সেটি যদি মহিলার ছবি হয়ে থাকে, তাহলে বদলানোর অনুরোধ।