ফিলিস্তিনে এই মুহূর্তে করোনার ভয়কেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি জঙ্গিবিমানের বোমার ভয়। ওপর থেকে পড়ছে বোমা, চারদিক থেকে আসছে গোলা। সেই বোমা হামলা থেকে বাঁচাই যেন এখন তাদের একমাত্র কাজ। খবর এএফপির।
ফিলিস্তিনে এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৪ হাজার ৫৩২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছেন ৩ হাজার ৪৪৮ জন। আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৬৪৩ জন।
এই করোনার মধ্যেই চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে (১০ মে থেকে) ফিলিস্তিনে সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। ফিলিস্তিনিদের ওপর প্রতিদিনই হামলা জোরদার করছে ইসরাইল। কয়েকদিন ধরে চলা বিমান হামলার পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি লক্ষ্য করে গোলা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এই হামলায় এপি ও আলজাজিরার মতো গণমাধ্যমের অফিসসহ শত শত ভবন মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। বিধ্বস্ত ভবনের ধ্বংসাবশেষের নিচে রাতদিন চলছে উদ্ধার অভিযান। এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে ২২০ ফিলিস্তিনি যার মধ্যে ৬৩ জনই শিশু। হামলা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং হামলা আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
এমন পরিস্থিতিতে করোনার ঝুঁকির চেয়ে বিমান হামলাকেই বেশি ভয় পাচ্ছে গাজাবাসী। জীবন বাঁচাতে দলে দলে ভিটেমাটি ছাড়ছে তারা। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইতোমধ্যে অর্ধ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি ঘরবাড়ি ছেড়েছে। অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্কুল-কলেজের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছে তারা। কিন্তু এসব আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব মানার কোনো বালাই নেই। অল্প জায়গায় বহু মানুষ একসঙ্গে গাদাগাদি করে থাকছে।
হাজার হাজার এসব উদ্বাস্তুর একজন উম্মে জিহাদ ঘাবাইন। ইসরাইলি বিমান হামলা থেকে বাঁচতে চলতি সপ্তাহে তিন সন্তানসহ একটি আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন তিনি। আরও অনেকের মতো তারও করোনার ভয় রয়েছে। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে তার কিছুই করার নেই। করোনার ঝুঁকি নিয়ে এএফপিকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমি করোনাকে ভয় পাই। কিন্তু ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র এর চেয়েও বেশি ভয়ংকর।’ তার আট বছর বয়সী ছেলে বলে, ‘এই মুহূর্তে ক্ষেপণাস্ত্রই আমাদের বেশি মারছে।’