ভারি বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। ফলে বন্যার পদধ্বনি দেখা দিয়েছে তিস্তা অববাহিকায়। এতে তিস্তা চরের মানুষ আতংকিত হয়ে পড়ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তা চরের কয়েকশত একর জমির পাট, বাদাম, মরিচ, তিল, ধান বীজততলা ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। চরের বেশ কিছু ঘরবাড়িতে পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
শনিবার বিকেল ৩টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি ৫২.৫০ বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, শনিবার বেলা ৩টার পর থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি ৫২.৪৫ বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া পর বিকাল ৩টার তিস্তার পানি ৫২.৫০ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা গেছে, গত দুই দিন ধরে উজানের পানি ও ভারী বর্ষণের কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সানিয়াজান, সিঙ্গীমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী এলাকায় জলাবন্ধতা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধা সিন্দুর্না, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা,পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা, ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানি প্রবেশ করছে। এতে কৃষকের পাট, কুমড়া, মরিচ, বাদাম, তিল, ধান বিজ তলা গত দুইদিন ধরে পানির নিচে তলিয়ে আছে।
তিস্তা চরের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, নদীর পানিতে ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বর্ষা মৌসুমে ধান রোপন নিয়ে দুচিন্তায় আছি।
তিস্তার ব্যারাজ এলাকার জেলে আকবার আলী বলেন, গত দুই দিন থেকে তিস্তা পানি বৃদ্ধি পাওয়াতে আমরা নদীতে মাছ ধরতে পারছি না আর জালেও মাছও উঠছে না।
হাতীবান্ধা উপজেলার চর সিন্দুর্না গ্রামের মফিজার রহমান বলেন, হঠাৎ করে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার আমরা আতংকে আছি। যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে চর এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে। সেই সাথে প্রচুর ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
এবিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজানের পানি ও বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শনিবার বিকেল থেকে তিস্তার পানি বিপদসীমা ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।