৯/১১ পরবর্তী আমেরিকা, ৩০ হাজারের অধিক মার্কিন সৈন্যের আত্মহত্যা

3
1838
৯/১১ পরবর্তী আমেরিকা, ৩০ হাজারের অধিক মার্কিন সৈন্যের আত্মহত্যা

ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে এসেছে যে বৈশ্বিক জিহাদী তানযিম আল-কায়েদা কর্তৃক পরিচালিত ৯/১১ হামলার পরবর্তীতে আমেরিকায় ৩০ হাজারেরও বেশি মার্কিন সৈন্য আত্মহত্যা করেছে, আর যার সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলছে।

গবেষণায় বলা হয়, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক কথিত “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক যুদ্ধ” পরিচালনা অবস্থায় ও যুদ্ধ ফেরত ৩০ হাজার ১ শত ৭৭ জন আমেরিকান সৈন্য আত্মহত্যা করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে মার্কিন সৈন্যদের মধ্যে আত্মহত্যার হার সর্বোচ্চ, যা গত তিন বছরে সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থায় ছিল। ২০০১ সালে আমেরিকার কথিত “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে”র পর থেকে মার্কিন সৈন্যদের মধ্যে আত্মহত্যা প্রবণতা ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে চলেছে বলে গবেষণায় জানানো হয়।

গবেষক সুইট (Suitt) মার্কিন সৈন্যদের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে যুদ্ধক্ষেত্রে বহুলাংশে উন্নত বিষ্ফোরক ডিভাইস বা IED ব্যবহারের কারণে মস্তিষ্কে আঘাতের ফলে সৃষ্ট আহতাবস্থার প্রতি দোষারোপ করেন।

তিনি উল্লেখ করেন, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান মস্তিষ্কে আঘাতপ্রাপ্ত সৈন্যদেরকেও যুদ্ধক্ষেত্রে থেকে ফিরিয়ে আনার অনুমতি দেয়, কারণ তা সৈন্যটিকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করতে পারে।

গবেষক সুইট মার্কিন সেনাবাহিনীর ইউনিট রক্ষার দায়িত্বে থাকা সার্জেন্ট ডমিনিক ম্যাকড্যানিয়েলের ঘটনা বিবৃতিতে উদাহরণ স্বরুপ তুলে ধরে।

গত ২০০৫ সালের এক আইইডি বিষ্ফোরণে ডমিনিক মস্তিষ্কে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তাকে মার্কিন সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল। পরে সে মারা যায়। সে বিষ্ফোরণে তার ইউনিটের আহত হওয়া অন্যান্য সৈন্যরাও সে সময় ভয়ানক মানসিক সমস্যায় ভুগছিল।

আহত ডমিনিক মৃত্যুর পূর্বে বিষন্নতায় ভুগছিলেন। তার মধ্যে তখন আত্মহত্যা প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল।

গবেষণায় বলা হয়, যুদ্ধক্ষেত্রে যদি ৯ জন সৈনিক মারা যায়, তবে আত্মহত্যায় ১৫ জন মার্কিন সৈন্য মৃত্যুবরণ করে।

গবেষণা মতে, মার্কিন সৈন্যদের উচ্চহারে আত্মহত্যার অনেক কারণ রয়েছে। কিছু সৈন্য সহজাতই যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হয়। বাকি সৈন্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বতন্ত্র কথিত “সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধের” কাঠামোগত কারণেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

তাছাড়াও অতি মাত্রায় মানসিক আঘাত, পেশাগত কাজের চাপ, সামরিক সংষ্কৃতি ও প্রশিক্ষণ, অনবরত আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার, নাগরিক জীবনে পুনরায় মানিয়ে নেয়ার সমস্যাকেও মার্কিন সৈন্যদের আত্মহত্যার অন্যতম কারণ হিসেবে গন্য করা হয়।

3 মন্তব্যসমূহ

Leave a Reply to Taslima Akhter প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধগাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে ২০টি কারখানা ধ্বংস, চাকুরি হারিয়ে বেকার ৫০০০ ফিলিস্তিনি
পরবর্তী নিবন্ধকাশ্মিরে গো-রক্ষকদের পিটুনিতে মুসলিম যুবক নিহত