ইসলামের আলোকে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে তালিবানের নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ।

3
1839

সম্প্রতি তালিবান তাঁদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে নারী অধিকারের ব্যপারে নতুন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। উক্ত আইনে তাঁরা বিশেষ করে বিধবাদের বিষয়টি খুব স্পষ্ট করে শরীয়াহ্ এর ভিত্তিতে তুলে ধরেছে। পাশাপাশি নারীদের অধিকার আদায়ে যথেষ্ট সচেতন তালিবান এই আদেশ বাস্তবায়নের জন্যে সংশ্লিষ্ট কিছু সংগঠনকেও সহযোগিতা করতে নির্দেশ দিয়েছে। নারীদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্যে তালিবান নিম্নোক্ত পদক্ষেপ সমূহ নিয়েছে-

১. নিকাহ / বিবাহের সময় প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার সম্মতি প্রয়োজন (যদি উভয়ই রাষ্ট্রদ্রোহীতা থেকে মুক্ত থাকে)।
কেউই জোর করে বা চাপাচাপি করে মহিলাদের বিয়ে দিতে বাধ্য করতে পারবে না।
২. একজন মহিলা কোনও সম্পত্তি নয়, বরং তিনি মহৎ এবং মুক্ত। কেউ তাঁকে শান্তি চুক্তি এবং সমস্যার নিরসনের জন্য বিনিময় হিসেবে ব্যবহার করতে পারে না।
৩. স্বামীর মৃত্যুর পর ‘শরয়ী ইদ্দত’ (চার মাস দশ রাত বা গর্ভকালীন সময়) অতিবাহিত হওয়ার পর, তাঁর আত্মীয়সহ কেউই জোর করে সেই বিধবা নারীকে বিয়ে করতে পারবে না। একজন বিধবার বিয়ে করার এবং নিজেই তাঁর ভবিষ্যত নির্ধারণ/নির্বাচন করার অধিকার রয়েছে। (যদিও সমতা এবং রাষ্ট্রদ্রোহীতা প্রতিরোধের নীতি এই ক্ষেত্রে বিবেচিত হবে)।
৪. একজন বিধবার তার নতুন স্বামীর কাছ থেকে ‘মোহার’ আদায় করার শরঈ অধিকার আছে।
৫. একজন বিধবার তার স্বামী, সন্তান, বাবা এবং অন্যান্য আত্মীয়দের সম্পত্তিতে অধিকার এবং নির্দিষ্ট অংশ রয়েছে। একজন বিধবাকে কেউ তার অধিকার আদায় থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না।
৬. যাদের একাধিক স্ত্রী রয়েছে তাদের শরিয়া আইন অনুযায়ী প্রত্যেক স্ত্রীকে সমান অধিকার দিতে হবে এবং তাদের মধ্যে অবশ্যই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

এই পদক্ষেপ সমূহ বাস্তবায়নের জন্যে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নিম্নোক্ত কাজগুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে-

ক. হজ্জ ও ধর্মীয় বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যে, আলেমদেরকে নারীর অধিকার সম্পর্কিত বিষয়ে ব্যক্তিদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য চিঠি কিংবা দাওয়াতের মাধ্যমে উৎসাহিত করতে হবে যেন তারা জানতে পারে যে নারীদের উপর অত্যাচার করা এবং তাদের অধিকার আদায় না করা হলে আল্লাহর অসন্তুষ্টি এবং তার শাস্তি ও বিপদের কারণ হতে পারে।

খ. তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে লিখিত ও অডিওর মাধ্যমে নারী অধিকার সম্পর্কিত নিবন্ধ প্রকাশের পাশাপাশি লেখক ও এক্টিভিস্টকে নারী অধিকারের উপর দরকারী নিবন্ধ প্রকাশ করতে উৎসাহিত করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, যাতে উলামা এবং নারীদের শরিয়া অধিকার সম্পর্কে জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায় এবং চলমান নিপীড়ন রোধ করা যায়।

গ. সুপ্রিম কোর্টকে অবশ্যই সকল আদালতে নির্দেশ জারি করতে হবে যে তারা যেন নারীদের অধিকার, বিশেষ করে বিধবাদের আবেদন বিবেচনা করে। তাদের অধিকার এবং নিপীড়ন সম্পর্কে যথাযথ ও নীতিগত ভাবে বিবেচনা করে, যাতে নারীরা নিপীড়ন থেকে মুক্তি পায় এবং শরঈ অধিকার আদায়ের জন্যে তাদের হতাশ না হতে হয়।

ঘ. গভর্নর এবং জেলা গভর্নরদের অবশ্যই এই আদেশ বাস্তবায়নে মন্ত্রীদের এবং সুপ্রিম কোর্টকে ব্যাপক সহযোগিতা করতে হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, তালিবান দেশটির ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের পর দেশটির বিভিন্ন সমস্যা নিরসনের জন্যে যেভাবে একনিষ্ঠ ভাবে কাজ করে যাচ্ছে তা নিঃসন্দেহে বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্যে হতে পারে একটি আদর্শ।

তথ্যসূত্রঃ

1.Al Emarah English (তালিবানের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট)

https://tinyurl.com/2p9xn9j7

3 মন্তব্যসমূহ

Leave a Reply to মোবারক করিম প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধভারতীয় মুসলিমদের উপর হিন্দুত্ববাদীদের অত্যাচার তীব্র আকার ধারণ করেছে!
পরবর্তী নিবন্ধআল-ফিরদাউস সংবাদ সমগ্র || নভেম্বর, ২০২১ঈসায়ী