ভারতকে দেবভূমি আখ্যা দিয়ে ইসলামিক স্থাপনা ভেঙ্গে দিচ্ছে হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা

উসামা মাহমুদ

3
1421
ভারতকে দেবভূমি আখ্যা দিয়ে ইসলামিক স্থাপনা ভেঙ্গে দিচ্ছে হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা

মুসলিম শাসনের ৬০০ বছরে মুসলিমরা ভারতীয় উপমহাদেশকে একটি সভ্য, সমৃদ্ধ ও উন্নত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। ভারতজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে মুসলিমদের গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাস ঐতিহ্য ও তার সাথে রয়েছে বিভিন্ন ইসলামিক স্থাপনা। আর এখন সেই ইতিহাসকে বিকৃত করতে, সেগুলো ভেঙ্গে ফেলার বৈধতা দিতে, ইসলামিক স্থাপনাগুলো “ল্যান্ড জিহাদ” তথা ভূমি জিহাদ আখ্যা দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা। তারা একে একে ধ্বংস করে দিচ্ছে মুসলিমদের স্থাপনা ও নিদর্শনগুলো।

হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ‘হিন্দু জাগরণ মঞ্চ’ হিমাচল প্রদেশে মুসলিমদের আরেকটি স্থাপনা ধ্বংস করেছে, যার ভিডিও ঐ সংগঠনের সন্ত্রাসীরা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ব্যাপকভাবে শেয়ার করেছে। এটি ১৫ দিনের ব্যবধানে ঘটে যাওয়া দ্বিতীয় ঘটনা, যেখানে দলটির গুন্ডারা “ল্যান্ড জিহাদের” হাস্যকর অজুহাত তুলে ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো ধ্বংস করেছে।

ভিডিওটি মূলত কমল গৌতমের এক সন্ত্রাসীর, যে ঐ সন্ত্রাসী সংগঠনের একজন ‘কর্মী’। ঐ গৌতম তার ফেসবুক পোস্টে ভিডিও শেয়ার করেছিল।
সন্ত্রাসী গৌতম তার পেইজটি মুসলমানদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সন্ত্রাসী কার্যকলাপ প্রচার করার কাজে ব্যবহার করে থাকে।

ভিডিওটির ক্যাপশনে গৌতম মুসলিমদের হুমকি দিয়েছে যে, “দেবভূমিতে ভূমি জিহাদ সহ্য করা হবে না। প্রতিটি স্থাপনার একই ফল হবে। হিমাচলের হিন্দু নায়করা ইসলামিক জিহাদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান চালিয়ে যাবে…দেবভূমির প্রতিটি কোণ মুক্ত করব। দেবভূমি থেকে ভূমি জিহাদ মুছে ফেলবো। ভারতকে আওরঙ্গজেবের সন্তানদের থেকে মুক্ত করুন। অন্যথায়, আপনি দেবভূমির যেখানেই যান শিবাজিকে আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখবেন।”

ভিডিও লিংক – https://tinyurl.com/2p8pbu98

এর আগে, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের আরেক সদস্য হরিশ রামকালী, অন্যান্য কর্মীদের সাথে নিয়ে আরেকটি মুসলিম স্থপনা ভেঙ্গে দিয়েছিল। যার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছিল।

ভারতকে হিন্দুত্ববাদীরা দেবভূমি দাবি করছে, যার কুফল ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। হিন্দুরা মুসলিমদের মসজিদগুলোকে বিভিন্ন চক্রান্ত করে ভেঙ্গে মন্দির বানাচ্ছে। আর তাদের দেবতা যেহেতু কাল্পনিক, সে হিসেবে যেকোন স্থানকেই দেবের জন্মভূমি,সমাধি ইত্যাদি দাবি করে। আর এসব ঠুনকো অজুহাত তুলেই তারা মুসলিমদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে যেকোন মসজিদ, মাদ্রাসা, ইসলামিক স্থাপনাকেই ভেঙ্গে দেওয়ার চক্রান্ত করে যাচ্ছে।

তাই নিজেদের ইতিহাস ঐতিহ্য ও ধর্মীয় স্থাপনা তথা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য তন্ত্র-মন্ত্রের ধোঁকায় না পড়ে মুসলিমদেরকে নববী মানহাজের অনুসরণ করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের উপদেশ দিয়ে থাকেন সচেতন উলামায়ে কেরাম।

তথ্যসূত্র:
—–
১। Hindutva goons vandalise another shrine in Himachal Pradesh
https://tinyurl.com/5f2crmsf

3 মন্তব্যসমূহ

  1. فَإِذَا ٱنسَلَخَ ٱلۡأَشۡهُرُ ٱلۡحُرُمُ فَٱقۡتُلُواْ ٱلۡمُشۡرِكِينَ حَيۡثُ وَجَدتُّمُوهُمۡ وَخُذُوهُمۡ وَٱحۡصُرُوهُمۡ وَٱقۡعُدُواْ لَهُمۡ كُلَّ مَرۡصَدٖۚ فَإِن تَابُواْ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَءَاتَوُاْ ٱلزَّكَوٰةَ فَخَلُّواْ سَبِيلَهُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٞ رَّحِيمٞ

    অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদেরকে যেখানে পাবে হত্যা কর, তাদেরকে পাকড়াও কর, অবরোধ কর এবং প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের জন্য ওঁৎ পেতে থাক; কিন্তু যদি তারা তাওবাহ্ করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয় তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও ; নিশ্চয় আল্লাহ্‌ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু ।

    -Surah At-Tawbah, Ayah 5

    উম্মাহর সালাফ-খালাফ এই আয়াতকে ايات السيف বলেছেন
    : তাফসীরে মারেফুল কুরআন ইদ্রিস কান্ধলবী রহ.

    সুতরাং আমাদেরও উচিত পীরগিরি আর সুফিবাদের আলাপ বাদ দিয়ে …. নিচের আয়াতের গুলোর আমল করা √

    وَقَٰتِلُواْ ٱلۡمُشۡرِكِينَ كَآفَّةٗ كَمَا يُقَٰتِلُونَكُمۡ كَآفَّةٗۚ وَٱعۡلَمُوٓاْ أَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلۡمُتَّقِينَ
    তোমরা মুশরিকদের সাথে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ কর, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ করে থাকে। আর জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ মুত্তাকীদের সাথে আছেন।

    -Surah At-Tawbah, Ayah 36

    وَقَٰتِلُواْ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِ ٱلَّذِينَ يُقَٰتِلُونَكُمۡ وَلَا تَعۡتَدُوٓاْۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلۡمُعۡتَدِينَ

    আর যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তোমরাও আল্লাহ্‌র পথে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর ; কিন্তু সীমালংঘন করো না । নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সীমালংঘনকারীদেরকে ভালবাসেন না।

    -Surah Al-Baqarah, Ayah 190

    وَقَٰتِلُوهُمۡ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتۡنَةٞ وَيَكُونَ ٱلدِّينُ لِلَّهِۖ فَإِنِ ٱنتَهَوۡاْ فَلَا عُدۡوَٰنَ إِلَّا عَلَى ٱلظَّٰلِمِينَ

    আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যতক্ষণ না ফেত্‌না চুড়ান্ত ভাবে দূরীভূত না হয় এবং দীন একমাত্র আল্লাহ্‌র জন্য হয়ে যায়। অতঃপর যদি তারা বিরত হয় তবে যালিমরা ছাড়া আর কারও উপর আক্রমণ নেই।

    -Surah Al-Baqarah, Ayah 193

    ..অতএব মুমিনদের জেনে রাখা উচিৎ নববী মানহাজ ব্যাতিত তোমাদের মুক্তির কোনো পথ নেই….

Leave a Reply to খোবায়েব জাম্বুলি প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধতুর্কি সামরিক ঘাঁটিতে আল-কায়েদার শহিদী হামলা, হতাহত ৪৩ এরও বেশি গাদ্দার সৈন্য
পরবর্তী নিবন্ধফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদে ব্যাপক আগ্রাসী অভিযানে নেমেছে দখলদার ইসরাইল