|| ব্রেকিং নিউজ || ঝড়ের গতিতে রাজধানীতে ঢুকে পড়েছে আশ-শাবাব, ৪টি জেলা ও ঘাঁটি সহ বিশাল বিজয় অর্জন

ত্বহা আলী আদনান

5
2423
|| ব্রেকিং নিউজ || ঝরের গতিতে রাজধানীতে ঢুকে পড়েছে আশ-শাবাব, ৪টি জেলা ও ঘাঁটি সহ বিশাল বিজয় অর্জন

আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশুতে একটি বড় সামরিক অভিযান শুরু করেছেন। এতে এখন পর্যন্ত প্রতিরোধ যোদ্ধারা রাজধানী মোগাদিশুর ৪টি জেলা ও অর্ধডজন সামরিক ঘাঁটিসহ আশপাশের অনেক এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, গতকাল ১৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে আশ-শাবাব যোদ্ধারা রাজধানী মোগাদিশুতে একটি বড় সামরিক অভিযান শুরু করেছেন। যা একযোগে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থানে শহিদী হামলার মাধ্যমে শুরু হয়েছে।

গতকাল মধ্যরাতের পর থেকে হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদিন এই আক্রমণ শুরু করে। হামলাগুলো প্রথমে রাজধানী মোগাদিশুতে সরকারি মিলিশিয়াদের ৩টি সামরিক ঘাঁটিতে ব্যাপক আক্রমণের মাধ্যমে শুরু হয়।

প্রথম আক্রমণটি একটি শাহাদাত অভিযানের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল, এরপরে রাজধানীর হাড্ডা জেলায় মিলিশিয়া ঘাঁটিতে ঝড় তুলেন মুজাহিদগণ। কয়েক ঘন্টার লড়াইয়ের পর মুজাহিদগণ শত্রু বাহিনীকে তাড়িয়ে জেলা ও ঘাঁটিটির নিয়ন্ত্রণ নেন।

প্রথম আক্রমণের মতোই, দ্বিতীয় আক্রমণটিও একটি শাহদী অভিযানের মাধ্যমে শুরু হয়। তারপরে রাজধানীর ইয়াকশাদ জেলা ও এর পাশের দার আস-সালাম এলাকায় মিলিশিয়া ঘাঁটিগুলোতে আক্রমণ শুরু করেন মুজাহিদগণ। এখানেও মুজাহিদগণ কয়েক ঘন্টার তীব্র লড়াইয়ের পর জেলা, সামরিক ঘাঁটিগুলো এবং আশেপাশের এলাকা নিয়ন্ত্রণ নেন।

তারপর মুজাহিদগণ হাড্ডা জেলার উপকণ্ঠে মিলিশিয়াদের “আইল জানলি” সামরিক ঘাঁটিতে তৃতীয় শহিদী আক্রমণটি চালান। এই ঘাঁটিটি জেলার প্রধান প্রতিরক্ষা হিসাবে বিবেচিত হয়। এটিও কয়েক ঘন্টার লড়াইয়ে পর সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে নেন মুজাহিদগণ।

বরকতময় এই অভিযানের মাধ্যমে হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিন শুধু ৩টি জেলা বিজয় করেই ক্ষান্ত থাকেননি। বরং তাঁরা রাজধানীর হিডেন ও দাইনিলি এবং আইলশা জেলাগুলোর উপকণ্ঠে সোমালি গাদ্দার মিলিশিয়াদের কয়েকটি ব্যারাক ও সামরিক ঘাঁটিতে বজ্রপাত হয়ে আঘাত হানেন। এবং কয়েকটি ঘাঁটি ও বিস্তীর্ণ এলাকারও নিয়ন্ত্রণ নেন উম্মাহর এই বীর সন্তানেরা।

হারাকাতুশ শাবাব আল-মুজাহিদিনের এই আক্রমণগুলি গাদ্দার মিলিশিয়াদের প্রচুর পরিমাণে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি সাধিত করে। সেই সাথে হারাকাতুশ শাবাব যোদ্ধারা অগণিত সামরিক যান, অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম গনিমত পেতে সক্ষম হন।

স্থানীয়রা জানান, হারাকাতুশ শাবাব যোদ্ধারা ভারি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শহরগুলোতে প্রবেশ করতে থাকেন। এবং রাতভর প্রতিরোধ যোদ্ধারা এসকল আক্রমণ চালাতে থাকে। এসময় পুরো রাজধানী হারাকাতুশ শাবাবের অস্ত্রের ঝংকারে কেঁপে ওঠে, রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকাতেই আল্লাহ্‌র সিংহদের গুলাগুলি ও প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। আর হারাকাতুশ শাবাবের এই অভিযানগুলো রাত থেকে শুরু করে পরের দিন ভোর পর্যন্ত সময় ধরে চলতে থাকে। তাঁদের হামলার দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছিল পুরো রাজধানীই যেন প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সামনে অসহায় হয়ে পড়েছে। রাজধানীর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের শহরগুলোতে যখন হারাকাতুশ শাবাব যোদ্ধারা বীরের মতো হামলা চালাচ্ছিল, তাদের সেসকল হামলার সামনে পশ্চিমাদের প্রশিক্ষিত গাদ্দার সরকারি বাহিনী কোন প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, রাজধানী মোগাদিশুতে আশ-শাবাবের জিন্দাদিল মুজাহিদদের সামরিক অভিযানের মুখে পশ্চিমা-সমর্থিত সোমালি সরকার এবং এর মিলিশিয়াদের প্রতিক্রিয়া খুবই খারাপ ছিল। হারাকাতুশ শাবাব যখন শহরগুলোতে একযোগে আক্রমণ চালাচ্ছিল, তখন শহরগুলোর ভিতরে আটকা পড়া মিলিশিয়াদের সাহায্য পাঠাতেও অক্ষম ছিল সোমালি সরকার। অপরদিকে আশ-শাবাবের আকস্মিক এই আক্রমণের সময় আফ্রিকান বাহিনীও কোনো সহায়তা পাঠাতে পারেনি।

শহরগুলোতে সাহায্য না পাঠাতে পারার কারণ হিসাবে এক সোমালি সরকারি কর্মকর্তা জানায়, প্রথমত হারাকাতুশ শাবাব আকস্মিক এই অভিযানটি শুরু করেছে, দ্বিতীয়ত তাঁরা অভিযানের আগেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো এবং মোগাদিশুর বড় অংশ ঘিরে কারফিউ জারি করেছিল। ফলে বাহির থেকে সাহায্য পাঠানো সম্ভব ছিল না।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, হারাকাতুশ শাবাব যোদ্ধাদের বীরত্বপূর্ণ এই অভিযান এটাই প্রমাণ করে যে, দখলদার পশ্চিমা-সমর্থিত সরকার এবং ক্রুসেডার আফ্রিকান বাহিনী রাজধানীর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলও নিরাপদ রাখতে অক্ষম। তাদের এই অক্ষমতা আমাদের সামনে এটা আরও স্পষ্ট ও নিশ্চিত করে তুলছে যে, হারাকাতুশ শাবাব বর্তমানে যখন ইচ্ছা তখনই পুরো রাজধানী মোগাদিশু সম্পূর্ণরূপে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম।

উল্লেখ্য যে, হারাকাতুশ শাবাব দীর্ঘদিন ধরে সোমালিয়ার বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। তাদের লক্ষ্য সোমালিয়া থেকে দখলদার ও তাদের দোসরদের হটিয়ে একটি ইসলামি ইমারাহ প্রতিষ্ঠা করা।

5 মন্তব্যসমূহ

Leave a Reply to রাশেদ আহমদ প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধআফগানদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাখা হলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আমরা নীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য হব : তালিবান
পরবর্তী নিবন্ধকর্ণাটকে হিজাব ইস্যুতে প্রতিশোধ নিতে মসজিদে হিন্দুত্ববাদীদের হামলা