ভারতে হিন্দুত্ববাদীরা মুসলিম নারীদের জোর করে হিজাব খুলতে বাধ্য করছে। এনিয়ে বিভিন্ন স্থানে মুসলিমরা আন্দোলনে নেমেছেন। প্রতিবাদ মিছিলেও হিন্দুত্ববাদী পুলিশ প্রশাসন ও গেরুয়া সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। এতেও তাদের মুসলিম বিদ্বেষ প্রশমিত হয়নি।
তারা এবার হিজাব ইস্যুতে মুসলিমদের উপর প্রতিশোধ নিতে মসজিদ ও কবরস্থানের গেট ও মিনারে হামলা চালিয়েছে।
গত ০৯ ফেব্রুয়ারি রাত ১২:৩০ টার দিকে একদল উগ্র হিন্দু সন্ত্রাসীরা কর্ণাটকের মহীশূর জেলায় জামিয়া মসজিদে হামলা চালায়। হামলার পরের একটি ভিডিওতে মসজিদের জানালার কাঁচ ভাঙা এবং আশেপাশে বিক্ষিপ্ত পাথর পরে থাকতে দেখা যায়।
মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ মুজ্জামিল আতহার বলেছেন “আমি মসজিদে আমার ঘরে ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ বিকট আওয়াজে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। আস্তে আস্তে ভাঙ্গচুরের শব্দ বাড়তে থাকায় আমি উঠি। একটা দরজা দিয়ে বাইরে তাকালাম। আমাকে দেখে হামলাকারী লোকগুলো পালিয়ে যায়। অন্ধকার হওয়ায় আমি তাদের মুখ দেখতে পারিনি। সকালে দেখি মসজিদের জানালাসহ বেশ কিছু অংশ ভাঙ্গা। এমনকি তারা কবরস্তানের মিনারাও ভেঙ্গে চূড়মার করে দিয়েছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান বলেছেন “তারা রাতে মসজিদে হামলা চালায়। তারা পাথর ছুড়ে মসজিদের জানালা ভেঙে দেয়। আরো বেশকিছু ক্ষয়ক্ষতি করে। একই সন্ত্রাসীরা আবার মসজিদ সংলগ্ন কবরিস্তান [কবরস্থান] এর গেট ভাঙার চেষ্টা করে।”
ইমরান আরো বলেছে, “গ্রামে মুসলমানদের সংখ্যা খুবই কম। আমরা সারা রাত ভয়ে ছিলাম।”
স্থানীয় বাসিন্দা আকমল আহমেদ বলেছেন, “পুলিশ স্টেশনে, আমরা পুলিশের কাছে সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। কিন্তু তবুও আমরা মুসলিম হওয়ায় পুলিশ আমাদের কথায় এফআইআর দায়ের করেনি।”
“আমরা পরে এফআইআরের আশা বাদ দিয়েছি। কারণ আমরা আশঙ্কা করেছিলাম যে, দালাল পুলিশ এবং হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীদের দ্বারা হয়রানির সম্মুখীন হতে পারি।”
তিনি আরো বলেছেন, “আমরা আশঙ্কা করছি যে, কর্ণাটকে হিজাব বিতর্কের কারণে মসজিদে হামলা হয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারী মান্ডিয়াতে হিন্দু শিক্ষার্থী এবং হিজাব সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয় এবং একই রাতে আমাদের মসজিদেও হামলা হয়। এটা কোন কাকতালীয় ঘটনা নয়। হিন্দুত্ববাদীরা প্রতিশোধ নিতেই পরিকল্পিতভাবে এমনটা করেছে।”
বিশ্লেষকদের অনেকে এখন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, হিজাব বিতর্ক নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতির মতোই আরও কিছু অজুহাত দাড় করিয়ে হিন্দুত্ববাদী উগ্র জনতা অচিরেই হয়তো গোটা ভারতজুড়ে ব্যাপক মুসলিম হত্যাযজ্ঞ শুরু করে দিতে পারে।
মুসলিমদেরকে তাই সজাগ থাকার ও দ্রুতই প্রতিরোধ গড়ে তোলার মানসিক প্রস্তুতি নিতে পরামর্শ দিয়েছেন হক্কানি উলামাগণ।
তথ্যসূত্র:
১। Karnataka: Stones pelted at mosque, locals allege “revenge over hijab issue”
https://tinyurl.com/4938h3y8