লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় মুসলিম কলেজছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভারতে পাচার করেছে তিলক চন্দ্র শুভ নামে এক হিন্দু। এমনকি তাকে জোরপূর্বক হিন্দুধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। পারিবারিক সূত্র জানায়, ভারতে নিয়ে যেতে তিলককে সহযোগিতা করেছে হাতীবান্ধা থানার উপ-পরিদর্শক সুকুমার রায়।
গত ১০ আগস্ট বুধবার দেশে ফেরার আকুতি সম্বলিত মেয়েটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। এর পরপরই বাড়ি থেকে সটকে পড়ে তিলকের পরিবারের লোকজন। তারাও হয়তো ভারতে পালিয়ে গিয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
ভিডিওতে নিজের পরিচয় দিয়ে মেয়েটি বলেন, “আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুসলিম পরিচয়ে বিয়ে করে তিলক। পরে ভারতে পাচার করে। এমনকি আমাকে শাঁখা-সিঁদুর পরতেও বাধ্য করে সে।” তাকে ভারতের শিলিগুড়ি এলাকার ঘোড়ার মোড়ে একটি বাসায় আটকে রাখা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওই তরুণী। তার ওপর পাশবিক নির্যাতন করা হয় জানিয়ে তাকে উদ্ধারের অনুরোধ করেছেন তিনি।
মেয়েটির পরিবার জানায়, তিলক নিজের ধর্মীয় পরিচয় ও প্রকৃত নাম গোপন করে মেয়েটির সাথে সম্পর্কে জড়ায়। এরই মধ্যে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে কলেজ যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয় ঐ তরুণী।
এদিকে ঐ তরুণীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মেয়ের পড়ার টেবিলের পাশে বসে তার ছবি বুকে নিয়ে কাঁদছিলেন মা খতিজন নেছা (৭০)। আর আর্তনাদ করে বলছিলেন, “সাত মাস থেকে মেয়েকে দেখি না। আমার মেয়েকে প্রতারণা করে ভারতে পাচার করেছে। আমি আর কিছু চাই না, শুধু আমার মেয়েকে ফেরত চাই। তোমরা আমার মেয়েকে এনে দাও।” এ কথা বলেই ডুকরে কেঁদে ওঠেন তিনি।
বড় ভাই কামরজ্জামান নুলু বলেন, আমার বোনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করা হয়। কিন্তু এসআই সুকুমার আমার বোনকে উদ্ধার না করে উল্টো ওকে পাচারে সহযোগিতা করেছে। আমি তাদের কঠিন বিচার চাই।
তারা অভিযোগ করেন, ওই তরুণীকে খুঁজে আনতে হাতীবান্ধা থানার এসআই সুকুমার রায় ৩০ হাজার টাকা নিয়েছিল। কিন্তু সে তাকে তো খুঁজে আনেইনি, উল্টো ওদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে মেয়েটিকে পাচারে সহযোগিতা করেছে। এরপর মামলার চার্জশিট থেকেও কয়েকজনের নাম বাতিল করে দেয় ঐ হিন্দু এসআই।
তবে অবাক করা বিষয় হল, এতো বড় একটি ঘটনা নিয়ে হলুদ মিডিয়া কোন নিউজ করেনি; কথিত নারীবাদী আর প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীরাও চুপ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কোন হিন্দু মেয়ে পাচারের সাথে যদি কোন মুসলিম যুক্ত থাকতো, তাহলে তারা কি চুপ থাকতো? দলাল মিডিয়া আর ঐ কথিত সুশীলরা তখন তাদের ভারতীয় প্রভুদের খুশি করতে ঘটনাকে আরও সাজিয়ে মায়াকান্না করে প্রচার করতো। আরো প্রচার করতো, দেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের বানোয়াট ইতিহাস।
৯০ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে আজ এক গো-মূত্রপায়ী হিন্দু একজন সম্মানিতা মুসলিম নারীকে পাচার করার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে; তাকে জোর করে শাঁখা-সিঁদুর পরাচ্ছে এবং জোরপূর্বক হিন্দুধর্মে দীক্ষিত করছে। আর সেই মুসলিম নারী তাকে উদ্ধার করার আকুতি জানাচ্ছে। মেয়েটির পরিবার শুধু মুসলিম হবার কারণে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও পায়নি। উল্টো হিন্দুত্ববাদী পুলিশ কর্মকর্তা মেয়েটিকে পাচারে সহযোগিতা করেছে। এতকিছুর পরেও এইসব হিন্দুত্ববাদীদের কোন শাস্তি হয়না এদেশে।
তবে কী এখন আমরা প্রশ্ন করতে পারি – এদেশে আসলে কারা সংখ্যালঘু? হিন্দুরা নাকি মুসলিমরা? সাধারণ মুসলিমদের এখন জানা উচিৎ কারা তাদের বন্ধু, আর কারা শত্রু; অনাগত দিনের বিপদে কারা তাদের পাশে থাকবে, আর গদি টিকিয়ে রাখতে কারা তাদেরকে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের নাঙা তলোয়ারের সামনে উন্মুক্ত ছেড়ে দিবে।
সত্য আজ সবার সামনে স্পষ্ট। তাই সেটা মেনে নেওয়া ও প্রস্তুতি নেওয়া এখন আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করছেন ইসলামি চিন্তাবিদগণ।
তথ্যসূত্র:
——–
১। ওপারে মেয়ের আকুতি, এপারে মায়ের আহাজারি
– https://tinyurl.com/yckaxeys
Oh Allah save them